দৈনিক ধারাবাহিক উপন্যাসে মৃদুল শ্রীমানী (পর্ব – ১৪)
by
·
Published
· Updated
পর্ব – ১৪
১১১
শ্যামলী জিজ্ঞাসা করলো “আপনি জানেন লোহা মাফিয়া রাম নারায়ণ মিশ্রের লোকজন আমাদের হেড মিস্ত্রীকে পিটিয়েছিল ?”
শ্রমিক নেতা বললো “হ্যাঁ , শুনেছি ।“
শ্যামলী জানতে চাইলো “কেন পিটিয়েছিল সেটা শুনেছেন?”
“হ্যাঁ , ও বিনে পয়সায় গাড়ি সারাতে চায় নি।“
“তাহলে বলুন ও অন্যায় করেছিল ।“
ইতস্ততঃ করে নেতাটি বলে ফেলে “ন্যায় অন্যায় তো ওভাবে বিচার হয় না। লড়ে যাবার ক্ষমতা আছে কি না, সেটাও তো ভাবতে হবে?”
“হ্যাঁ মশাই , পথে আসুন। লড়ে যাবার ক্ষমতা আছে কি না, সেই বুঝে পা ফেলা …” শ্যামলীর গলায় ব্যঙ্গের সুর । সেটা অগ্রাহ্য করে নেতাটি বলে
“হ্যাঁ , এবার আপনি বুঝতে পেরেছেন। আপনি মাফিয়ার মারের সামনে অহেতুক গরিব শ্রমিককে লেলিয়ে দিতে চাইছেন ।“
“আর তাই আপনার হই হই করে আমার চেম্বারে ঢুকে আমাকে শাসাতে এসেছেন …”
“আমরা প্রতিবাদ করবো না? আপনার যে কাজটা আমাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় সে ব্যাপারে প্রতিবাদ আমরা করবোই ।“
“তা করুন। কিন্তু লোহা মাফিয়ার লোক পেটালে , পুলিশ ধরে গোবেড়েন দিলে, পার্টির লোক থ্রেট করলে আপনারা তখন কেঁচো হয়ে থাকবেন। আহা হা, আপনার কি অসাধারণ কাণ্ডজ্ঞান !”
নেতা আবার তেড়ে ফুঁড়ে উঠলো “গরিব মানুষ নাহক মার খাবে? আপনি কি বলতে চান?”
“তা কেন ? গরিব মানুষ মাফিয়ার কাছে মার খাবে, পুলিশের কাছে কেস খাবে, পার্টির কাছে থ্রেট খাবে, শুধু আমার মতো দু পয়সার ম্যানেজারকে হই হই করে কড়া কড়া কথা শোনাবে ! একে কি বলে বলুন তো ?”
জিজ্ঞাসু চোখে তাকায় নেতাটি ।
শ্যামলী বলে , “ একে বলে শক্তের ভক্ত , নরমের যম । আর একটা কথাও বলে , কি জানেন , এ হল গরিব মানুষের সুবিধেবাদ ।“