মেহেফিল -এ- কিসসা রুদ্র অয়ন

কালো ছেলে

টিউশনি করানোর চতুর্থ দিনের মাথায় ছাত্রীর মা অনিককে ডেকে হাতে কিছু টাকা দিয়ে বলল, ‘কাল থেকে তোমার আর আমার মেয়েকে পড়াতে হবেনা। তুমি তিন দিন আমার মেয়েকে পড়িয়েছো। আমি তোমাকে পুরো মাসেরই টাকা দিলাম।’
অনিক অবাক হয়ে ছাত্রীর মাকে বলল, ‘আন্টি প্লিজ কিছু মনে করবেন না, আমার অপরাধটা কি জানতে পারি?’
ছাত্রীর মা অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে বললো, ‘না, তোমার অপরাধ নেই। এমনিতেই তোমাকে আর আসতে হবে না।’
অনিক ছাত্রীর মাকে বলল, ‘আন্টি আমি আপনার মেয়েকে একটা মাস পড়াই। তারপর যদি আপনার মনে হয় আমি ঠিক মত পড়াতে পারছি না, তখন না হয় আমাকে বাদ দিয়ে দিবেন।’
এবার ছাত্রীর মা অনিকের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘ ইয়ে, ব্যাপারটা হচ্ছে কি আমার মেয়ে তোমার কাছে পড়তে চাচ্ছেনা। ভালো পড়ালেই তো শুধু হয়না দেখতে শুনতেও ভালো হতে হয়। তোমায় দেখলে না কি আমার মেয়ে ভয় পেয়ে যায়।’
ছাত্রীর আম্মুর হাতে অনিক টাকাগুলো ফেরত দিয়ে বলল, ‘আন্টি, টিউশনি করাতে হলে যে ফর্সা ভালো চেহারার অধিকারী হতে হয় তা তো আগে জানতাম না। যদি জানতাম তাহলে বিশ্বাস করুন আপনার মেয়েকে পড়াতে আসতাম না।’
ছাত্রীর বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তায় হাটছে অনিক। অবিন্যস্ত ভাবনার পৃষ্ঠাতে জমে ওঠে নানারকম আনকোরা স্বপ্নেরা।
কলেজ জীবনের কথা ভাবছে অনিক। কলেজে একবার একটা অনুষ্ঠানের উপস্থাপনার জন্য স্যার একজন ভাল উপস্থাপক খুঁজছিলেন। উপস্থাপনা করার মত কেউ আগ্রহী বা কেউ করতে  চায় কি না সবার উদ্দেশ্য স্যার জিজ্ঞেস করায় হাত তুলে বলেছিল অনিক, ‘স্যার, আমি উপস্থাপনা করতে পারি। স্কুলে পড়ার সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমি উপস্থাপনা করতাম।’
স্যার অনিক কে ভালো করে দেখে হাসতে হাসতে বলেছিলেন, ‘তোমার মত কাউয়া যদি উপস্থাপনা করে তাহলে অনুষ্ঠানে যে কয়জন মানুষ আসবে সেই মানুষগুলোও দৌড়ে পালাবে…!’
স্যারের এই এক কথাতে রাতারাতি অনিক হাসান নাম থেকে কাউয়া অনিক হয়ে গিয়েছিলো। তখন সবাই কাউয়া অনিক বলে ডাকতো!
ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার পর খণ্ডকালীন জব খুজছিল অনিক। পরিচিত একলোক এক ঠিকানা দিয়ে অনিককে বলেছিলেন, ‘ঐখানে খন্ডকালীন সেল্স ম্যানেজার দরকার যোগাযোগ করতে পারো।’
অনিক সেখানে যোগাযোগ করতে যায়। দোকানটার নাম সামু ষ্টোর। মালিকের নাম সামু। ফুড কোম্পানির এজেন্ট। এজেন্ট মালিক সামু অনিককে দেখে মুখ সিটকিয়ে একটা কাগজ বাড়িয়ে দিয়ে নাম ঠিকানা লিখতে বলেন। অনিক কথামত নাম ঠিকানা লিখে দেয়। সামু অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে বলে, ‘ঠিকানা থাকলো প্রয়োজন হলে জানিয়ে দিবো।’
পরে অনিক জানতে পারে, অনিককে মোটেই পছন্দ নয় সামুর। কালো আর দেখতে শুনতে তেমন স্মার্ট নয় বলে সেখানে কাজ পাওয়ার কোনও সম্ভবনা নেই তার!
