অণুগল্প ১ বৈশাখের বিশেষ সংখ্যায় অলক্তিকা চক্রবর্তী
by
·
Published
· Updated
প্লট
কড়কড়ে তিনটে দশটাকার নোট,হারু আর একটু হলেই চুমু খেয়ে ফেলছিল সেগুলোয়, নিরূপম চট করে ওকে ধরে নিজের হাতটা সরিয়ে নিল।
‘আরে কী করছো ,জানো না এখন সবকিছুতেই ভাইরাস,নাও ধরো’।হারু ধরলো,ওর হাতটা অল্প অল্প কাঁপছিল, নিজেকে সামলে ধরা গলায় বললো,
‘আসলে ঘরে একদানা চাল ও নেই,এ টাকাটা পেয়ে আমার যে কী উপকার হলো , ভগবান আপনার ভালো করবেন।এই যে করোনা ভাইরাস না কী এসেছে,সে তো আমাদের মতো মানুষের পেটে লাথি মেরে দেছে গো বাবু, বলুন গরীবের রুটি রুজির বন্ধ হলে চলে?’
নিরূপমের খারাপ লাগলো,হাত বাড়িয়ে আরো দুটো নোট হারুর হাতে দিয়ে সাইকেল টা নিল।ফেরার পথে ভাবছিল এই একই কাজের জন্য হারু কদিন আগেই কতবার ঘুরিয়ে শেষে যেন দয়া করে বলেছিল,
‘২০০টাকা লাগবে আর আপনার সাইকেলের যা অবস্থা (হয়তো চাপ দিয়ে আরো আদায় করবার তালে ছিল)।
রাতারাতি কী হলো,আজ সকালে তো নিরূপম কে দেখে নিজেই এগিয়ে এসে বললো,’
তিরিশ টাকা দেবেন সীটটা ঠিক করে দেবো’।
নিরূপণ দেখলো ও নিজের দোকানের পেছনে ই বসে, পুলিশের ভয়ে দোকান খুলতে পারে নি।
ভাবতে ভাবতে নিরূপমের কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম, সত্যিই দেশের কী অবস্থা, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে ওর নিজেরও…!
‘আমি পথভোলা এক পথিক এসেছি…’,মনিকার ফোন
‘হ্যাঁ আসছি’,
তাড়াতাড়ি বাড়ির পথে নিরূপণ,নাঃ আজ তার কপালে দুঃখ আছে, সেই কোন সকালে বেরিয়েছে বাজারে যাব বলে, এখন সে তার বউ মনিকার মেজাজ মর্জির ও ঠিক হদিশ পায় না,একেই তো সারাদিন কী সব ছাইভস্ম লেখে আবার কদিন ধরেই বলছে ,’নাঃ, ঠিক ঠাক প্লট পাচ্ছি না ,
এই নিয়ে ও তার সবসময় মেজাজ সপ্তমে। ভাবতে ভাবতে নিরূপণ একেবারে মনিকার মুখোমুখি,
‘বাজার কোথায়?’মনিকার হুংকার
‘আরে শোনো না,’নিরূপম কথা হাতড়ায়,
‘কী শুনবো?????’
‘আজকে এই সাইকেল টা…….’,নিরূপম মরীয়া ,বলেই চলে। শুনতে শুনতে মনিকা যেন কেমন থমকে যায় তারপর হঠাৎ কী এক উল্লাসে ফেটে পড়ে,’ওঃ তুমি সত্যি!’
‘ককী????’,নিরূপম হকচকিয়ে যায়।
‘পেয়েছি,ইউরেকা!’
‘কী পেয়েছো’?
‘গল্পের প্লট’…।