জন্ম- ১৯৬৭, বরানগর।
বর্তমানে দার্জিলিং জেলার মিরিক মহকুমার উপশাসক ও উপসমাহর্তা পদে আসীন।
চাকরীসূত্রে ও দৈনন্দিন কাজের অভিজ্ঞতায় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের সমস্যা সমাধানে তাঁর লেখনী সোচ্চার।
মহা প্রাচীন ভারতের কন্যাজন্ম ( ১ – ৭)
মহা প্রাচীন ভারতের কন্যা জন্ম ১
গর্ভবতী অবস্থায় নিজের নারীকে মহাপ্রাচীন ভারতীয় পুরুষ কিভাবে দূর ছাই করেছেন, সীতা ও শকুন্তলার বেলা আমরা সেটি নজর করেছি। পুত্র সন্তানকে চর্মচক্ষে দেখার পর ভারতীয় পুরুষের বোধোদয় হয়েছে। সন্তানসহ নারীর পুনর্বাসন হয়েছে। কিন্তু সন্তান যদি কন্যা হত তাহলে কি হতে পারত?
খুব চমৎকার উদাহরণ এই দুই মা নিজেরাই। রাজা জনক যজ্ঞভূমি কর্ষণ করতে করতে সীতাকে কুড়িয়ে পান। লাঙলের অগ্রভাগকে সে সময় “সীতা” বলা হত। সেই কারণে কুড়িয়ে পাওয়া মেয়ের নাম হল “সীতা”। নাম রাখার জন্য জনক আর বেশি মাথা ঘামানোর দরকার বোধ করেন নি। সীতার রক্ত মাংসের মা কে ছিলেন, তার খোঁজ আমার জানা নেই। কিন্তু শকুন্তলা ছিলেন অপ্সরী মেনকার পরিত্যক্ত কন্যা সন্তান। বাবার খোঁজ জানা নেই। মেনকাকে গতর খাটিয়ে খেতে হত। মেয়ে কোলে বসে থাকার সুবিধে তার ছিল না। ছোট্ট ফুটফুটে মেয়েকে পাখিরা আগলে রেখেছিল। পাখিকে ভাল কথায় বলে “শকুন্ত”। মহর্ষি কন্ব এর কাছে আশ্রমিক শিশুরা ওই বাচ্চা কুড়িয়ে পেলে এনে দিল। পাখিকে শকুন্ত বলে তাই মহর্ষি কন্ব ওই বাচ্চার নাম দিলেন “শকুন্তলা”। কে আর বেশি কষ্ট করে মেয়ের নাম রাখার জন্য?
মহা প্রাচীন ভারতের কন্যা জন্ম ২
সীতা ও শকুন্তলা তাঁদের কন্যাজন্ম এর সূচনা পর্বে কি রকম পরিবেশ পেয়েছিলেন, সেটা বলেছি। এবার বলব দ্রৌপদীর কথা। দ্রৌপদীর জন্ম যজ্ঞের অগ্নিকুণ্ড হতে, এবং পূর্ণযৌবনা আকারে। এই ভাবে কোনো রক্তমাংসের মানুষ যে পূর্ণগঠিত শরীরে জন্মাতে পারেন, কোন বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব তা স্বীকার করবে না। তাহলে দ্রৌপদী এলেন কি করে?
যাই হোক প্রগাঢ় রহস্যে ঢাকা আছে সে গল্প। তো সে মেয়ে স্বয়ংবরা হল। মানে নিজেই নিজের বর পছন্দ করবে। বড় বড় রাজা আর বড় বড় বীরেরা এল। যুধিষ্ঠিরেরা পাঁচভাই ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে সেই স্বয়ংবর সভায় গেলেন। কেবল কৃষ্ণ তাঁদের চিনতে পেরেছিলেন, অন্য কেউ পারেন নি। তো শেষমেশ অর্জুন জয় করে আনলেন কৃষ্ণা দ্রৌপদীকে।
বাপের বাড়ির তরফে ব্রাহ্মণবেশী পাঁচ ভাইয়ের প্রকৃত পরিচয় জানার চেষ্টা হয়েছিল। তারা আসলে পঞ্চপাণ্ডব এটা জানা যেতে দ্রুপদ নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন।
কিন্তু ওই পাঁচ ভাইয়ের সাথে দ্রৌপদীর বিয়ের ব্যাপারে দ্রুপদ রা কাড়েন নি। কিছুই কি বলার ছিল না মেয়ের বাপের?