কয়েকদিন আগে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকা যাচ্ছিল অনিক। পাশের সিটে বসেছিলো সুন্দরী একটা মেয়ে। অনিক যখন তার সিটে বসতে যাবে তখনই মেয়েটা নাক মুখ ওড়না দিয়ে চেপে ধরলো। বাস কিছু দূর যাবার পরেই মেয়েটা বাসের কন্ট্রাক্টরকে ডেকে বলল, ‘আমায় এই সিটটা পাল্টে দেন তো। আমি অন্য কোথাও বসবো।’
বাসের কন্ট্রাক্টর অনিকের দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিয়ে তাকালো। তারপর বললো, ‘আপা, এই লোকটা কি আপনার সাথে অসভ্যতা করেছে? যদি কোনোরকম কিছু করে থাকে তাহলে বলেন। তাহলে এখনই লোকটাকে বাস থেকে নামিয়ে দিচ্ছি।’
কন্ট্রাক্টরের মুখ থেকে এমন কথা শুনে বাসের কিছু যাত্রী অনিকের ওপর ক্ষেপে ওঠলো। তাদের মধ্যে একজন লোক চিৎকার করে বলল, ‘আলবাত নোংরামি করেছে। তা না হলে মেয়েটা সিট ছেড়ে ওঠতে যাবে কেন?’
এক ভদ্রমহিলা মুখ ভেঙচিয়ে বলল, ‘চেহারা দেখেই বুঝা যায় বদমাইশ ছেলে। এইসব বদমাইশ ছেলেদের জন্যে রাস্তাঘাটে মেয়েদের চলাচলই এখন দায় হয়ে পড়েছে।’
অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে বাসের প্রায় সকল যাত্রী মিলে অনিককে তেড়ে মারতে আসতে চাইছে যেন! অনিক বহু কষ্টে সবাইকে থামিয়ে দিয়ে মেয়েটাকে বলল, ‘আপনি আমার ছোট বোনের মত। আমি কি আপনার সাথে কোন নোংরামি করেছি?’
মেয়েটা মাথা নিচু করে বললো, ‘না।’
অনিক তখন বাসের যাত্রীদের উদ্দেশ্য বলল, ‘ভাই আমার অপরাধ কি জানেন? আমার অপরাধ হলো আমি দেখতে কালো। স্মার্ট নই। সাদা চামড়ার কিছু মানুষ মনে করে আমাদের মত কালো মানুষের শরীর থেকে গন্ধ বের হয়। আপনাদের ধারণা পৃথিবীর সমস্ত খারাপ মানুষ কালোই হয়৷’
যে ভদ্রমহিলা বদমাইশ ছেলে বলেছিলো সেই মহিলার কাছে গিয়ে অনিক বলল, ‘আপনি আমার চেহারা দেখেই বুঝে গেলেন আমি বদমাইশ। সত্যি কথাটা হচ্ছে আমি কোনো বদমাইশি করা তো দূরের কথা আজ পর্যন্ত কোনো মেয়ের দিকে খারাপ দৃষ্টিতে তাকাইনি।’
একদিন মার্কেটে কিছু শপিং করতে গিয়েছিল অনিক। ঠিক এমন সময় অনিকের মেসের রুমমেট ফোন দিয়ে বলল, ‘মেসে আসার সময় দোকান থেকে আমার জন্য একটা ফেয়ার এন্ড হ্যান্ডসাম ক্রিম নিয়ে আসিস তো। নিয়ে আসিস আমি তোকে টাকা দিয়ে দিবো।’
রুমমেটের কথা মত কসমেটিকস দোকানে গিয়ে ক্রিমের কথা বলতেই দোকানের ছেলেটা অনিককে দেখে একগাল হাসলো। তারপর হাতে ক্রিমটা দিতে দিতে বলল, ‘শুধু শুধু ভাই টাকা গুলো জলে ফেলবেন। আপনার যে কালার আপনাকে যদি সাত দিনধরে সার্ফএক্সেল পাউডার দিয়ে পানিতে ডুবিয়ে রাখা হয়; তবুও আপনার কালারের কোনও পরিবর্তন আসবেনা।’
দোকানের ছেলেটার কথা শুনে অনিকের মনে হচ্ছিলো ওর গালে ঠাস করে কষে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিতে পারলে ভাল হত। কিন্তু তারই বা কি দোষ। দোষ তো বাবা মায়ের। কারণ উনারা অনিককে জন্ম দিয়েছেন!
