দৈনিক ধারাবাহিক উপন্যাসে মৃদুল শ্রীমানী (পর্ব – ৩৭)
by
·
Published
· Updated
পর্ব – ৩৭
১৩৬
প্রিন্সিপ্যালের ঘর থেকে বেরোতেই মেয়েরা শ্যামলীকে ঘিরে ধরলো। “ কি কি কথা হল, বল।“
শ্যামলী বলল “ আমি তোমাদের কথা বলবার সুযোগ পাই নি। প্রিন্সিপ্যাল আমাকে বলছিলেন তোমাদের বুঝিয়ে সুজিয়ে পরীক্ষায় বসাতে, কিন্তু আমি বলে দিয়েছি, ও আমার কাজ নয়।
কয়েকটি মেয়ে রুক্ষ স্বরে বলল , “তাহলে এতক্ষণ ধরে তুই কি শলাপরামর্শ করে এলি?”
শ্যামলী বলল “শোনো, তোমরা যখন কলেজে ভরতি হয়েছিলে, তখন কি আমার সাথে পরামর্শ করে ভরতি হয়েছিলে যে আমি তোমাদের হয়ে কথা বলবো? আমরা যে যার নিজের ইচ্ছেয় কলেজে পড়তে এসেছি। নিজের নিজের মতে চলার একতিয়ার আমাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা ভাবে আছে। তোমার পরীক্ষা দিতে ইচ্ছে না হয়, তুমি দেবে না । মিটে গেল। আমার তাতে কি? “
এমন সময়েই পুলিশের একটি জীপ কলেজ চত্বরে ঢুকে পড়তে মারমুখী মেয়েরা কে কোথায় সরে পড়লো। আর যারা নিজেদের শান্ত শিষ্ট নিরীহ ভেবে যখন যেদিকে পাল্লা ভারি সে রকম বুঝে কথা কয়, তারা বললো পরীক্ষা দেবে। শ্যামলীও তাদের সঙ্গে হল ঘরে বসে গিয়ে পরীক্ষার খাতায় মুখ গুঁজে দিল। কোনোমতে লেখা শেষ করেই সে দৌড়ল ব্যাংকে । তার হাতব্যাগে কারবারের টাকা ছিল। ওই চিন্তায় সে কোনো গোলমালে জড়াতে চাইছিল না।
ব্যাংকের কাজ শেষ করে শ্যামলী গেল ডি এস পির অফিসে। গিয়ে দেখলো ঘরের সামনে নেমপ্লেট বদলে গিয়েছে। উঁকি মেরে দেখলো ভেতরে কেউ নেই। নেমপ্লেট বদলে যেতে দেখে তার বুকটা ছাঁৎ করে উঠলো । এমন সময় ড্রাইভারটা এগিয়ে এসে বলল আগের সাহেবকে খুঁজছেন? শ্যামলী ঘাড় নেড়ে সায় দিল। ড্রাইভার বললো “সাহেব তো সকালেই রওনা দিলেন। মুর্শিদাবাদ যে অনেকখানি রাস্তা!” শ্যামলীর খুব খারাপ লাগছিল। সে উপলব্ধি করতে পারছিল মাফিয়া গুণ্ডাদের হাত এদেশে এত লম্বা যে একবেলার মধ্যে তারা বড়ো বড়ো অফিসারকে পর্যন্ত ট্রান্সফার করিয়ে দিতে পারে।