[ফেসবুকে মোহনার কম অভিজ্ঞতা হয়নি। অর্কপ্রভর চেয়ে এই বিষয়ে দু’একবছরের সিনিয়ারই হবে হয়তো। তার কোন লেখা বা ছবির পোষ্টে ‘লাইক’ আর ‘কমেন্ট’এর ধরন দেখেই অনেকটা বুঝতে পারে, কে কিভাবে তার কাছে বার্তা পাঠাতে চাইছে। হ্যাঁ, পুরুষরা বোঝে না, মন্তব্যের ভাষাতেই অনেককিছু টের পাওয়া যায়। কিন্তু, বন্ধুরা তার ছবি উপেক্ষা করতে পারে, এমন ভাবনা তার মনে আসেনি, কোনদিনও। লাইক কমেন্টের বহর দেখেই তো নিজের গুরুত্ব অনুভব করা!!… অর্কপ্রভকে তার অন্যরকম লেগেছেই তো!! সবসময় ছবিতে লাইক দেননি… মেসেঞ্জারে কথা বললে উত্তর দিয়েছেন,… তাতে নিঃস্পৃহতার লক্ষণ নেই, লেখায় রোমান্টিকতার ছোঁয়াও থাকে,… সে তো দু’বছর আগেও দেখেছে!… তবুও, নেহাতই প্রয়োজন বা জন্মদিনের শুভেচ্ছা ছাড়া তেমনভাবে নিজে থেকে কথা বলতে দেখেনি। মোহনার মনেহয়েছে, হয়তো তিনি খুব ব্যস্ত মানুষ… বা, ইনবক্সে কথা বলতে পছন্দ করেন না!!… অনেক মেয়েরাও তো প্রোফাইলে সে’রকম লিখে দিচ্ছে, কিছু পুরুষদের জ্বালাতনের হাত থেকে বাঁচতে!!… ইনিও হয়তো তেমনই কিছু মহিলার দ্বারা উত্যক্ত হয়েছেন!!… কিন্তু, এই ক’দিনের কথাবার্তায় তার ধারণা অনেকটাই পাল্টে গেছে। বারে বারেই কাজের ফাঁকে ফাঁকে তার সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করছে…
এই যেমন এখন!… দু’ঘন্টা কথা বলেনি, মনেহচ্ছে কতক্ষণ কথা বলেনি!!… আবার একটু কথা বলা যাক! ]
মোঃ: আচ্ছা, ভগবানকে কি ভালোবাসা যায় না…!?
ইতিহাস তো সাক্ষী… স্বয়ং মাধব কে ভালোবেসে রাধা কুলত্যাগী… আর মীরা অমৃতজ্ঞানে বিষপানে নি:সংশয় … ভালোবাসার জোরেই তো…
সেটুকু কিন্তু শুধু ধূপ-ধুনোর ভালোবাসা নয়… নিজেকে উজাড় করে সমর্পণের ভালোবাসা… 🙂
অঃ : বেশ তো! সেভাবেই বেসো! আমি তো সে অপশন দিয়েই রেখেছি! কিন্তু, সেটা আমার আগেভাগে জানা দরকার… ‘ বেহিসেবী ভালবেসে হব না ঋণী!’( গানটি জান তো!)!!… তোমার চোখে আমি অবাঞ্ছিত অন্য কোন ইমেজে থাকতে চাইবো কেন!?… কিন্তু, তাই যদি চাও তাহলে তো তোমার কথাবার্তায় এত ব্যথা, এত হারানো, আশ্রয়হীনতা, অস্বস্তি, অপ্রেমের কথা আসতো না!!… এর আগে ধূপধুনো কি কেউ নিতে চায় নি!
তোমার কথায় তো কান্নার সুরও বাজে!!… ভেতরে এত কান্না নিয়ে, ফেসবুকে কী করে এমন ছুরির ফলার মত হাসি আর দৃষ্টি হানো?
মোঃ: ওই যে ওটা নেহাৎই অভ্যেস… তাতে তো হৃদয়ে ঘা পড়ে না…
হৃদয়ে ঘা না পড়লে আনন্দাশ্রু ঝরেও না তাই… আর ঝরে না বলেই ভালো থাকার উপাদান সংগ্রহ করতে ইচ্ছে হয়… নইলে ভারি একঘেয়ে ঠেকে সব কিছু…
অঃ: তোমার বিপদ তো ওইখানেই। আর কাউকে এই লোভ দেখিয়েছ নাকি!
