[এই গৃহকর্মটি দক্ষতার সহিত করিবার যাবতীয় তথ্য এখানে লিপিবদ্ধ করিবার প্রয়াস করিয়াছেন লেখিকা ।]
বাসন প্রক্ষালন কাল
বাসন প্রক্ষালন করিবার জন্যে, চিত্ত কে বোঝাইতে হইবে, দ্রুত সুত্রপাত কর্মটিকে সুচারু করিতে সাহায্য করিয়া থাকে।খাদ্যদ্রব্য বাসনে শুষ্ক হইবার আগে উহাকে ধুয়ে লইলে পরিশ্রম অনেক হ্রাস হইয়া যায়। আর মন প্রশান্ত থাকে। সেই জন্যে খাদ্য গ্রহনের ঠিক পরেই উপযুক্ত ‘বাসন প্রক্ষালন কাল’। যদিও কেহ কেহ প্রচুর পরিমাণে মলিন বাসন জমাইয়া তাহা স্নানের পূর্বে, উহা প্রক্ষালন করিয়া থাকেন।তবে অনেকে সিধান্ত হইতে পারে না কোন লগ্নে ইহা করিবে।তাহারা মন স্থির করিয়া এক সময় সকল লইয়া প্রক্ষালন করিয়া লয়। তাহাদের কাল নির্দিষ্ট থাকে না।
বাসন প্রক্ষালনের সামগ্রী
প্রাচীনঃ গোময় ভস্ম, সরিষার খোল, আমরুল পত্র, শুষ্ক তৃন সহযোগে ঘষিয়া ঘষিয়া পুষ্করিণী কিংবা নদীর তীরস্থ স্থানে করিতে হয়। কিঞ্চিৎ গাল গল্প আবশ্যক।
আধুনিকঃ বিশেষ ক্ষার যুক্ত সাবান। তরল কিংবা কঠিন। নল বাহিত জল আর স্ক্র্যাবার ।(টিভি তে উহাদের নিরন্তর বিজ্ঞাপন দেখিয়া সকলেই কি ভাবে উহা ব্যবহার করিতে হইবে জানে।) যে এই কাজ টি করিবে তাহাকে অন্য কোন হুকুম না করায় বাঞ্ছনীয়। তাহার ক্রোধ হইতে পারে।
প্রযুক্তিশীলঃ একখানি বৈদুতিন বাক্স। উহার মধ্যে যাবতীয় বাসন ঢুকাইয়া দিয়া বীজাণু আর মলিনতা উভয় হইতে নিষ্কৃতি ঘটিয়া থাকে। তবে নিন্দুক রা বলিয়া থাকে উহা আদৌ বাঙালি রন্ধনের জন্যে ব্যবহৃত কড়াই পরিস্কার করিতে পারে না।
পদ্ধতি
প্রথমে মন শান্ত করিতে হবে। কারণ বাসনের মলিনতা হৃদয় কে আনন্দ দেয় না। উহার ওপরে তৈল লাগিয়া যে চিটচিটে বিরক্তি উদ্রেককারী অবস্থা হইয়াছে উহাকে মানিয়া লইতে হবে। জলে প্রথমে ধুইয়া লইয়া প্রাচীন পদ্ধতি মানিয়া গোময় ভস্ম কিংবা, সরিষার খোল দিয়া ঘষিয়া মলিনতা দূর করিতে হইবে। গোময় ভস্ম আজিকাল পাওয়া অতি কঠিন কারণ পুরাতন উনান টি অদৃশ্য প্রায়। আর সরিষার খোল ভিজাইয়া রাখিলে উহা হইতে ঘোরতর দুর্গন্ধ বাহির হইয়া থাকে। তাহার জন্যে উহার ব্যবহার নাই বলিলেই চলে। আধুনিক পদ্ধতি অনুযায়ী করিলে স্ক্র্যাবার ভিজাইয়া সাবান দিয়া পূর্ববৎ করিতে হইবে । স্ক্র্যাবারের যদি তাহার ঘর্ষণের ক্ষমতা হারাইয়া ফেলে তাহলে সঠিক ভাবে মলিনতা দূর করিতে সক্ষম হইবে না।সেই কারণে কাজ সম্পাদনের শেষে উহা যেন দ্রুত শুকাইয়া যায় উহা দেখিতে হইবে।যে সাবান এই কাজে ব্যবহার করা হয় তাহা অতি ক্ষার যুক্ত সাবান। হাতের ত্বকের পক্ষে হানিকারক হইলেও মহামারি থেকে রক্ষা করার জন্যে উপযুক্ত।
গৃহবন্দী কালে এই বিশেষ কার্যটিতে লিঙ্গ, জাতি, বয়স নির্বিশেষে সকলেই দক্ষ হইয়া উঠেছে।যাহারা দক্ষ হইয়া উঠিবেন তাহারা অচিরে গৃহ সহায়িকার কাজের ত্রুটি বুঝিতে সক্ষম হইবেন।
লেখিকার পরিচিতিঃ সমসাময়িক সাহিত্য উঠোনে নিবেদিতা ঘোষ মার্জিত পরিচিত নাম। অন লাইন লেখালেখি তাঁর পছন্দের মাধ্যম। মূলত গদ্য, তবে কবিতা ক্লাব, গল্প বৈঠক , বা নিজস্ব পরিবেশন মাধুকরী তে ও, হাতা, খুন্তির সাথে কলম টা রোজ চালাতে নিবেদিতা সিদ্ধহস্ত।