ক্রিমটা নিয়ে দোকান থেকে বের হয়েই বিষন্ন মনে মাকে ফোন দেয় অনিক। মা ফোনটা রিসিভ করতেই মাকে বলল, ‘মা, শুনেছি বাবা মা কোনো পাপ করলে তার দায়ভার কিছুটা সন্তানের ওপর এসে পড়ে৷ তোমরা কি কোনো পাপ করেছিলে যার ফল স্বরূপ তোমাদের ঘরে আমার মত একটা কালো ছেলে জন্ম নিলো! ‘
মা কথাগুলো শুনে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘তুই আবার তোর গায়ের রঙ কালো দেখে মন খারাপ করছিস? তুই দেখতে কালো তো কি হয়েছে। তুই আমার কাছে সোনার টুকরো ছেলে। আমার কালো হীরা তুই আমার হীরার টুকরো ছেলে।’
সবাই অনিককে কালো বলে দূরে সরিয়ে রাখলেও মা বাবার দোয়া সবসময় তার সাথেই ছিলো। আর সে জন্যই হয়তো অনিক হঠাৎ একদিন লটারিতে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা পেয়ে যায়। আর কম্পিউটার ও ইলেকট্রনিকসের ব্যবসা শুরু করে সততা ও সুন্দর আচরণের কারণে খুব অল্প দিনেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় সে। আর তারপর থেকেই অনিকের ওপর বাবা মা অত্যাচার করতে থাকে বিয়ের জন্য। অনিকও বিয়ে করবে বলে রাজি হয়েছি তবে একটা শর্ত আছে। বিয়ে করলে কালো কোন মেয়েকেই করবে।
আজ মেয়ে দেখতে যাবে অনিক। মাকে ডেকে বলল, ‘মেয়ে কালো তো?’
মা বললেন, ‘আমি মেয়েকে দেখেছি। গায়ের রঙ কালোই। কিন্তু আজ আমরা দেখতে যাবো বলে মেক-আপ করবে তাই হয়তো সুন্দরী দেখতে লাগবে।’
অনিকরা ড্রয়িং রুমে বসে আছে মেয়ে দেখার জন্য। কিছুক্ষণ পর মেয়ে আসলো। মেয়েকে দেখেই স্তম্ভিত হয়ে গেল অনিক! একটা মেয়ে কি করে এত সুন্দর হতে পারে! ভাল করে মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে মুখে কোন মেকাপ নেই। শুধু চোখে হালকা একটু কাজল আর ঠোটে হালকা লিপস্টিক আছে।
মেয়ে দেখা শেষ করে আড়ালে ডেকে মাকে মৃদু কণ্ঠে অনিক বলল, ‘মা, তুমি না বলেছিলে মেয়ে কালো। কিন্তু মেয়ে তো দেখছি  রূপবতী! শুধু সুন্দরী না
অসম্ভব রকম সুন্দরী। তোমায় আগেই বলেছিলাম আমি, নিজে যেমন ঠিক তেমন মেয়েই বিয়ে করবো।’
অনিকের কথা শুনে মা বললেন, ‘আরে মেয়ে সুন্দরী না। মেকআপ করেছে তো তাই সুন্দরী দেখাচ্ছে।’
অনিক মায়ের হাতটা ধরে বলে, ‘কেন শুধু শুধু মিথ্যা বলছো মা? মেয়ে কোনো মেক-আপ করেনি। সুন্দরী একটা মেয়ে।হয়তো ও চাইবে ওর হাজবেন্ড যেন খুব সুদর্শন হয়। আমার সাথে বিয়ে হলে দেখা যাবে মেয়েটার জীবনটাই নষ্ট হয়ে গেছে। আমার সাথে একটা সেলফি পর্যন্ত তুলতে পারবে না। বন্ধু বান্ধবদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করবে। একসাথে ঘুরতে লাজ্জা পাবে।’
অনিকের কথা শুনে মা কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘তুই কালো হয়েছিস তাই বলে কি একটা সুন্দরী মেয়েকে বিয়ে করতে পারবি না?’