মোঃ: হা হা… ওই যে বললাম ওই সহজতাটুকু সবার সহ্য হওয়ার নয়… কারণ সহজতার পরিস্থিতিটিও দুর্লভ এবং তা ধারণ করার আধারটিও… সবাই জটিলতায় অভ্যস্ত কিনা… সহজে সহজতা গ্রহণ করার ক্ষমতাটিই খুইয়ে বসেছে…😃😃
আচ্ছা… একটু বই পড়ার ইচ্ছে আছে আজ…
আপনার গল্পটাও… ‘প্রেম’…যেটি পাঠিয়েছেন।
আজ সারাদিন ফেসবুক ও খুলিনি… ☺
সেগুলো করি একটা একটা করে তবে… !!
(অনেকক্ষণ পরে)
অঃ : হুঁ, ভেবে দেখলাম , শাস্তি, পুরস্কার এবং পারা না পারার বিষয়টি নির্ভর করছে দুজনের সম্পর্কের ভিত্তির ওপর 🙂। তোমার সহজ আকুতি অথচ অসমসাহসিকতার কথা ভাবলে সেটা একরকম হবে, আর, শ্রদ্ধা ও সমীহপূর্ণ দৃষ্টির বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে পিস্তলের সামনে দাঁড়ালে একরকম হবে।
সেইটা আগে clear করো। 😊
মোঃ: হা, হা, হা… নিশ্চয়ই করবো!!…😃
কিন্তু, মেলা কাঁদিয়েছেন আমায় আপনি আজকে…😊
এবার আমায় গল্পটা পড়তে হবে… কবিতাও। অনুধাবন করে তার উত্তর দিতে হবে… হুম্…!? তাই তো…!?
কখন করবো তবে….!?
(রাতে অর্কপ্রভ বাড়ী ফিরে দেখলো, মোহনা লিখে রেখেছে)
মোঃ: গল্পটা পড়লাম… আহা…. একখানি কুর্নিশ জানালাম…
তবে শেষটা কেমন যেন ঠিক শেষ হতে চাইলো না..মনে হলো আরো কিছু বুঝি হওয়ার ছিলো….
তবে এককথায়… দুর্দান্ত !
অঃ : এর মধ্যে পড়ে ফেললে। বেশ বড় গল্প তো!… তবে, গল্পে এই অতৃপ্তিটা থাকা দরকার!
মোঃ: হ্যাঁ… ২৬ পাতা তো… তাও এক নিশ্বাসে পড়া হয়ে গেলো… ! 🙂 বারবণিতার কাহিনী তো!… interesting.
তবে, আমার মনে হলো… শেষের মোটিফ টা একটু অন্য রকম হতে পারতো।
মেয়েটি যদি ছলনাই করতো সেই ছেলেটিকে ভালোবেসে ফেলার অপরাধে অথবা ছেলেটি তাকে কোন সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে দিয়ে দায়িত্ব মুক্ত হতো তবে বুঝি মানসিক পরিতৃপ্তির দিক দিয়ে কিছুটা বেশী গ্রাহ্য হতো…
এটা নিতান্তই আমার ক্ষুদ্র মতামত… তবু জানালাম… তবে, আমি আর কতটুকু বুঝি!…😊
অঃ: তা কেন!… তুমি অনেক কিছুই বোঝ। আমি আসলে, একটি নারীর প্রেম যে কত গভীর হতে পারে, সেটা দেখাতে চেয়েছি। দুঃসহ একটি জীবন থেকে সে কিছুতেই বেরোতে পারছে না। পরিচিত হওয়া ছেলেটি তাকে সাহায্য করতে প্রস্তুত ছিল, তবু মেয়েটি শুধু নিজের কথা ভেবে বেরিয়ে আসায় দ্বিধাগ্রস্ত ছিল ।
যা হোক, তুমি পড়লে এটাই ভাল লাগছে।
মোঃ: বেশ… তবে,আপনার সাথে একটু তর্ক করি… সে আপনাকে এই অযাচিত ভালোবাসারই সাহসে ভর করে….
