• Uncategorized
  • 0

দৈনিক ধারাবাহিক উপন্যাসে মৃদুল শ্রীমানী (পর্ব – ৩৪)

পর্ব – ৩৪

৩৩

সদর দরজা বন্ধ করতে যাবে, এমন সময় বাচ্চা মিস্ত্রিটার গলা শুনতে পেল শ্যামলী ।
“ছোড়দি, বিপদ ঘটে গেছে।“
“কি হয়েছে রে?”
“মিস্ত্রির বাড়ি গিয়েছিলাম, তারা নেই। ঘরে তালা বন্ধ। বুড়ি মা টা বারান্দায় পড়ে আছে। কথা বলতে পারছে না। শুধু কাঁদছে ।“
সহসা রাগ করলো শ্যামলী। “আচ্ছা তোরা আমায় কি পেয়েছিস বলতো? আমায় না বলে কয়ে কেউ যদি কোথাও চলে যাস, আমি কি করবো বলতে পারিস?”
“ছোড়দি , আমার মনে হয় মাফিয়াদের লোকেরা তোমার উপর রাগে তুলে নিয়ে গেছে।“
“আচ্ছা, যা, খুব পণ্ডিতি ফলিয়েছিস। এবার বাড়ি যা।“
“তুমি কিছু করবে না ছোড়দি?” ঘাড় বাঁকিয়ে তাকায় কিশোরটি ।
তাকে ভেতরে ডেকে নেয় শ্যামলী । “রাত হয়ে গিয়েছে। এখন আর তোকে বাড়ি যেতে হবে না। আমাদের বাড়ি থেকে যা। কাল ভোরে উঠে বাড়ি যাস।“
“আমার মা যে চিন্তা করবে ছোড়দি ।“
“মাকে বলে আসিস নি?”
মাথা নিচু করে থাকে কিশোরটি।
“হ্যাঁ রে, বীর পুরুষ , এবার যদি মাফিয়া রাম নারায়ণের লোকেরা তোকে তুলে নিয়ে যায়, আমি কি করবো বলতে পারিস?”
শশাঙ্ক পাল পায়ে পায়ে নেমে এসেছেন কখন।
“বাবা, তুমি, এতো রাতে নিচে নেমে এলে কেন?”
“আমার মেয়েটা কতো বড়ো হয়ে গেছে দেখতে এলাম।“ কিশোরটির দিকে তাকিয়ে বলেন, “এই, যা, রান্না ঘরে গিয়ে খেতে বোস। তার পর আমার ঘরের মেঝেয় শুয়ে পড়বি।“
বাবা ওর দায়িত্ব নিয়ে নেওয়ায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচল মেয়ে। শশাঙ্ক পাল ওকে যতো সহজে মেঝেয় শুতে বললেন, ততো সহজে শ্যামলী কিছুতেই শুতে বলতে পারতো না। আর কিশোরটির পোশাকের ছিরি ছাঁদ যা, তাতে আর কারো ঘরে ওকে শুতে বলা যেতো না। বড়ো হচ্ছে, ওকে সবিতা পিসির ঘরেও চালান করা যায় না, শ্যামলীর নিজের ঘরে তো নয়ই । বাবা কি আশ্চর্য সহজ করে দিলেন সব। তাঁর ঘরে মেঝের উপর শতরঞ্চি আর কাঁথা পেতে, তার উপর একটা পুরোনো পরিষ্কার চাদর বিছিয়ে দিল সে। এমন বিছানা দেখে কিশোরটির খুশি আর ধরে না।

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।