যে অর্জুনের বীরত্বের কারণে দ্রৌপদীর পাণ্ডব কুলের বধূ হওয়া, সেই অর্জুনকেই দূরে সরিয়ে দিয়েছিলেন বড় ভাই যুধিষ্ঠির। অর্জুন দূরে গিয়ে অন্য অন্য নারীতে আসক্ত হয়েছেন। সুভদ্রা, চিত্রাঙ্গদা, উলূপী। তাঁদের গর্ভে একেকটি করে পুত্রও এনেছেন অর্জুন। অভিমন্যু, বভ্রুবাহন, ইরাবান।
দ্রৌপদীর কি বুক ফেটে যায় নি? তাঁর কন্যাজন্মকে তাঁর পিতৃপক্ষ কতদূর শ্রদ্ধা করেছে?
মহা প্রাচীন ভারতের কন্যাজন্ম ৩
মেয়ে জন্ম? সে তো পরের বাড়ি যাবার জন্য। মেয়ে হলে অনেক বাপ আগে ভাগেই কারো হাতে তাকে তুলে দিতেন। তারপর সেই লোকই অভিভাবক হয়ে মেয়ের যা হোক ব্যবস্থা করতো। আমার শান্তার কথা মনে পড়ে। কোন শান্তা? না, দশরথের মেয়ে শান্তা। কার গর্ভে জন্মেছিলেন শান্তা? তা জানি না, তবে দশরথের প্রধানা তিন রাণী অপুত্রক ছিলেন। যা হোক, শান্তাকে দশরথ তুলে দিয়ে ছিলেন একজন রাজা লোমপাদের হাতে। লোমপাদ রাজা শান্তাকে মানুষ করেন ও বিভাণ্ডক মুনির পুত্র ঋষ্যশৃঙ্গের সাথে বিয়ে দেন।
অনেক পরে রাজার পুত্রকামনায় পুত্রেষ্টি যজ্ঞের পরিচালনার দায়িত্ব নিতে আসবেন সেই ঋষি জামাই ঋষ্যশৃঙ্গ। মেয়ের আসা হয়েছিল কি না জানি না।।
জামাই বাবাজির রাঁধা চরু পায়েস খেয়ে তিন তিনটে রাণী গর্ভবতী হলেন।
মহা প্রাচীন ভারতের কন্যাজন্ম ৪
পুড়লো মেয়ে উড়লো ছাই, তবে মেয়ের গুণ গাই। এই কথা প্রবাদ হিসেবে যে দেশে চলে, সেখানে বাস্তবে মেয়েরা যে সুখে নেই, তা বোঝাই যায়। আমাদের অহল্যার কথাই ধরা যাক না কেন। দেহে মনে ভারি নিষ্পাপ মেয়ে অহল্যা। আসলে অহল্যা মানেই তাই। যার কোথাও এতটুকু কলঙ্ক নেই। এই অহল্যা ছিলেন ব্রহ্মার মানসকন্যা। তো ফুটফুটে মেয়েটির মা নেই। ব্রহ্মার তো অঢেল কাজ। কচি মেয়েটাকে দেখে কে?
