• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকা -তে সৌরভ বর্ধন (পর্ব – ২০)

কবিতায় আমি কলার তুলতে চাই  (অন্তিম পর্ব)

লোকটা এঘরেই ঈশ্বর চিন্তা করে, সাধনা ধ্যান ইত্যাদি প্রমুখ টুকিটাকি ক্রিয়াকলাপের কথা ভাবে, আবার এ ঘরেই হস্তমৈথুন আবার এঘরেই মনীষীদের ছবি মূর্তি প্রভৃতি গোছানো ; ছাত্ররা পড়তে এসে সকালে যেখানে বসে সেখানে শুয়েশুয়ে গতরাতে কত কী না গোপন রতির কথা ভেবেছে সে লোক। অতিথিরা গরমকালে এলে এ ঘরে পা দিয়েই সমস্বরে বলে আঃ বেশ ঠান্ডা তো! বর্ষাকালে কেউ আসে না কেন তাহলে? ঘরটি তো খুব অদ্ভুত, শরৎকালেও এখানে কাশফুল ফোটে না, আর হেমন্তের কথা যখন উঠলো তখন জানিয়ে রাখি হিম বলতে এখানে আমার পায়ের শব্দ এবং পায়ের কথা ওঠাতে বলে রাখি, কোনো কবি বা কোনো প্রেমিকা আমার এঘরে পা দ্যায়নি আজও। উল্লেখ্য, সিন্থেটিক মোজা পরলে আমার পায়ে ভীষণ গন্ধ হয় ও প্রবল তেষ্টায় শিশ্নগামী হয় হাত আর চোখ থেকে দৃশ্যটি হাতছাড়া হওয়ার ভয় চেপে বসে আমার স্কন্ধে। যে গন্ধে লেখা হয়নি আতপ মানে চাল সে তো সবার জানার কথা নাকি বার্তা পৌঁছে দিতে হবে কাউকে! কেননা কাঁঠালের মুচি বের হলে আমরা আনন্দ করি, নাজনে গাছে সবুজ সূচি বেরোলেও, আমরা কবে থেকে কদবেল নামিয়ে রেখেছি টব থেকে, সবথেকে মজার ব্যাপার হলো এসব কথা আমি ঝুলন্ত প্রেমিকাকে কখনও বলতে পারিনি, শুধু তাই নয়, এসব না লিখে রাখলে রাখবো কোথায়? ছবি তো স্থায়ী নয়, আমার ফোন থেকে দু’হাজার ছবি ডিলিট হয়ে গ্যালো, তারপরও উচিত হবে না আমার থেকে খাতা কেড়ে নেওয়া; তথাপি অনেকদিন ধরেই ভাবছি এই ঘরটা সমন্ধে আমার কিছু লেখা দরকার, কেননা লেখার কাগজ কলম ফোন এ ঘরেই থাকে, কেননা লেখার মানুষটাও এ ঘরেই ঝিম মেরে থাকে দুপুরে, ঘুমায় রাত্রিতে। তখনই মনে পড়ে বই ও আয়ু নিয়ে করা আমার শেষ ভবিষ্যৎবাণীটা , দিন ফুরোচ্ছে বই বাড়ছে, শেষ অবধি কে জেতে দেখে যাবো —-
সেদিন বাঘমুণ্ডী পাহাড়ের নীচের ছবিতে কে যেন বলল ফোঁসবুকে পাদ ও দেশ হলো সমতল ভূমির উচ্চস্থল কিন্তু আমি বুঝিয়ে দিলাম – একটা আলমারির উপরিতলে যখন তখন ডাস্টের অভিযোগ উঠতে পারে, তাই বলে আমি আর বই কিনবো না তা হতে পারে না ; যদি পারতো তাহলে আয়ু কমে যেত আমার, আমি তো খরিদ্দার হয়ে দামাদামি করবই, ভবিষ্যৎবাণীও করেছি যে এতসব বই যতদিন না পড়ে শেষ করছি ততদিন আমার মরণ নেই অর্থাৎ চালাকি করে বাড়িয়ে নিয়েছি সময়, মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে, মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই ; স্বয়ং প্রকৃতিও পারেনি এইভাবে কলার তুলতে ঠিক যেভাবে আমি চেয়েছি কবিতায়! যদিও একজন বলল কলার তোলা লেখা নাকি সাধারণত মৃত হয় তবুও খড়গহস্ত কে বলতে পারে, ভদ্রতার লক্ষণগুলির মধ্যে আপডেট হওয়ার আচরণ কম এবং উৎশৃঙ্খলতাও জন্ম দিতে পারে না কোনো প্রবীনবরণ! যাইহোক ফুলের পাশ দিয়ে যেসব নক্সাকাটা আবহ উঠে গ্যাছে, নেমে গ্যাছে পিউবিক হেয়ার যেমন, তাদেরকে এই কাব্যির মাঝে আমরা দেবীসূক্ত বলবো আর অন্যত্র চুল ছিঁড়ে আঁটি বাঁধার অনুকরণে রিপ্লাই, বছরের শেষ থেকেই শুরু করতে হবে সমীকরণ যাতে করে আলনার নীচের দিকে যত পুরনো জামাটামা থাকে সেইসব দিয়ে ফোর-আর পদ্ধতিতে নতুন চক্রীকরণ করা যায়। এইখানে সমীপে শব্দটার অনুপযুক্ত ব্যবহার করার দরকার নেই, সেটা আমি পোস্টমডার্ন কালখণ্ডের পথপ্রদর্শকের হাতে ছাড়লাম সন্ত্রস্ত পরাভয়ে মুহূর্তে চিনিলাম আপনার বিবমিষা; বারবার এরকমই হয় আমার সাথে, সারাটাদিন ফাঁকা ফাঁকা কিছু লেখার জন্য আর খুব অল্পই লিখতে পারি সেইদিন খুব
অল্প। শেষে বিরক্ত অনুরক্ত বিভক্ত রক্তাক্ত হয়ে যাই লেখার থেকে। ভেবেছিলাম এখানেই শেষ করবো, কিন্তু গুষ্ঠিকে তুষ্টি করা আমার পুজো নয় সুতরাং এসব অসংলগ্ন বাক্যবল সুগন্ধমুক্তি ফলাতেই থাকবে বলাতে মনে পড়ে গ্যালো আমি শুরুর দিকে তখন চেয়েছিলাম এই নামে লেখালিখি করবো; তারপর দেখলাম এর থেকে পচা নাম আর হয় না, তাই ঠিক করলাম নতুন বাড়ির নাম দেবো, মকশো করতে করতে বেরিয়ে যাব ঘর থেকে, কেননা শব্দের অভাব আমাকে থামিয়ে দিচ্ছে গতিশীলতায়, বাইরে থেকে প্রযুক্ত একটা কারণ দরকার এখন যে বারণ করবে না উৎপটাং হস্ত চালনে। তবে বিষয়ের অভাব আমাকে দমিয়ে দিচ্ছে অথবা দাবিয়ে রাখছে বললে প্রশ্ন জাগে (হাঁ-করা ইমোজি) যে, বিষয় আমাকে ভাবালো কবে আবার! আমি তো ফুল মানে ফুল পাখি মানে পাখি আতর মানে হা হা হা…

সমাপ্ত

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।