গল্পকথায় রাইয়ান হোসেন
শহুরে বাক্য গ্রামীণ আতঙ্ক
আমরা একটা বিষয়ে বেশ অবগত,”শহুরে বুলি গ্রাম্য গালি” অথবা “এক দেশের বুলি তা অন্য দেশে গালি”।অর্থাৎ ক্ষেত্রভেদে অনেক সময়েই আমরা নিজেরাও আতকে উঠি কিছু আচরণ-ভাষা-ভঙ্গিমা ইত্যাদির বাহারে।যে বিষয়ে আমরা জ্ঞাতই নই,সেই বিষয়ে যদি আমরা হুট করে মুখোমুখি হই তবে তো কেল্লা-ফতে।অর্থাৎ আমাদের নাজেহাল অবস্থার আর কিছু বাকি থাকে না বৈ কি!এমনেই অনেক ঘটনা আমাদের চারপাশে ঘটে অনবরত। হয়তো আমরাও এর অংশিদারিত্বের ভাগিদার হই অবস্থার স্বীকার হয়ে।
যাইহোক মোদ্দা কথায় আসা যাক।আমার এক পরিচিত মহলের কোন এক সময়ে এক বিদেশী এদেশে ঘুরতে আসে।উনাকে আবার কিন্তু পুরোপুরি বিদেশী ভেবে ভুল করবেন না।যদিও জন্মগত বিদেশী তবে পিতৃস্থল বাংলাদেশ।আপনাদের তো ধারণায় আছে বিদেশিদের কালচার কেমন!উনি একবার বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেন।গ্রামে প্রথমবারের মত এসেছেন,সবকিছুই উনার অজানা-অপরিচিত। এদেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে কিছুটা জ্ঞাত থাকলেও কিন্তু ঐ গ্রামের যে সংস্কৃতি কিছুটা মান্ধাতা আমলের,তা সম্পর্কে এক রতিও জ্ঞান নেই।এখন যা হবার তা তো হবেই।
গ্রামের প্রবেশপথে এক ললনার দেখা,তবে সামনাসামনি নয় কিন্তু।মেয়েটি উনাকে পাশ কেটে যাওয়ার পর উনি মেয়েটিকে ফলো করে।এক সময় মেয়েটি বুঝতে পেরে পিছে উনার দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে দ্রুতগতিতে চলে যাচ্ছিল,ঠিক সেই সময় উনি মেয়েটির দিকে এক কমেন্ট ছুড়ে দেয়”ন’টি গার্ল” অর্থাৎ (দুষ্ট মেয়ে)।আগেই বলেছি “এক দেশের বুলি তা অন্য দেশের গালি”।মেয়েটি তো রেগে অগ্নিশর্মা হয়ে তার বাবাকে নালিশ দিলেন।গ্রামের বিষয় তো বুঝেনেই!উনি তো আরও কঠিনভাবে রেগে লোকবল নিয়ে ঐ ভদ্র লোকটিকে ধরে ফেলেন।গ্রামের মানুষজন যখনই না উনাকে(বিদেশী লোককে) মারতে উদ্ধত হলেন,উনার তো নাজেহাল অবস্থা।কারণ গণধুলায় কে আর চাইবে বিনা পয়সায় মিলে যাক!পরবর্তীতে উনি গ্রামবাসিকে তার কমেন্টকৃত বাক্যের অর্থ বুঝানার পর সবাই উনাকে রেহায় দেন,আর উনিও স্বস্থীর নিঃশ্বাস নেন।