প্রবন্ধে অনুভা নাথ

বায়োটেরোরিজম্
“বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচাগ্র মেদিনী”
মহাভারতে কৌরবরা ষড়যন্ত্র করে যুধিষ্ঠিরকে পাশা খেলায় হারিয়ে পান্ডবদের বারো বছর বনবাস ও একবছর অজ্ঞাতবাসে পাঠায়, এবং এই তেরো বছরের জন্য পান্ডবদের রাজ্যের শাসন নিজেদের হাতে তুলে নেয়।তেরো বছর পর পান্ডবরা ফিরে এলে,কৌরবরা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে এবং পান্ডবদের রাজ্য ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করে,সূত্রপাত হয় কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের।
এসবই আমাদের জানা।
প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে মানুষ বা একটি দল পেশীশক্তির জোরে অন্য একটি দলের ওপর দখল নিয়েছে। তাই যুদ্ধ বললেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে তীর,ধনু,কামান,বন্দুক,মিসাইল,
ট্যাঙ্কার,যুদ্ধবিমান সমেত তাবড় অস্ত্র শস্ত্রের ছবি। কিন্তু এরকম ছাড়াও অন্যরকম এক যুদ্ধের কথা,সন্ত্রাসের কথা আমরা আজ জানবো,যেখানে একটাও বুলেট খরচ না করে লক্ষ লক্ষ মানুষকে মেরে ফেলা যায় বা শারীরিক ও মানুষিক দিক থেকে পঙ্গু করা যায়।
বায়োটেরোরিজম্,এই শব্দটি এইমুহূর্তে গুগলের সার্চ ইঞ্জিন থেকে শুরু করে পৃথিবীর প্রত্যকটি মানুষের মনের অন্দরে ভীতির সঞ্চার করেছে। আজকে এই বহুল-চর্চিত বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করবো।
বায়োটেরোরিজম্ কি
যে কোনও বায়োলজিক্যাল এজেন্টের ইচ্ছাকৃত বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিস্তার,যার কারণে মানুষ,পশু বা উদ্ভিদের অসুস্থতা, মৃত্যু বা পঙ্গুত্ব ঘটতে পারে। ব্যাকটিরিয়া,ভাইরাস, পোকামাকড়, ফাংগি,বিষ এই বায়োলজিক্যাল এজেন্টের অন্তর্ভুক্ত। এই বায়োলজিক্যাল এজেন্ট প্রকৃতির থেকে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তৈরী হতে পারে বা এটিকে মানুষ যান্ত্রিক পদ্ধতিতে আরও বেশী ক্ষতিকর বানিয়ে তুলতে পারে,যাতে করে এজেন্টটি জল,খাবার বা বাতাসের মাধ্যমে বেশী করে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং ল্যাবরেটরিতে এটিকে এমনভাবে মিউটেশন করা যেতে পারে,যাতে বর্তমানে প্রচলিত সবরকম ওষুধ কোনও ভাবেই এই এজেন্টকে রুখতে পারবে না,এককথায়,এটির মারণক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা।
বায়োটেরোরিজম্ মানব সভ্যতার ইতিহাসে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রেক্ষিতে ব্যবহৃত হয়েছে। এটি খুব স্বল্প পরিমাণে ব্যবহার করে অনেক কম সময়ের মধ্যে প্রচুর মানুষ বা প্রাণীর ক্ষতি করা যায়, সহজেই গোপন করা যায়,এর বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড় করা বেশ কষ্টসাধ্য বিষয়,এটি গন্ধহীন,শব্দহীন,রংহীন এক অদৃশ্য আততায়ী।
প্রসঙ্গগত উল্লেখযোগ্য,হিরোশিমা নাগাসাকিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ফ্যাট ম্যান ও লিটিল বয়
নামে যে দুটি পরমাণু বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিলো, তাদের ‘ফিলিং ওয়েট’ ছিলো যথাক্রমে ৬.৪ কেজি ও ৬৪ কেজি। এবং এই বিস্ফোরণের কারণে সেইসময় জাপানে ১,২৯,০০০ থেকে ২,২৬,০০০ জন মানুষ মারা যান।
এই মুহূর্তে দুনিয়া কাঁপানো করোনা ভাইরাসের ওজন মাত্র ০.৮৫ অ্যাটোগ্রাম,এবং এই ভাইরাসে আক্রান্তহয়ে মৃতের সংখ্যা সারা পৃথিবীতে দু লাখ পঁয়ত্রিশ হাজার ইতিমধ্যেই ছাড়িয়ে গেছে ও সংখ্যাটি ক্রমবর্ধমান ।
