স্বপ্নের ফেরিওয়ালা এসেছিলো স্বপ্ন ফেরি করতে। হ্যা ফেরিওয়ালাই বটেন উনি। কোথাও গিয়ে যুদ্ধের অস্ত্র ফেরি করেন, কোথাও বিদেশী পুঁজির ফেরি করেন আবার কোথাও উনি কূটনীতির বার্তা ফেরি করেন। তাই পৃথিবীর সব থেকে উন্নত দেশের রাষ্ট্রপতি হয়েও তিনি একজন ফেরিওয়ালাই। আশা করি এতোক্ষনে সবাই উপলব্ধি করতে পেরেছে আমরা কার কথা বলতে চাইছি, হ্যা আমরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম সম্পর্কেই বলছি। একবিংশ শতকের ভারতবর্ষে আগত সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, যার জন্য আমাদের দেশীয় সরকার বিশ্বের চোখে কংক্রিটের ঠুলি পরিয়ে ছিল আহমেদাবাদের রাস্তায় শুধু মাত্র ‘মেক ইন ইন্ডিয়ার’ গরীবি ঢাকতে। গরিবের চোখে, বেকারের চোখে হাজার কোটির পুঁজির যোগান দিয়ে রুটি রুজির সংস্থানের স্বপ্ন দেখানো ফেরিওয়ালা আজ নিজের দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে, আর মাঝে মাঝে এতো কোটি বেকারের দেশ কে দেখে নেবার হুমকি দিচ্ছে। সেদিন যে বেকার কর্মের স্বপ্ন, রুটির স্বপ্ন, রুজির স্বপ্ন দেখেছিলো আজ সে শুধুই ব্যর্থতা আর বেকারত্বের দুঃস্বপ্ন দেখতে দেখতে স্বপ্ন দেখায় ছেড়ে দিয়েছে।মোদীজির ভারতবর্ষের অর্থনৈতিক অবস্থা এই এতো কিছুর পরও একটা কালোদিন দেখবে, শুধু ভারতীয় অর্থনীতি নয় বিশ্ব অর্থনীতি ও দেখবে আর্থিক মহামন্দা। একবিংশ শতাব্দী তে প্রথম বিশ্বের উন্নত আর উন্নয়নশীল দেশ গুলো একসাথে দেখবে অর্থনৈতিক মন্দা, অর্থনৈতিক মহামারী। ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক আউটলুক’ এর সমীক্ষা বলছে 2020 সালের মোট বৃদ্ধি 6.3% থেকে কমে 3% এ গিয়ে ঠেকবে। বিশ্বের
মোট উৎপাদন বা গ্রস ওয়ার্ল্ডস প্রোডাক্ট এর 35.79% শেয়ার প্রদান করে থাকে আমাদের এশিয়া মহাদেশ, তার ভেতর আমাদের দেশ জি.ডাব্লিউ. পি তে শেয়ার করে 3.28%, এই লক ডাউন পরিস্থিতিতে যার উৎপাদন এখন শুন্য বললেই চলে। ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক আউটলুক’ এর সমীক্ষা আরো জানাচ্ছে যে বিশ্বের জি. ডাব্লিউ.পি-র পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমান এই করোনা মহামারীর কারণে 2020-21 ও 2021-22 সালেই 9 লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়াবে। আর্থিক বিপর্যয় যে কিভাবে নেমে আসবে আর তার ভয়াবহতা যে কি হবে তা দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ট বন্ধু ট্রাম্প সাহেবের দেশের অবস্থা এই মহামারীতে কি তা আজকাল আমরা সোশ্যাল মিডিয়া আর টেলিভিসন এর মাধ্যমে জানতেই পারি তাই তিনি আজ আর তার ফেরির ঝুড়ি নিয়ে বিশ্ব ভ্রমণে বেরোন না, রাষ্ট্র তার দায়িত্ব ভার সঠিক ভাবে গ্রহণ না করলে যে এই মহামারী কি ভয়াবহ হতে পারে তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ ট্রাম্প বণিকের দেশ মার্কিন মুলুক। একদল অর্থনৈতিক গবেষক জানাচ্ছেন আমাদের দেশেই প্রতিদিন লক ডাউন এর কারণে 35 হাজার কোটি টাকা জি.ডি.পি নষ্ট হচ্ছে। আইটি সেক্টর সহ প্রতিটি সংগঠিত ক্ষেত্রেই প্রায় শ্রমিক ছাঁটাই হচ্ছে। দুনিয়ার করে খাওয়া মানুষের 81% অর্থাৎ প্রায় 270 কোটি শ্রমিক কর্মচারী ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে দাবি করছেন আন্তর্জাতিক শ্রম ও শ্রমিক সংগঠনের তরফে। তাই রাষ্ট্র/রাজ্য সরকার গুলো এই অসময়ে পরিকল্পনা মাফিক ভাবে এই বিশ্ব কে যদি কবির মতোই শ্রমিকের বাসযোগ্য করে তুলতে পারে তবেই হবে শ্রমের সঠিক মূল্যায়ন নচেৎ করোনা মহামারীর পর ক্ষুধা আর অর্থনৈতিক মহামারী আসন্ন।