মেয়েটি যদি তার স্বামী বলে মেনে নেওয়া দুশ্চরিত্র হীরালালের জন্য ছেলেটিকে ছলনায় ফিরিয়ে দিত..তবেও কিন্তু তার ভালোবাসাই প্রতিষ্ঠিত হত… তা সে অপাত্রে হলেও… ভালোবাসা তো যোগ্য অযোগ্য বিচার করে না তেমন ভাবে…
🙏🙂
অঃ: তুমি হলে তা-ই করতে নাকি!?😆😆… দুশ্চরিত্র স্বামীর জন্য শেষপর্যন্ত ছেলেটিকে ভালবাসার ছলনা করে ফিরিয়ে দিতে!?…পারতে!? 😒
হা, হা, হা… ঠিক বা ভুল যা-ই হোক, তোমার এই নিজস্ব বোধটাই আমাকে তোমার কাছে টেনে রাখতে পারে। তোমার ফেসবুকীয় ঠিকরে পড়া রূপ তো আমায় ধরে রাখতে পারেনি!
আমার ভাবনাটা ছিল : ভালবাসার পরে মায়া, অনুকম্পা, কর্তব্য এইগুলো এসে যায়। তার দুশ্চরিত্র স্বামীটি তার অনেক ক্ষতি করা সত্ত্বেও, অসুস্থ অবস্থায় তাকে ও ছেড়ে যেতে পারেনি। পরিচিত হওয়া ছেলেটিকে ও ভরসা করেছিল, ভালবেসেছিল, কিন্তু, মেয়েটি স্বামী হীরালালের মৃত্যু পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চেয়েছিল। এটাই নারীর মহত্ত্ব। পুরুষরা এটা পারবে না। 🙂
মোঃ: কোথায় ছিলেন এতদিন…!? চুপ করে ছিলেন কেনো এমন করে…!?
আমি কত আর এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়াতাম… কি যেন এক সন্ধানে….!? 🙂 আমি যে এমনই একটি হৃদয়ের সন্ধানে ছিলাম!! অকপটে বলছি।
অঃ: এই ‘সন্ধান’টিই সবার অবচেতনে থাকে। সেই যে, “মনের মাঝে বাস করে কয়জনা, মন জানো না “… মনের মধ্যে কত কুঠরির কত দরজা আছে… কোন্ দরজা খোলা পেয়ে যে সেই ‘সন্ধান’ সামনে এসে দাঁড়ায়!… সে কেউ জানে না। সবাই তো খুঁজতে চায়ও না! নির্দিষ্ট সুর, তাল, ছন্দে বেঁধে দেওয়া জীবনের স্বরলিপি ধরে গান গেয়ে গেলে তো কোন সমস্যা নেই!!… সমস্যা তো যে নতুন সুর, তাল, ছন্দে গান বাঁধতে পারে, চায়। ‘অবচেতন’ যে তার বুকের দরজায় ধাক্কা দিতে থাকে, বেরবে বলে!!
মোঃ: ডাক্তারবাবু! আমার যে সে দরজা ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে! আমি তো চাইতে পারছিও না যে, সে দরজা না-ভাঙুক! মনেহচ্ছে, “ভেঙে মোর ঘরের চাবি” ‘তুমি’ এসেছ নিয়ে যেতে!!
অঃ: মোহনা! তুমি তো সহজভাবে আমাকে অনেককিছু বলছো। আমি খুব সহজ ভাবে একটা কথা বলি!!!
মোঃ : হ্যাঁ, বলবেন বৈকি!… না বললে, আমিই বা সহজতায় মিলবো কি করে!
অঃ : আমার প্রথম জীবনে তোমার মত একজন নারী আসার খুব দরকার ছিল।… ব্যাখ্যাটা ক্রমশঃ পাবে… এককথায় বলা যাবে না যে!!
মোঃ: বেশ… অপেক্ষায় রইলাম 🙂
অঃ: যা বলার বলতে তো শুরু করেছি!!
মনেহল, তুমি আমার জীবনের প্রথমদিকে আসলে আমার জীবনটা হয়তো আকাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দিকে যেতে পারতো!… তোমাকে এভাবে পেয়ে, তা যেন আরো বেশী করে মনে হচ্ছে 🙂!!
মোঃ: ধুর… কি যে বলেন… আমি তো সামান্যই!… ভীড়ে এমন অনেকেই আছে হয়তো… আসলে, সাক্ষাৎ হয় না বুঝি… 🙂
অঃ : না মোহনা, তুমি আমায় ভালবাস, এটা স্পষ্ট করে না বললে আমি একথা বলতাম না। আমার জীবনে যে নারী আসে নি, এমন তো নয়… হয়তো বেশীই এসেছে… বিচিত্র বিচিত্র পথে সে সব কাহিনী আমায় জীবন-উপন্যাসের একেকটা অধ্যায় লিখেছে … কিন্তু সাংসারিক জীবন শুরুর আগে ভালবাসার মত কোন নারী তেমন আসে নি। কিংবা, হয়তো এসেছিল… আমি বুঝিনি! আমার মনযোগ সেদিকে ছিলই না! হয়তো, অনেকেই আমার সেই অমনযোগকে ব্যাহত করে আমাকে ছুঁতে সাহস পায় নি!! …
তবে, তোমাকে এখন আশ্বস্ত করতে পারি, ভীড়ে কেউ নেই… আমি ভীড়ে ভিড়তে পারি না। তাহলে তো, তোমার ফেসবুক পেজে হাজার ভীড়ে আমায় প্রায়ই পেতে!!
কিন্তু, সে আশ্বাসে তোমার কী লাভ!?
মোঃ : আমিও যে ভীড়ে হাঁপিয়ে উঠি! একটি নিঃশব্দ, নির্জন, অন্ধকার অবকাশ যে আমারও ভীষণ প্রয়োজন পড়ে!… যেখানে প্রাত্যহিক সমস্ত আলো নিভিয়ে চুপ করে আকাশের দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে থাকা যায়!… আলোতে যার খোঁজ মেলে না, অন্ধকারে তাকে যে হাতড়ে বেড়াতে ইচ্ছে করে! আপনি যে আমার চোখ সওয়া সেই অন্ধকার!! সে অন্ধকার যে আলোর চেয়ে চোখের “আরাম, মনের শান্তি”!!… আমি তা হারাতে চাই না।
অঃ : কী সুন্দর যে লিখে চলেছ!
বেশ… কিন্তু, সে অন্ধকারের মাঝে নিজেকে কোথায় খুঁজে পেতে চাও, বলো !?
মোঃ : কেন!?… আগে বলেছেন তো, আপনার রিক্ত হৃদয়ে যেটুকু অবকাশ আছে, সেটা দিয়েছেন! আমি নাহয় সেখানেই নিজেকে খুঁজবো!…হৃদয় গলে কলমের ডগায় যে অন্ধকার অক্ষর হয়ে ঝরে পড়ে, সেখানেই না হয় খুঁজবো আমাকে… এরপরে যে সুর করবেন, যে গান রচনা করবেন, সেখানেই নাহয় আঁধারের ইতিহাস হয়ে থেকে যাব… কেউ জানবে না!!
অঃ : তোমার কী হয়েছে গো!? সেকথাই যদি বলো, তবে আগে আসনি কেন!?
মোঃ : আগে আসলে, আপনি হয়তো আমার প্রতি অমনোযোগীই থাকতেন… আর, আপনার মনোযোগ ভাঙাবার সাহস হত না!!😃
অঃ : 😃.. এখন সে সাহস পেলে কি করে!? 😊
মোঃ: দেখলাম, এখন মনোযোগী হয়েছেন। 😃
অঃ : হুঁ, মনোযোগী হতে হয়েছে। একটা বয়সের পরে হিসেবনিকেশে মনোযোগ আসবেই। নিজের প্রত্যাশার কাছাকাছিও যে পৌঁছতে পারে, সে বলতে পারে, “কী পাইনি তার হিসাব মিলাতে মন মোর নহে রাজী”… কিন্তু, যার ক্ষেত্রে সেটা ঘটে না, তার ‘হিসাবের শূন্য মেলে না সব বিকিয়ে’ও ।… আর, এই শূন্য মেলাতে গিয়েই হিসাব বহির্ভূতে হাত পড়ে। অবশ্য, যাদের হিসাবের প্রয়োজনই পড়ে না, তাদের এতশত ভাবনাও নেই।
মোঃ : একটা সময় কিন্তু এমন মনে হয়নি! বিয়ে হয়েছে… যা কিছু স্বাভবিক, তা তো মেনে নিতেই হয়েছে!…মেয়ে হয়েছে… তাকে পড়ানো, টিউশনে নিয়ে যাওয়া (স্বামীর trnasferable job তো! ), সংসার, শ্বশুর, শাশুড়ী,.. পূজোআর্চা… সবই তো আছে…
তার পরেও কোথায় যে একটা শূন্যতা ধোঁয়ার মত কুণ্ডলী পাকিয়ে বাতাসের স্তরকে অবরুদ্ধ করে রাখে!… নিঃশ্বাস নেবার জন্যে হাঁফিয়ে উঠি…
নিজের খোঁজ নিতে ইচ্ছে করে… তখনই সব কেমন বেসামাল হয়ে যায়…
অঃ : ভাগ্যিস, তার ওপর আবার চাকরি করে খেতে হয় না!! 😊
মোঃ : সে বরং ভাল ছিল!!
অঃ : না, মনেহয়…(সে নিয়ে পরে কোনদিন বলা যাবেখন)। অনেক চাকরি করা মহিলাকে তোমার বয়স থেকেই depression এ ভুগতে দেখেছি… কবে retirement হবে, সেই আশায় দিন গুনছেন।
তবে, তখন আর নিজের খোঁজ নেওয়ার সময়ই পেতে না… বুঝতেই পারতে না, তোমার আগের তুমিটা কবেই মরে গেছে!!
মোঃ : এখনই বা বেঁচে আছি কোথায়!?
অঃ : বেঁচে আছ বলেই তো নিজের খোঁজ করছ! এখন তো তবু ফেসবুক আছে, WA আছে, টিভি আছে, আরো কত কী আছে… কত বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলা, ভাব বিনিময়… সবই তো আছে!!..
মোঃ : কিন্তু, মনের যোগাযোগ ঠিক হয় না গো, ডাক্তারবাবু!! তোমাতে যা হল! তাই তো এত উতল হওয়া!!
অঃ : এত ভাল লেখো! গান করতে ভালবাস! ছবিও আঁকো (তোমার আপলোডে দেখেছি) খুব সুন্দর!… বাড়িতে কেউ তাতে খুশী হয় না!?… উৎসাহ দেয় না!?
মোঃ : হুঁঃ… এ নিয়ে শুধু অশান্তিই হয়েছে। এরা সে সব পছন্দ করে না… উফ্, অনেক যুদ্ধ করতে হয়েছে।
অঃ : আসলে, বিবাহ, জীবনের এমন একটি ঘটনা যাতে, লাগামটি ভাগ্যের হাতে চলে যায় । মিল হল তো ভাল, নয়তো তার মাশুল দিয়ে চলা।
মতের মিল হওয়াটা খুব জরুরী। বয়স, শিক্ষা এবং পরিবেশ মানুষের মনে তো একটা মতামতের স্তর ফেলেই!… সেটি যদি বিবাহের সময় অন্য মানুষটির সঙ্গে সমান্তরাল অবস্থানে না থাকে, তাহলে সমস্যার অন্ত আর হয় না!!… কিন্তু, সে সময়ে সেটা নিশ্চিত বোঝার অবস্থায় কেউই থাকে না।
ভেবো না সমস্যাটা শুধু নারীদেরই হয়… পুরুষদের ক্ষেত্রে আরো বেশীই হয়।
ভাবো, একটি পুরুষ তো তার জীবনের লক্ষ্যটিতে পৌঁছনোর সহযোগী হিসেবে একটি নারীকে ঘরে নিয়ে আসে! আর, সেই লক্ষ্যটিই যদি ভণ্ডুল হয়ে যায়!!
সংসারে ছোট ছোট compromise এর উল্কাপাতগুলি ক্রমশঃ এক একটা বড় compromise এর গহ্বর সৃষ্টি করে। তখন, জীবনের সে এবড়োখেবড়ো উপত্যকায় স্বপ্নের মহাকাশযান আর সফলভাবে নামতে পারেনা… অনেক সাধের প্রকল্প বাতিল হয়ে যায়… একজীবনে বার বার সে চেষ্টা করা যায় না।
সারা গায়ে উল্কাপাতের ক্ষত,
তারা-খসা…
বিলুপ্ত নগরীর চিহ্ন বুকে নিয়ে
অন্ধকারের পথ বেয়ে
সূর্য পরিক্রমা…
একটি প্রচলিত কথাকে আমার মত করে কী বলি জানো!! To every success (and failure), there is a person of opposite sex behind.