অনিক মাকে জড়িয়ে ধরে বলে,
‘না। আমি তা পারি না মা। একটা সুন্দরী মেয়ে কোন দিনই একটা কালো ছেলেকে বিয়ে করতে চায় না। যদি কখনো বিয়ে করতে রাজি হয় তাহলে ভেবে নিবে হবে মেয়েটা বাবা মায়ের চাপে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে। নয়তো কালো ছেলেটার খুব ভালো ক্যারিয়ার আছে সেজন্য রাজি হয়েছে।’
আজ শুক্রবার। ছুটির দিন। বিকেলে একটু ঘুরতে বের হয়েছে অনিক। সহসা একটা অচেনা নাম্বার থেকে ফোন এলো।  অনিক ফোনটা রিসিভ করতেই অপর প্রান্ত থেকে একটা মেয়ে বলল, ‘আমি মৌসুমী। গত কাল আপনারা যে মেয়েটাকে দেখতে গিয়েছিলেন আমিই সেই মেয়ে।’
অনিক অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘হঠাৎ ফোন দিলেন যে?’
মেয়েটি বলল, ‘আমি আপনার শোরুমের সামনে। দয়া করে একটু আসবেন? আপনার সাথে আমার জরুরী কথা আছে।’
অনিক এগিয়ে গেল। মৌসুমী অনিককে একটা রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেল। পাশাপাশি বসে আছে ওরা। রেস্টুরেন্টের অনেকেই ওদের হা করে দেখছে। অনিক চেয়েছিল রেস্টুরেন্ট নয় অন্য কোথাও বসতে কিন্তু মেয়েটিই অনিককে জোর করে এই রেষ্টুরেন্টে নিয়ে এলো।
কফির মগে চুমুক দিতে দিতে মৌসুমী বলল, ‘সত্যি বলতে কি, আপনাকে আমার প্রথম দেখাতে ভালো লাগেনি। কিন্তু আড়লে যখন আপনি আপনার মায়ের সাথে কথা বলছিলেন আমি আপনার সব কথা শুনে নিয়েছিলাম। তারপর থেকেই আপনাকে প্রচন্ড ভালোবেসে ফেলেছি। কয়েক মূহুর্ত কথা শুনে যে কাউকে ভালোবেসে ফেলা যায় সেটা যদি আমার সাথে না ঘটতো তাহলে আমি হয়তো কখনো বিশ্বাসই করতাম না।’
অনিক মাথা নিচু করে বলল, ‘তার মানে আপনি আমায় করুণা করছেন?’
