• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (পর্ব – ৯)

সোনা ধানের সিঁড়ি

২২

দেশের বাড়ি ধনিয়াখালিতে বাবার সামান্য এক টুকরো জমি ছিল। জমিটুকু আজও আছে। কিন্তু আমি কোনোদিনও জমির ধারে যাই নি। মা বলত, চিনে রাখ। আশ্চর্যের ব্যাপার, বাবা কোনোদিন জমি নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলে নি। জমির সঙ্গে “আমার” শব্দটা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে —– এটা আমার ধারণা। জমিকে “আমার” না বললে যেন জমির সম্মান থাকে না। এইখানেই আমার আদর্শের সঙ্গে খুব জোরে একটা ধাক্কা লাগে। আামি মাটিকে “আমাদের” বলতে চাই।

২৩

যখন ছাত্র ছিলাম তখন রবিবার ছুটির দিন থাকত। ছুটি মানে স্কুল যেতে হতো না। বাকি সব কাজই থাকত। কেন জানি না, ছোটবেলা থেকেই “ছুটি” শব্দটার প্রতি আমি একটা অন্য টান অনুভব করতাম। তাই রবিবারের হাতে তাকে দিয়ে আমি নিশ্চিন্ত থাকতে পারতাম না। আর এখন তো কথাই নেই, গত প্রায় ত্রিশ বছর শনিবার আর রবিবার আমার সবচেয়ে বেশি পড়ানো থাকে। তাই খেয়ালই থাকে না অন্যান্য বারের সঙ্গে রবিবারের তফাৎ। ছুটি মানে আমি কখনও এটা বুঝতে চাই নি —– কাজ থেকে ছুটি। কারণ কাজকে আমি কোনোকালেই ভয় পাই নি। সেই কোন কাল থেকে ছুটি মানে আমার কাছে নিজের মতো করে নিজের রাজ্যে উড়ে যাওয়া। কাজ থাকা না থাকার সঙ্গে এই উড়ে যাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। শুধু তাই নয়, কাজ না থাকলে এই উড়ে যাওয়াটা যে আরও মধুর হয়ে উঠত তা কিন্তু নয়। কখনও আকাশ দেখে, কখনও রোদ দেখে, কখনও ট্রেনে করে কাজের জন্যে বেরিয়েও চারপাশের গাছপালা মাঠ দেখে ছুটির আবহাওয়ায় ভেসে গেছি। সবসময় যে উড়ে যেতে পেরেছি তা কিন্তু নয়। বেশিরভাগ সময়ই পারি নি কিন্তু সবকিছুর মধ্যে থেকেও ছুটির স্পর্শ থেকে দূরে চলে যাই নি।

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।