বিশ্বস্ত লোক পাওয়া গেল গৌতম মুনি। তিনিই দায়িত্ব নিয়ে অহল্যাকে বড়ো করতে লাগলেন। ক্রমে পরমা সুন্দরী হয়ে উঠলেন অহল্যা। মেয়ে বড়ো হলে তার তো কিছু ব্যবস্থা করতে হয়। তাকে পাত্রস্থ করতে হয়। তাই অহল্যার যথার্থ পিতা ব্রহ্মার কাছেই অহল্যাকে পৌঁছে দিতে চললেন গৌতম। ব্রহ্মা তো অহল্যাকে দেখে খুব খুশি। সেদিনের সেই একরত্তি মেয়ে দ্যাখো সে কেমন ডাগর ডোগরটি হয়েছে দ্যাখো। গৌতমের উপর খুব তুষ্ট হলেন ব্রহ্মা। তাঁর মেয়ের কোনো ক্ষতি না করেই গৌতম তাঁকে এত বড়টি করেছেন। ব্রহ্মা গৌতমের কাছেই কন্যাদান করলেন।
ভাবুন, যে গৌতম অহল্যাকে এতটুকু বেলা থেকে দায়িত্ব নিয়ে দেখাশুনা করলেন, তাঁর হাতেই কন্যা অর্পণ করে ব্রহ্মার ঠিক হয়ে ছিল কি না।
তারপর একটি করুণ কাহিনী।
মুনি গৌতম অহল্যাকে আশ্রমে রেখে নিজে গেলেন তীর্থস্নানে। এদিকে অহল্যার প্রতি নজর ছিল দেবরাজ ইন্দ্রের। এমনিতেই ইন্দ্র খুব কামুক টাইপের লোক। আর গৌতমের অনুপস্থিতি তো ইন্দ্রের পক্ষে সোনায় সোহাগা। ইন্দ্র জানেন অহল্যা শক্ত ধাতুর মেয়ে। ইন্দ্র যতই দেবরাজ হোন, অহল্যা তাঁকে পাত্তা দেবেন না। তাই বুদ্ধি করে ইন্দ্র ছদ্মবেশ ধরলেন। হুবহু গৌতম মুনি সেজে আশ্রমে গিয়ে অহল্যাকে যৌনসঙ্গমে ডাক দিলেন। স্বামী তাঁর কাম চরিতার্থ করবেন শুনে অহল্যা দৌড়ে এলেন। ছদ্মবেশী ইন্দ্র তাকে জাপটে ধরলেন।
অহল্যার মনে পাপ নেই। তাই সে ভাবতেও পারেনি যে দেবতাদের রাজা ইন্দ্র ছদ্মবেশ ধারণ করে তাকে সঙ্গম করতে এসেছেন।
এদিকে তীর্থস্নান করতে করতে গৌতম সব টের পেয়ে গেলেন। গৌতম হাতেনাতে ধরলেন সঙ্গমরত ইন্দ্রকে। তার পর মুনির ক্রোধ বলে কথা। ইন্দ্রের অতি কামুকতার জন্য শাস্তি ঠিক হলো যে সারা গায়ে স্ত্রী যোনিচিহ্ন প্রকাশ পাবে। আর অহল্যাকে শাপ দিয়ে পাথর বানিয়ে দিলেন তিনি।
ইন্দ্র কেঁদে কেটে নিজের শাস্তি লাঘব করালেন। সারা গায়ে হাজার হাজার যোনিচিহ্ন গুলি হয়ে গেল চোখ। ইন্দ্রের নাম হলো সহস্রলোচন। কিন্তু মেয়ের কোনো রেহাই হলো না। তাকে পাথর হয়ে থাকতে হল বছরের পর বছর। অথচ, অহল্যা কাউকে প্রতারণা করে নি। সে সরল মনে স্বামী ভেবে ছদ্মবেশী দেবতার কাম চরিতার্থ করতে বাধ্য হয়েছে। তার আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ হল না।
মেয়েজন্মের প্রতি প্রাচীন ভারতীয়দের কি অসামান্য শ্রদ্ধা!
