• Uncategorized
  • 0

মনের কথায় কৃপা বসু

মানুষের মতো হ্যাংলা, স্বার্থপর ও অভিমানী জীব এই পৃথিবীতে আর একটিও নেই…
বাইরের চোখ দুটোকে শেকলের মধ্যে বেঁধে রাখলেও মানুষের ভেতরের চোখ দুটোকে বাঁধার মতো কোনো শেকল আবিষ্কার হয়নি এখনো পর্যন্ত!…..
মানুষের অন্তরের চোখে ঈর্ষা লুকিয়ে থাকে, হ্যাংলামি লুকিয়ে থাকে, হারিয়ে ফেলার ভয় লুকিয়ে থাকে, একটা মানুষ লুকিয়ে থাকে, যাকে সে সবার আড়ালে বাঁচিয়ে রাখতে চায়….
সেই চোখ চায় ভাত খাওয়ার পর কেউ একজন জলটা, মৌরিটা এগিয়ে দিক একগাল হাসি মুখে।
বিছানার চাদরটা, জানলার পর্দাটা পাল্টে দিক নিয়ম করে, শাড়িটা, জামাটা মেলে দিক রোদে, ইস্ত্রি করে আলমারিতে তুলে রাখুক….
লাইনের উপর দিয়ে বেসামাল হয়ে হাঁটলে কেউ একজন পেছন থেকে এসে হাতটা টেনে বকাবকি করুক।
জ্বর হলে চামচে মেপে ওষুধটা খাইয়ে দিক, রাতের রান্নাটা বানিয়ে দিক।
অফিস থেকে ফিরতে দেরি হলে দরজার বাইরে কেউ একজন টুল পেতে বসুক, ঘনঘন ফোন করুক, টেনশনে ঘেমে নেয়ে একাকার হয়ে যাক….
আলনাটা, পড়ার টেবিলটা, আলমারিটা, জুতোর বাক্সটা গুছিয়ে রাখুক দিনের কোনো একসময়।
হাতে হাতে কেউ একজন চায়ের কাপটা প্লেটটা ধুয়ে দিক, যত্ন করে বাটনা বেটে দিক, সব্জিটা পুড়ে যাচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুক…..
অন্য কাউকে মাঝরাতে কল দিলে ঝগড়া করুক, কান্নাকাটি করুক, কাঁদতে কাঁদতে চোখ লাল করে ফেলুক, সারাদিন গুমরে পড়ে থাকুক….
সপ্তাহে একদিন চিঠি লিখুক গোটা গোটা অক্ষরে, সবাইকে আড়াল করে বইয়ের মলাটে লুকিয়ে রাখুক নীল খাম….
এক সমুদ্র অভিমান বুকে পুষে সারাদিন গাল ফুলিয়ে থাকলে, কেউ একজন এসে দুটো কথা বলুক, নাকটা টিপে দিক ভালো করে, চুল টেনে ঘাড়ের কাছে চুমু খেয়ে রাগ ভাঙাক, আদর করুক ঠোঁটে ঠোঁট ঢুকিয়ে…
ন্যাড়াগাছে ফুল ফোটানোর মতো মানুষের ভেতরের যে শৃঙ্খলমুক্ত চোখ আছে! সেই চোখের ভেতর একটা আকাশ আছে, একটা ঘর আছে, একটা ছাদ আছে, আর নিজের বলার মতো ব্যক্তিগত একটা মানুষ আছে।
ইগোর পাহাড় সরিয়ে কাছের মানুষটা এসে একবার যদি জিগ্যেস করে “কী হয়েছে”….
ড্যাম শিওর মনের ভেতরের শুকনো চোখ বেয়ে দু চার ফোঁটা অভিমান ঝরে যাবে, মানুষ আবার ভালোবাসায় ফিরতে পারবে…
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *