দাদা কে বেবিফুড কেনার লাইনে দাঁড়াতে দেখে,
আর মেধাবী বন্ধু কে বাচ্চা কোলে ছাদে ঘুরতে দেখে —
নিজেকে ব্যতিক্রমী মনে করা ছেলেটা
বেদম হাসতে হাসতে হোঁচট খেয়েছিল জোরদার ।
মহাকাল, মদনদেব আর মায়ের ত্রিমুখী ষড়যন্ত্রে
তার বাবাজন্ম হল একদিন ।
সম্ভবত অফিসের কাজ কিছু কমে থাকবে,
কিম্বা বন্ধুবান্ধবদের ব্যস্ততাও বেড়ে যেতে পারে —
রাত দশটায় বাড়িমুখো হওয়া ছেলে
সাড়ে সাতটায় বাড়ি ফিরে —
ল্যাপটপ ফেলে পুতুল খেলে।
বাবা বড় হচ্ছে ।
ভোরের ওম জড়ানো বিছানার আদর
অনায়াসে ছাড়ে–
কোনোকালে ভোর না দেখা আয়েশী ছেলেটা ।
আরো কত ভালোলাগা —
লাইট জ্বালিয়ে মধ্যরাত অবধি বই পড়া,
সিগারেটের রিং তৈরির আবেশে ডুবে যাওয়া,
নায়কোচিত ফ্যাশন দুরস্ত কেতা,
আর দুনিয়া জয় করার বেপরোয়া স্বপ্ন উড়ান
সব……..সব ছাড়ে
দায়িত্ববান বাবা।
শিক্ষকের উপদেশ, প্রশাসকের শাসন,বন্ধুর প্রীতি
সব, সময়মতো উপহার দেয় অতীতের ঝুলি হাতড়ে ।
জীবন যুদ্ধে লড়তে লড়তে রক্তপাত গোপন করা
একলা পথিক,
মুখে হাসি মেখে —
খুঁজে এনে দেয় একশো আটটা নীল স্নেহ কমল ।
বাবা পরিণত বটগাছ ।
পৃথিবী কবে যেন গুটিয়ে এসেছে
সন্তানের মুখপদ্মে।
মহাকাল শুধু মনে করে আঁচড় কেটেছে চামড়ায়।
যা কিছু দামী — পোশাক কিম্বা খাবার কিম্বা তার চেয়ে বেশি কিছু
সব…তুলে দেন যত্ন করে
ভবিষ্যতের স্বপ্নপুরণের সাধনায় ।
এভাবেই আলোক বর্তিকা আগামীর হাতে সঁপে,
পৃথিবীর রিলে রেস শেষ করে —
নক্ষত্র হয়ে আশীষ ছড়ায় বাবা।