মহা প্রাচীন ভারতের কন্যাজন্ম ৫
সেই মেয়েটির কথা বলি। জন্মের পর পরই যাকে বলি হতে হল জিঘাংসার। দৈবকী ও বসুদেবের অষ্টমগর্ভের সন্তান জন্মাবেন এবং সেই সন্তান কংসকে বধ করবেন। এটা কংসকে জানানো হয়েছিল দৈববাণীর মাধ্যমে। এই শুনে কংস আর স্থির থাকে কি করে। সে তার বোন দৈবকী আর তার বর বসুদেবকে ফাটকে পুরে রাখল। জেলের ভিতর দৈবকীর একটা করে বাচ্চা হয় আর রাষ্ট্রীয় স্বার্থে সেই বাচ্চাকে মেরে ফেলা হয়। এমনি করে দৈবকী বসুদেবের সাত সাতটি বাচ্চা মারা হল। এবার অষ্টম গর্ভ। কংস এবার আরো কড়া। প্রহরীর দল সঙ্গিন উঁচিয়ে ঘুরছে। কিন্তু বাচ্চা হতে সবাই ঘুমিয়ে পড়ল। কারাগারের গেটের ওই যে ঢাউস তালা, বসুদেবের স্রেফ হাত বুলানোতে খুলে গেল। বসুদেব চললেন অষ্টমগর্ভের সন্তানকে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দিতে। বাইরে তুমুল বৃষ্টি। ঘন ঘন ঝন ঝন বজর নিপাত। এক মহাসর্প বসুদেবের মাথায় ছাতার মতোন বড় ফণাটি দিয়ে বৃষ্টি বাজ বিজুলি আড়াল করতে এগিয়ে এল। সব প্রি প্রোগ্রামড। ভগবান জন্মাচ্ছেন বলে কথা। অঝোরঝরণ বৃষ্টির মধ্যেই বসুদেব হেঁটে চলেছেন। যাবেন গোকুলে, নন্দ গোয়ালার বাড়ি। ঘোষের পো’র বাচ্চা কাচ্চা নেই। এদিকে তার বউ যশোদার খুব বাচ্চার শখ। ওদের কাছে ভগবান সুখেই থাকবেন। এদিকে কংস কারাগারে রক্ষীরা ঘুমিয়ে পড়েছিল বলে তো চিরকাল ঘুমোবে না। এক সময় না এক সময় জাগবে। জেগে উঠেই বলবে বাচ্চা লাও। লাও তো বটে, ভগবানের ডামি যোগায় কে?
একটা মেয়ে বাচ্চা ম্যানেজ করা গেল। ছেলে হলে কেউ প্রাণে ধরে দিতে চাইবে?
তো সেই মেয়ে বাচ্চাকেই কাঁপতে কাঁপতে কংসের হাতে তুলে দেওয়া। পুরো স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী সব চলছে। কংস তুলে আছাড় মারল মেয়ে বাচ্চাটাকেই।
জানি না, মেয়েটার গর্ভধারিণী কে? জন্ম দিতে কষ্ট হয়েছিল কি না।
মহা প্রাচীন ভারতের কন্যাজন্ম ৬
ভারতের কন্যাজন্মের গল্প বলব, আর রাধিকা সুন্দরীর কথা বলব না?
সে যে ভারি সুন্দর মেয়ে। সংসারের কাজে যেমন পটু, তেমনি রোজগেরে মেয়ে। সেই ভোরে উঠে দুধ দুয়ে তা থেকে ননী বানিয়ে রাধা যায় হাটে। হাটে যেতে নৌকা পেরোও রে, নৌকার ঘাটে ইজারাদার বসে আছে। নদীর ঘাট লিজ নিয়ে রেখেছে সে। সরকারকে একেবারে একথোক টাকা দিয়ে রেখেছে সে। এবার দৈনিক যাত্রীদের থেকে যে টাকা পাবে, সেটা তার। এমন নিখাদ ব্যবসা দার লোককে দানী কেন যে বলে, কে জানে বাপু। দানীর আবার মেয়ে শরীরের উঁচু নিচু জায়গা গুলোর উপরই বেশি নজর। কিন্তু ওকে চটানো যায় না। চটালে নৌকোয় নেবে না। ব্যস, তোমার ব্যবসা গেল। আর বাড়িতে পয়সা না দিতে পারলে সবার মুখ তোলো হাঁড়ি হয়ে থাকবে। যা একটা শাশুড়ি ননদ জুটি আছে না রাধার, শাশুড়ি জটিলা আর ননদ কুটিলা। নামের সাথে একেবারে মিলিয়ে তাদের আচার ব্যবহার। এত খাটে রাধা সেই কোন ভোর থাকতে উঠে, তবু তাকেই সন্দেহ।
সব সহ্য হয়ে যেত। যদি আয়ান ঘোষ ঠিক হত। সে যে তৃতীয়া প্রকৃতি। সাধারণ পুরুষ যেমন নারী শরীরের প্রতি লুব্ধ থাকে, ওদের অমন নয়। মেয়েদের ওরা তাকিয়েই দেখতে চায় না। মনের গঠনটাই পুরো অন্য রকম।
আচ্ছা, বিয়ের আগে কি রাধার বাপের বাড়ির লোকের উচিত ছিল না যে কার সাথে বিয়ে দিচ্ছি মেয়েটার? যে আদৌ পুরুষ নয়, তেমন তৃতীয়া প্রকৃতির মানুষের সাথে বিয়ে দিয়ে রাধার প্রতি খুব সুবিচার হয়েছিল?
