শ্যামলী বলল, শুনুন অরুণদা, ওই ওয়াগন ব্রেকার গুণ্ডাটার সাথে আজ আমি দোস্তি পাতিয়েছি। আর একগাড়িতে পাশাপাশি বসে… পুজো এসে গেল, এইসময় একসাথে ঠাকুর দেখতে গেলে একটা বয়ফ্রেন্ড তো চাই। আপনাকে নিয়ে টানাটানি করলে দিদিটা মনে ব্যথা পাবে!
অরুণ ধমকে উঠে বললেন, ছিঃ শ্যামলী! গুরুজনের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়, সেই জ্ঞানটাও তোমার লোপ পেয়ে গিয়েছে।
শ্যামলী বলল, এটা শুনে অরুণদা, সত্যি বলছি, আমার প্রাণটা ভরে গেল।
অরুণ বললেন, লাজলজ্জা জ্ঞানগম্যি সব তোমার লোপাট হয়েছে।
শ্যামলী বলল, কি চমৎকার একটা সার্টিফিকেট পেলাম আপনার কাছে। ঠাকুর বলেছেন, লজ্জা ঘৃণা ভয়, তিন থাকতে নয়। আরো বলেছেন, তিনি সত্ত্ব রজঃ তম, এই তিনটি গুণের ঊর্দ্ধে। শিশুর যখন মায়ের কথা মনে পড়ে, তখন হাজার খেলনা দিলেও সে ফিরে তাকায় না। তখন শিশুর একমাত্র লক্ষ্য মা।
অরুণ বললেন, শ্যামলী, তুমি কি মাঝরাতে আমায় কথামৃত শোনাতে বসলে?
শ্যামলী বলল, ও অরুণদা, ভুল করছেন, আমি তো আপনার বউ নই, যে যা বলব সেটাই কানে খারাপ লাগবে। আমি যে শ্যালিকা। যা বলি তাই অমৃত। অমৃতং বালভাষিতং।
অরুণ খুব রেগে গিয়ে ফোন কেটে দিলেন।
পিছন থেকে সবিতাপিসি জিজ্ঞাসা করল, কে ফোন করেছিল রে?
শ্যামলী বলল, চিনি না।
সবিতা বলল, সে কিরে মুখপুড়ি, চিনিস্ না যদি, অত চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে কায়দা করে কথা বলছিলি কেন?
শ্যামলী বলল, কি জান পিসি, লোকটার নাম জানি, কোথায় থাকে তাও জানি, কোথায় কাজ করে তাও জানি, তবুও যেন লোকটাকে চিনি নি। চেনা কি একটা যেমন তেমন কাজ পিসি?
সবিতা বলল, আ খেলে যা, লোকটার নাম জানিস বলছিস, বাড়ি কোথায় তাও জানিস, তাহলে চিনতে কি বাকি রইল?