মেহেফিল -এ- শায়র রুদ্রাক্ষ রায়হান

এপিটাফ

পূণ্য ই শেষ কথা নয়
আরো কিছু প্রাপ্তিও জমা হোক প্রার্থনায় কারো
আপেক্ষিক সুখটুকু কন্সট্যান্ট হয়ে ওঠে যদি!

কখনো নদীর শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলে
চোখ তুলে গুনে নিও স্বাপ্নিক ঢেউগুলো তার
টুপটাপ বৃষ্টির গান-
সুর তুলে গেয়ে যায় অবিরাম মেঘের কোরাস

মারেফাত বলে কিছু আছে
প্রিয় বুক পায় যদি নিশাচর চোখ দুটো-
ঘুমকাতুরে হয় খুব
এই ঘুম স্বর্গের হাট থেকে কেনা
চুমুহীন আর কিছু ছোঁয় না যেন ভুলক্রমে

মৃত্যুর রাত এলে পাশাপাশি বিছিয়ো সিথান
কান্নার পালা শেষে-
এপিটাফে লিখে দিও জোড়া রাজহাঁস।

জলেশ্বরী

তখনো আবছায়া পৃথিবীর বুকে-
মৃদু ঢেউ, পুকুরের জল ছুঁয়ে উঠে আসা মেয়ে
যার চুলে কলো মেঘ ছবি আঁকা আছে

আমি তার টাটকা নাভীর পূজা করি
অমন ভরাট বুক পৃথিবীতে আর কারো নেই
চুয়ানো জলের ফোঁটায় মুখ দিতেই-
তৃষ্ণারা হিল হিল বেড়ে ওঠে, উঠুক!

আমার এই চোখ দুটি অন্ধ হলে-
ঘ্রাণ বেড়ে যায়, শরীরের সাবান গন্ধ নাকে লাগে
মুহুর্তেই মরে যাই একা আবডালে।

আমি
মরে যেতে যেতে স্তনে নাক ঘসে দিই
মরে যেতে যেতে নাভীমূলে জিভ ছুঁয়ে দিই
মরে যেতে যেতে ঢুকে যেতে চাই যোনীদেশে।

কীর্তনখোলা

প্রেমিকের শব্দ শুনে কীর্তনখোলার শরীরে ঢেউ আসে
কিশোরীর হুলুস্থুল যৌবনের মত টলটলে জল
ব্রহ্মাণ্ডের বিলেকেরা নদীতীরে গল্পের আসর জমায়।

সাত লক্ষ প্রেমিকা দাঁড়িয়েছে উদল
সবুজ কামিজে ঢাকা, বুক খোলা মেয়ে
এমন এক ছবি নিয়ে মাঝখানে স্রোতধারা বয়

জাহাজে মানুষ ওঠে
পুঁটুলির ভেতরে থাকে কলাইয়ের শাক-
ছাঁটা চাল, নৌকায় পারাপার তিন টাকা
সুনীল বসাক-
টাকা তোলে।

বিকেলের শেষ দিকে পৃথিবীতে একটাই নদী
প্রেমিকেরা নদীতীরে বসে থাকে রোজ
ওই পাড়ে সবুজের ডাক, এই পাড়ে শহর নিখোঁজ।

ইন্স্টলমেন্ট

পৃথিবীতে পূজনীয় নারীরাও জানে
আমি এক জ্বলজ্বলে সূর্যের শরীর নিয়ে আছি

য়ূরোপে তুষার নামে
উইন্টারের ভ্যাকেশনে মেয়েরা আমাকে শরীরে নিতে
বিকিনি পরে বিচে যায়।

আমি এক জ্বলজ্যান্ত সাগর
বিপরীত ঢেউয়ের দুপুরে দিও ঝাঁপ
এমন মুগ্ধ সাঁতার আর কই পাবে তুমি?

নারীকে সমস্তটা দেব
পৃথিবী শুদ্ধ নারীরা আমার কাছে ঋণী হয়ে থাকুক
আসলের শোধ চাইছি না
যতটুকু সুদ আসে চুমু চুমু কিস্তিতে দিও।

হিমাঙ্কেরও নিচে

সুশীতল সাপ হয়ে ওঠো
প্যাঁচানো শরীর ছুঁয়ে যাও

আলো নিভে গেলে পৃথিবীর
ছূঁয়ে দিও পিঠের জমিন তাজা ঠোঁটে

নিশ্বাসের ঘ্রাণ নিও, চুপচাপ হাত রেখো বুকে
ধীরে ধীরে আরো শীতল হও, নিচে নামো
নিপলের কালোজাম কেমন দাঁড়িয়েছে না?
ওইখানে জিভ দাও চাখো!

আঙুলেরা হেঁটে যায়? যাক, গুহায় খেলুক
নেমে এসো জিভ, নাভীর কোটরে, কেঁপে উঠুক

জোয়ার এসেছে কিছু? কিছুটা প্লাবন?
সন্তর্পণে ডুব দাও, সাঁতরাও
শব্দকে বলে দিও ধীরে, আস্তে চুপি চুপি আয়।

আহা জীবন, আহ্ শরীর, পৃথিবী ঘোলাটে হয়ে ওঠে
এইবার চোখ খুলে দ্যাখো, ঘ্রাণ নাও
মাঝরাতে ঘরময় পুষ্পেরা ফোঁটে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।