রাগ বেহাগ ।
যে রাগ গাইবার সময় রাত্রি দ্বিতীয় প্রহর অর্থাৎ সময় রূপে রাত্রি ৯টা হতে ১২টা ।
বেহাগ রাগের জাতি ঔড়ব – সম্পূর্ণ ।
এটিকে বিলাবল ঠাটাশ্রয়ী রাগ বলা যায়।
যে রাগে লিখে যাওয়া অসংখ্য বন্দিশ আমাদের মুগ্ধ করে তাদের কথার অর্থের গাঢ়ত্বে এবং এর সুর লহরী তে।
এই রাগের তৈরী বারান্দায় দাঁড়িয়ে কতো প্রেমিকা অপেক্ষা করেছে তার প্রেমিকের আগমনের ।
পুরাতনী কতো গান সৃষ্টি হয়েছে এই রাগে।
“ছিপ জারে চাঁদনী রাত
মোরে পিয়া আজহুঁ নহি আয়ে”
মনের সাথে মন যদি সুতো দিয়ে বাঁধা যেতে পারতো তাহলে তো কতো সম্পর্ক টিকে যেতো তাদের মহিমা অক্ষুণ্ণ রেখে।কিন্তু তারা যে এমনই, একটুতে যে তাদের অভিমানের ঝড় ওঠে ।
ভালোলাগা আর ভালোবাসার মধ্যের যে এক নিগূঢ় পার্থক্য তা বুঝতে না পেরে তারা ভেসে চলে তাদের আপন মনে তৈরি করে ফেলা ফল্গু ধারায়।
হিন্দুস্থানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীত তার ভান্ডারে এমন সব রাগ কে লুকিয়ে রেখেছেন যাদের উন্মোচন ঘটে কেবল মানুষের মনের বিভিন্ন সময়ে হয়ে থাকা বিভিন্ন ঘটনাবলীর খেলায়।
যেমন কোনো রাগ কাঁদিয়ে দেয় দুঃখে, তেমনই কেউবা মনের মধ্যে অকাল বসন্তের সৃষ্টি করে ফুল ফোটায়।কেউ বা আশীর্বাদ দেয়ে কাছে আসার কেউ বা অভিশাপ দেয় ‘তোমাকে কাছে আসতে হবেই’ এই বলে।
কেবল কন্ঠে নয় সেতার, বীণা আরও কতো বাদ্যযন্ত্রের সুর লহরী তে এক একটি রাগ তার নিজের রং চারিদিকে ছড়িয়ে দিয়ে মানুষের মনে জায়গা করে নেয়।
বেহাগ রাগটিও তো তেমনই
তার আরোহনে অবরোহণে ন্যাসস্বর ‘গা’ এবং ‘পা’ এমন এক শান্ত অথচ গম্ভীর সুর মূর্ছনা সৃষ্টি করে যা শ্রোতার মনে জাগিয়ে তোলে এক আকুলতা ।সে আকুলতে হতে পারে সেই অপেক্ষায় থাকা প্রেমিক অথবা প্রেমিকার মনের মতো চঞ্চলতার অথবা হতে পারে সব লঙ্ঘন ছিন্ন করে দৌড়ে গিয়ে নিজের মনের মানুষটিকে জড়িয়ে ধরে কাঁদার কিংবা হাসার ইচ্ছার…