সূর্য আমাদের সব চেয়ে কাছের নক্ষত্র। মাত্র পনেরো কোটি কিলোমিটার দূরে থেকে পৃথিবীটাকে সে বনবন লাট্টুর মতো করে ঘোরাচ্ছে। আর চাঁদ পৃথিবীর সবচাইতে কাছের মহাজাগতিক বস্তু। চাঁদ পৃথিবীর উপগ্রহ।
সূর্যকে পৃথিবী তিনশো পঁয়ষট্টি দিনের কিছু বেশি সময়ে একপাক খাচ্ছে। চাঁদ পৃথিবীকে পাক খাচ্ছে সাতাশ দিনে। চাঁদের ভর পৃথিবীর তুলনায় খুব কম। পৃথিবীর একশো ভাগের একভাগের সামান্য বেশি। আর সূর্যের ভর পৃথিবীর তিনলক্ষ ত্রিশ হাজার গুণ। পৃথিবী থেকে চাঁদ সৌরজাগতিক মাপকাঠিতে যথেষ্ট কাছে রয়েছে। সেটা হল তিনলক্ষ চুরাশি হাজার চারশো দুই কিলোমিটার। ত্রিশখানা পৃথিবী পরপর রাখলে এই দূরত্ব তৈরি হয়। সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো পৌঁছায় আট মিনিট উনিশ সেকেণ্ড সময়ে। আর চাঁদ থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে পুরো দেড় সেকেণ্ড সময়ও লাগে না। সূর্যের ভিতরে প্রতি সেকেণ্ড সময়ে ছয়শো মিলিয়ন টন হাউড্রোজেন তাপপারমাণবিক প্রক্রিয়ায় হিলিয়মে রূপান্তরিত হয়। ওই সময়কালে চার মিলিয়ন টন পদার্থ শক্তি হিসেবে বেরিয়ে আসছে। তাপ আর দৃশ্য আলোর পাশাপাশি মহাজাগতিক রশ্মি, এক্স রশ্মি, গামা রশ্মি ছুটে আসে। এইসব রশ্মি বিপজ্জনক।
সূর্য পৃথিবী ও চন্দ্র এক তলে নেই। কিন্তু ঘুরতে ঘুরতে চাঁদ সূর্য ও পৃথিবীর সমতলে চলে এলে গ্রহণ হয়। হিসাব করে বলাযায়, কবে আবার সূর্য গ্রহণ হবে।
পৃথিবী আর সূর্যের মাঝে বিরাট মহাশূন্য। সূর্যের যে আলোকমণ্ডল, যে আলো পৃথিবীতে আসে, তার উষ্ণতা প্রায় ছয় হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস। পৃথিবী আর সূর্যের সমতলে চাঁদ এসে পড়লে তবে সূর্যগ্রহণ হয়। তখন সূর্যের পুরো চাকতি ঢেকে গেলে তাকে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ বলে। খানিকটা ঢেকে গেলে তাকে বলে খণ্ডগ্রাস গ্রহণ। আর চাকতির মাঝখানে আড়াল করলে, বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ হয়।
সূর্যের আলো পৃথিবীতে আসার সময় তাপরশ্মি সাথে করে আনে। আরো আনে গামা রশ্মি, এক্স রশ্মি ইত্যাদি। সূর্যের উদয় ও অস্ত যেমন স্বাভাবিক, তেমনি গ্রহণও একটি স্বাভাবিক ঘটনা। সাবধানতা অবলম্বন করে সূর্যগ্রহণ দেখুন। তবে খালি চোখে নয়। সতর্কতা অবলম্বন করুন। সূর্য গ্রহণের সময় জীবাণুর বৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনা নেই।