মহা প্রাচীন ভারতের কন্যা জন্ম ৭
এবার আমি সেই মেয়েটির গল্প বলব, যে ভাবত সে প্রেম করে। সে নিজে অবশ্য রাজার মেয়ে। আর তার পছন্দের পুরুষটিও একজন রাজা। রাজার মেয়ের দিন কাটে শুকপাখিকে বেদানা খাইয়ে, ময়ূরের পায়ে রূপোর ঘুঙুর বেঁধে, আর রূপটান করে। ক্ষণে ক্ষণে সোনার দর্পণে নিজের মুখটি দেখে।
তো, যা ভাবা যায়, তা তো সর্বদা হয় না। রাজার উপর মহারাজা থাকে, তার উপর সম্রাট থাকে। মেয়ের রূপের খ্যাতি তাদের কানেও পৌঁছলো। এমন রূপবতী মেয়েকে আমার ভাইয়ের জন্যে চাই। চাই তো চাই, কাকুতি মিনতি শোনার সময় নাই।
কুরুবংশের সুসন্তান মহাবল ভীষ্ম কেড়ে নিয়ে চললেন তাকে, আর তার দুই বোনকে।
আমি কাশীরাজের কন্যাত্রয় অম্বা, অম্বিকা আর অম্বালিকার কথা বলছি। বিচিত্রবীর্যের বীর্যধারণ করিয়ে বংশ রক্ষার তাগিদে মহা প্রতাপশালী ভীষ্ম তাঁদের টেনে আনলেন। ঘরের ভেতরে মেয়ে তিনটিকে পুরে তবে ভীষ্ম হাঁফ ছাড়লেন।
অম্বা বড়ো মেয়েটি। সে বললো, আমায় ছেড়ে দিন, আমি যে একজনকে ভালবাসি। মরে গেলেও এ শরীর যে আমি আর কাউকে দিতে পারব না।
নাক সিঁটকে ভীষ্ম বললেন, ভালবাসিস? তা আগে বলতে হয়! অম্বা বলে, বলবার সময় দিলেন কই আপনি? গরুটাকেও লোকে এভাবে টানতে টানতে আনে না। আপনি কি মানুষ? অম্বা তখন প্রেমের বীর্যে অশঙ্কিনী।
ভীষ্ম লজ্জা পেলেন। একটা গলাখাঁকারী দিয়ে বললেন, তবে তো দেখছি খুব ভুল হয়ে গিয়েছে। এই, কে আছিস, অম্বা মেয়েটাকে বাড়িতে রেখে আয়।
কিন্তু শাল্ব আর অম্বাকে নিলেন না। পর পুরুষ যাকে ছুঁয়েছে, কোন ভদ্রলোকের বাচ্চা তেমন মেয়েকে বিয়ে করে?
অম্বা জানতেন না, গড় ভারতীয় পুরুষের ভালবাসার আসল চেহারাটা কেমন! তিনি শাল্বের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে আত্মহত্যা করলেন!