কিন্তু, এখন যে তোমার জন্যে আমার আফসোস হচ্ছে! 😊… আমি তো এভাবে কারো প্রত্যাশী ছিলাম না! তবু, তোমার এই উতল হয়ে আমাকে এভাবে পেতে চাওয়ায় ভাল যেমন লাগছে, বিস্মিতও হচ্ছি!!… এমনও হয়!!
অনেক কথা বলে ফেললাম। এখন তোমাকে দেখে অবাক হচ্ছি, তুমিও কি বেঘোরেই পড়েছো!?
মোঃ: দেখুন, ফেসবুক একটি কৃত্রিম পৃথিবী… সেখানে সবাই ভালো ভালো কথা বলে অপরিচিতের মন জয় করে, আর ঘরে নিজের লোককে খানিক গালমন্দ করে শান্তি পায়…. এই তো…!? 🙂
আবার,… এ খানিক সত্যিও বটে…. নাহলে, আমরাই বা কেন এই জগতে নিজেদের সন্ধান করে বেড়াচ্ছি!!
এই কৃত্রিম জগতই কখনো কখনো এমন আলোক পথের সন্ধান দেয় যে জীবন পূর্ণতার স্বাদ পায়…
তা সেদিক দিয়ে বিচার করতে গেলে এবং চোখ এবং বুদ্ধিটি ঠিক রাখতে পারলে এই মাধ্যমটিই কিন্তু আলাদিনের আশ্চর্যপ্রদীপ…. !! 🙂
আমি তো রূপে ভোলাতে চাই না কিছুই… মুশকিল হলো বাহ্যিক রূপটুকু অতিক্রম করে মন পর্যন্ত পৌঁছনোর রাস্তায় পা-ই বাড়াতে চায় না কেউ… 😊
অঃ :: ভাগ্যিস কেউ করে নি। করলে, তুমি তাকে নিয়ে থাকতে!! আমার সঙ্গে আর দেখা হত না!!… দেখা হল তবে, বড্ড দেরী করে! 😊 এখন আবার সে রকম করবে নাকি!! “হেথা নয়, হেথা নয়, অন্য কোথা, অন্য কোনখানে”…
মোঃ: প্রেমটি ঠিক পুতুল খেলা নয় যে… তাতে হৃদয় নামক বস্তুটি বেজায় নাক গলায়… নইলে নতুন নতুন পুতুল কিনে দিব্যি সংসার সাজানো যেতো… 🙂
এটা নিয়ে কাল আরো বলবো… আজ তোলা রইলো… 🙂
সহজ জিনিসটির একটি সহজতা হলো… কোন অনুভূতিরই গলা টিপে…. কড়া চোখে শাসন করে… তাকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরানো যায় না…. শ্রদ্ধার সাথে উন্মাদনা থাকবে না… এমনকি কোথাও শর্ত আছে….!? হুম্…!? 🙂
” অন্তরগ্লানি সংসারও ভার
পলক ফেলিতে কোথা একাকার
হৃদয়েরও মাঝে স্বরূপ তোমার…
দেখিবারে যদি পাই…. “
আমার চিরকালীন প্রিয় শক্তিপ্রদানকারী ক’খানি লাইন…
আজ আমার নিজেকে ভারি তৃপ্ত মনে হচ্ছে… অনেক অনেক ধন্যবাদ জানালাম আপনাকে… না জানালে শান্তি হবে না… ” মেরি জিন্দেগী মে হুজুর আপ আয়ে… ” 🙂
চোখে জল এসেছে যেমন… চেয়েছিও ঠিক ততটাই (🙂 অকপট)… সে মোহও অতিক্রম করা কঠিন… 🙂🙏
আবার তাতে স্বস্তি এসেছে যখন… নিজের এমন একটি প্রাচুর্য পূর্ণ আশ্রয় আবিষ্কারে ধন্য বোধ করেছি….
তাই আমার-আপনার সকলের অন্তরাত্মা যিনি তাঁকে সশ্রদ্ধ প্রণাম জানালাম ! 🙂