বায়োটেরোরিজমের ইতিহাস
পার্শী,গ্রীক,রোমান সাহিত্যে উল্লেখ আছে ৩০০ খ্রীস্টপূর্বে মানুষ পানীয় জলের উৎস যেমন কুয়ো,পুকুর এগুলোতে মৃত পশুর শরীর ফেলে জল দূষিত করত।
১৯০ খ্রীস্টপূর্বে ইউরিমেডনের যুদ্ধে হানিবল মাটির কলসীতে রাখা বিষাক্ত সাপ শত্রু শিবির পেরগামনের রাজা দ্বিতীয় ইউমেনেসের জাহাজে গোপনে রেখে দেন।পরবর্তীতে যুদ্ধের সময় ওই কলসীগুলো ফাটিয়ে দেন,বিষাক্ত সাপের কামড়ে জাহাজের সকলের মৃত্যু হয় ও হানিবল যুদ্ধে জয়লাভ করেন।
আঠারোশো শতাব্দীতে ‘ফ্রেঞ্চ অ্যান্ড ইন্ডিয়ান ওয়ার’ এ ব্রিটিশ সেনা স্থানীয় আমেরিকানদের উদ্দ্যেশ্যপ্রণদিত ভাবে স্মলপক্স আক্রান্তের কম্বল উপহার দিয়েছিলো, যাতে এই রোগ ওদের মধ্যে বিস্তার লাভ করে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়,জার্মানি অ্যানথ্রাক্স,গ্লান্ডার,কলেরা রোগগুলিকে বায়োলজিক্যাল অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করেছিলো। এরমধ্যে গ্লান্ডার রোগটি শত্রুপক্ষের ঘোড়ার জন্য বাকী দুটি মানুষ মারার কাজে ব্যবহার করা হতো।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানি সেনা ‘secret biological warfare research facility’ নামে একটি গুপ্ত প্রক্রিয়া চালু করেছিলো, এই প্রক্রিয়াটিতে তিনহাজারেরও বেশী সংখ্যক যুদ্ধবন্দীর শরীরে অ্যানথ্রাক্স,প্লেগের মতো মারণ রোগের জীবাণু ঢুকিয়ে দেওয়া হতো। মৃত্যুর পরে ওই সব দেহের ওপর ময়নাতদন্ত করে রোগের গতিপ্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করা হতো।
১৯৭৯ সালে রাশিয়ার স্ফের্ডলফ্রকে অস্ত্রের গোপন রসায়নাগার থেকে দুর্ঘটনাজনিত কারণে অ্যানথ্রাক্সের মতো মারণ ব্যাকটিরিয়া পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে,অন্তত ষাটজন মানুষ মারা যায়।পরিস্থিতি সামাল দিতে রাশিয়া সরকার এই ঘটনাকে বিষাক্ত মাংস খেয়ে মৃত বলে দাবী করে।শেষপর্যন্ত ১৯৯২ সালে রাশিয়া সরকার,বিপুল চাপের মুখে পড়ে সত্যি ঘটনা স্বীকার করতে বাধ্য হয়।
বায়োটেরোরিজমের ইতিহাসের তালিকাটি কিন্তু আরও অনেক বেশী দীর্ঘ,এছাড়াও এরকম আরও অনেক ঘটনা ইতিহাসের অন্তরালে থেকে গিয়েছে,যার কথা সভ্য মানুষ জানে না।
বর্তমান পৃথিবী ও বায়োটেরোরিজম্
অধুনা সময়ে পৃথিবীর প্রায় সমস্ত দেশে যে সমস্যাটি প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে সেটি হলো কোভিড ১৯। একটি মারণ ভাইরাস,যার উৎপত্তি স্থল এশিয়ার চীন। চীনের সরকারি সূত্র থেকে জানা গেছে,কোভিড ১৯ চীনের মাংসের বাজার উহান থেকে ছড়িয়েছে। চীনে ১৭ই নভেম্বর ২০১৯ এ করোনায় প্রথম আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া যায়।
চীনে ১৭ই নভেম্বর ২০১৯ থেকে ২৭ শে ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৮০ পর্যন্ত পৌঁছে যায়,এরপর একরকম বাধ্য হয়েই চীন করোনা ভাইরাস সম্বন্ধে অন্যান্য দেশকে অবহিত করা শুরু করে। এর আগে পর্যন্ত চীন সরকার এই ভাইরাস সংক্রান্ত সমস্ত রকমের তথ্য গোপন করে। চীনের সরকারী আধিকারিকরা করোনা ভাইরাসের টেস্ট স্যাম্পল নষ্ট করে, ডাক্তার লি বেনলিয়াং প্রথম করোনা ভাইরাসের ব্যাপারে চীন সরকারকে সচেতন করেন ,কিন্তু চীনের আধিকারিকরা ওই ডাক্তারের সতর্কবার্তার কণ্ঠরোধ করেন,পরবর্তীতে ওই ডাক্তারের করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়।