মেয়েটি কফির মগটা রেখে অনিকের হাতধরে বলল, ‘সব মেয়েরাই টাকা পয়সা বা সুন্দর চেহারা দেখে ভালবাসেনা। কেউ কেউ মন দিয়ে মানুষের ভেতরের মন মানসিকতা অনুভব করে সেই সুন্দর মনের প্রেমে পড়ে যায়। আমায় একটা বার সুযোগ দাও। আমি তোমায় এতটাই ভালোবাসবো যে মেয়েদের সম্পর্কে তোমার ধারণাটাই পাল্টে দিবো।’
বেশ কিছুদিন কেটে গেছে। অনিক শুধু স্বামীই নয় মৌসুমীর খুব ভাল বন্ধু হতে পেরেছে। বিয়ে করলে ছেলেরা স্বামী হয় কিন্তু কয়জন স্ত্রীর ভাল বন্ধু হতে পারে? তার এগিয়ে চলার প্রেরণা হতে পারে? অনিক কিন্তু পেরেছে। অনিকের বন্ধু সুলভ আচরণ আর প্রেরণার কারণেই মৌসুমী আজ ডাক্তার হয়েছে।
একদিন অনিক ডাক্তারের চেম্বারের সামনে বসে আছে।  এমন সময় দেখে ডাক্তারের চেম্বার থেকে অনিকের সেই ছাত্রী আর ওর মা বের হচ্ছে। অনিক আন্টিকে সালাম দিয়ে বলল, ‘আন্টি আমায় চিনতে পেরেছেন? আমি আপনার মেয়েকে তিন দিন  পড়িয়েছিলাম। চার দিনের মাথায় আমায় বের করে দিয়েছিলেন।’
আন্টি তখন বলল, ‘হ্যাঁ। চিনতে পেরেছি।’
এমন সময় চেম্বার থেকে মৌসুমী এসে বলল, ‘সরি, আজ রোগীর খুব চাপ থাকায় দেরি হয়ে গেলো। অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছো তাই না?’
আন্টি বললেন, ‘ডাক্তার ম্যাম কে হন তোমার?’
মৌসুমী আন্টির দিকে চেয়ে বলল, ‘ইনি আমার স্বামী।’
অনিক তখন আন্টিকে বলল, ‘আন্টি, এ হচ্ছে আমার স্ত্রী মৌসুমী।’
আর মৌসুমীকে অনিক বলল, ‘ও হলো রিপা। একসময় আমার ছাত্রী ছিলো।’
মৌসুমী মুচকি হেসে বললো, ‘হ্যাঁ আমি জানি ওর নাম রিপা। আমিও ওর ট্রিটমেন্ট করছি।’
আন্টি অনিক আর ডাক্তার মৌসুমী জাহানের দিকে হা করে তাকিয়ে রইলো।
অনিক মৌসুমীকে নিয়ে হেঁটে যেতে যেতে বলল, ‘রিপার কি হয়েছে?’
মৌসুমী বলল, ‘একজনের সাথে ওর শারিরীক সম্পর্ক ছিলো। পরে প্রেগন্যান্ট হয়ে যায়। কোন ক্লিনিকে যেন এভরসন করিয়েছিল। এখন বিয়ের পর আর বাচ্চা হচ্ছে না।’
অনিক মৌসুমী হাত ধরে হাটছিল। অনিককে লক্ষ্য করে মৌসুমী বলল, ‘সাদা শার্টে তোমায় বেশ লাগছে।’
অনিক মাথা নিচু করে বলল, ‘কাউয়ার মত।’
অনিকের কথা শুনে মৌসুমী হাত ছেড়ে দিয়ে বলল, ‘ যাও তোমার সাথে কথাই বলবোনা। যে ছেলে নিজে নিজেকে সম্মান করতে পারেনা, তাকে মানুষ কিভাবে সম্মান করবে!’
মৌসুমী রাগ করে একা একা হাঁটছে। আর অনিক ওর পিছু পিছু যাচ্ছে।
অনিক এগিয়ে গিয়ে মৌসুমীর হাতটা নিজের হাতে নিয়ে বলে, ‘সরি।’
মৌসুমী এবার অনিকের হাত শক্ত করে ধরে মৃদু হাসি দিয়ে বলল, ‘পাগল একটা।’
কালো কলঙ্কের দাগ হলেও মাঝে মধ্যে কালোকে ছাড়া সাদাকে অসম্পূর্ণ লাগে।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।