International monetary fund (IMF) জানিয়েছে, কোভিড ১৯ র জন্য ২০৩০ সালের পর পৃথিবীর অর্থব্যবস্থা মহা আর্থিক মন্দার কবলে পড়তে পারে।
১৯৩০ সালের পর সবচেয়ে বড়ো আর্থিক মন্দার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পৃথিবীর ১৭০টি দেশে মাথাপিছু ব্যক্তি আয় মাইনাসে চলে যেতে পারে।আই.এম.এফ এর এর ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ক্রিস্টেলিনা জর্জগ্রিভা জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাস ছড়ানোর পরে আফ্রিকা,এশিয়ার বাজার থেকে পৃথিবীর তাবড় শিল্পপতিরা ইতিমধ্যেই প্রায় সাত লাখ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন। ইতিমধ্যেই করোনা ভাইরাসের কারণে সারা পৃথিবীব্যাপী প্রায় তিনশ লাখ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে এবং অনুমান করা হচ্ছে এর পরিমাণ পরবর্তী সময়ে আরও অনেক বেশী হবে।
এইমুহূর্তে সারা পৃথিবী যখন লকডাউনে রয়েছে,অর্থনীতি স্থবির, করোনার আতঙ্কে থরহরি কম্পমান তখন একমাত্র চীন এমন একটি দেশ যেখানে মানুষের জনজীবন প্রায় স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে, করোনার উৎপত্তিস্থল উহানে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।করেনায় নামমাত্র ক্ষয় ক্ষতির বিনিময়ে চীন এখন বিশ্ব অর্থনীতিতে আগ্রাসী মনোভাবাপন্ন হয়ে উঠেছে। স্পেন, ইটালীর মতো দেশ যেগুলো পৃথিবীর মধ্যে করোনার জন্য সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ, সেখানে চীন আর্থিক ভাবে কমজোর কম্পানীগুলির কর্তৃত্ব দখল করতে আগ্রহী।বেশীরভাগ ইউরোপীয়ান দেশ করোনায় সংকটময় পরিস্থিতিতেও বিদেশী বিনিয়োগ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নতুন আইন তৈরী করতে বাধ্য হচ্ছে। মার্চ ২০২০তে ইটালীর প্রধানমন্ত্রী গোল্ডেন পাওয়ার ব্যবহার করে দেশের শিল্পে বিদেশী বিনিয়োগে রাশ টেনেছেন।ইটালী,স্পেন নিজেদের দেশের শিল্পে ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (এফ.ডি.আই) কমানোর জন্য বিশেষ আর্থিক তহবিলের ঘোষণা করেছে,যেখানে আর্থিকভাবে রুগ্ন কোম্পানি কম সুদে লোন নিতে পারবে।অস্ট্রেলিয়ার ফরেন ইনভেস্টমেন্ট রিভিউ বোর্ড চীন সমেত যে কোনও দেশ আর্থিক মন্দার কারণে অস্ট্রেলিয়ার কোনও গুরুত্বপূর্ণ কম্পানী কেনার বিরুদ্ধে মতামত দিয়েছে। এই মুহূর্তে চীন পৃথিবীর তামাম করোনা আক্রান্ত দেশে পিপিই,স্যানিটাইজার,মাস্ক,গ্লাভস্ সরবরাহ করে বেশ মোটা অংকের রোজকার করেছে।
করোনা মহামারীর অনেক আগেই ভারতের অর্থনীতির একটা বড়ো অংশ চীন নিয়ন্ত্রণ করে।বাইশ শতাংশ মার্কেট শেয়ার নিয়ে ভারতে বহুল প্রচলিত চীনের তৈরী ইউ সি ব্রাউসার এদেশে ব্যবহারের নিরিখে দ্বিতীয় নম্বরে রয়েছে। শুধু তাই নয়,ভারতের মোবাইলে ব্যবহৃত একশোটি অ্যাপলিকেশনের মধ্যে চুয়াল্লিশটিই চীনের তৈরী। পেটিয়েমের মতো প্রয়োজনীয় মোবাইল অ্যাপে ৪৫% চীনের বিনিয়োগ রয়েছে। লকডাউনের বর্তমান আবহে টাকা স্থানান্তরণের জন্য পেটিয়েমের মতো অ্যাপের ব্যবহার একধাক্কায় অনেক গুণ বেড়ে গিয়েছে, অর্থাৎ বকলমে এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও চীনের মুনাফা বৃদ্ধি হচ্ছে।
স্বাভাবিক কারণেই ইউরোপের সমস্ত দেশ চীনের বিরুদ্ধে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তার নিয়ে তথ্য গোপন করার অভিযোগ এনেছে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র করোনা ভাইরাসের বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন, ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করা ও এড়িয়ে যাওয়ার জন্য চীন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে কাঠগড়ায় তুলেছে।
সারা পৃথিবীর প্রায় সমস্ত দেশ যেমন এই মারণ ব্যাধীর ভ্যাকসিন খুঁজে চলেছে তেমনই এই ভাইরাসের উদ্ভব ও পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনার কারণ নিয়েও সমানভাবে চিন্তিত হয়ে পড়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের করোনা সংক্রান্ত তদন্তের একটি খবর অনুযায়ী আশঙ্কা করা হচ্ছে, চীনের উহানের মাংসের বাজার থেকে মাত্র বত্রিশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত উহান ভাইরোলজি ল্যাব থেকে এই ভাইরাস “ছড়িয়েছে”।ওই ল্যাবে বাদুড়ের করোনা ভাইরাসের বাহক প্রজাতি নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছিল।এই অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ হিসাবে বলা যেতে পারে,চীনে ও সারা পৃথিবীতে এই মারণ ভাইরাস মহামারী আকারে ছড়ানোর পর মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে চীন যেভাবে করোনার উৎপত্তিস্থল (চীনের দাবী অনুযায়ী) উহানের ওই মাংসের বাজার পুনরায় কেনা বেচার জন্য খুলে দিয়েছে,তাতে সন্দেহের তীর চীনের দিকেই যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিজি ডঃ টেড্রোস্ করোনা ভাইরাসের বিষয়ে বেশ কিছু ভুল তথ্য সরবরাহ করেন। ১৪ জানুয়ারি ২০২০ তে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দাবী করে, করোনা মানুষের থেকে মানুষে সংক্রমিত হয় না অথচ চীনের উহানের স্বাস্থ্য সংস্থা সমসাময়িক সময়েই জানিয়েছিল এটি মানুষে সংক্রমিত হয়,কিন্তু ডঃ টেড্রোস এই বিবৃতিকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর,বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিজি টেড্রোসের নেতৃত্বে একটি দল চীনে করোনার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যান,চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর সাথে বৈঠক করেন এবং করোনা মোকাবেলায় চীনের সমস্ত পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেন।অথচ আশ্চর্যের বিষয় হলো,তাইওয়ান চীনের আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে করোনা ভাইরাস সম্বন্ধে সতর্ক করেছিলো,কিন্তু পরবর্তীকালে ডঃ টেড্রস্ তাইওয়ানের জন্য প্রশংসার একটি শব্দও খরচ করেননি।শেষ পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১১ই মার্চ ২০২০ তে করোনাকে মহামারী বলে ঘোষণা করে,ততদিনে সারা পৃথিবী জুড়ে চার হাজার মানুষ করোনায় মারা যান,এবং এক লক্ষ আঠারো হাজার মানুষ সংক্রমিত হয়ে পড়েন।ফলস্বরূপ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রেস কন্ফারেন্স করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সব রকম অনুদান বন্ধ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন,প্রসঙ্গগত উল্লেখ্য আমেরিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশী আর্থিক অনুদান করে এসেছে,তালিকায় এরপর ছিলো চীন।