• Uncategorized
  • 0

খুন হয়েছিলেন সুন্দরী তাকাবুতি!

মৃত্যুর ছাব্বিশশো বছর পর মমি রহস্য ভেদ গবেষকদের

উনবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই বিশ্বজুড়ে মমি পাচার ও বিক্রির ব্যবসা ফুলে ফেঁপে উঠেছিল। ১৮৩৪ সালে ডিলারের কাছ থেকে খবরটা পেয়ে গিয়েছিলেন উত্তর আয়ারল্যান্ডের হলিউড শহরের শিল্প সংগ্রাহক থমাস গ্রেগ। মিশরীয় ডিলার জানিয়েছিলেন থমাস গ্রেগ যা খুঁজছিলেন তা মিশরের পশ্চিম থিবেসের সুপ্রাচীন সমাধিক্ষেত্র থেকে পাওয়া গেছে। কিছুদিনের মধ্যেই তা মিশর থেকে জাহাজে করে রওনা দেবে ইউরোপ।
নির্দিষ্ট সময়ে থিবেস থেকে বেলফাস্টে এসেছিল একটি মিশরীয় সারকোফেগাস (কফিন)। কফিনটির ভেতরে কয়েক হাজার বছর ধরে শুয়ে আছে এক মমি। নিজের সংগ্রহশালায় রাখার জন্য তিনি একটি মমি কিনতে চেয়েছিলেন। চড়া দাম দিয়ে কিনেও মমিটি নিজের কাছে রাখতে পারেননি গ্রেগ। কারণ, আয়ারল্যান্ডে আসা প্রথম মিশরীয় মমিটিকে ঘিরে প্রবল চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। স্থানীয় কাগজে হইচই পড়ে যায়। মমিটির কফিন খোলার জন্য প্রায় উন্মাদ হয়ে ওঠে আয়ারল্যান্ডের জনগণ। বাড়িতে মমিটি না রেখে এবং কফিনের ঢাকনা না খুলেই থমাস গ্রেগ ১৮৩৫ সালে মমিটি দিয়ে দেন উলস্টার মিউজিয়ামকে।
বিখ্যাত মিশর বিশেষজ্ঞ পুরাতত্ত্ববিদ এডয়ার্ড হিঙ্কস, ১৮৩৫ সালের ২৭ জানুয়ারি ‘বেলফাস্ট ন্যাচরাল হিস্টরি মিউজিয়াম-এ কফিনটি খুলেছিলেন। সারকোফেগাসের ওপর লেখা হায়ারোগ্লিফিক লিপি পড়ে হিঙ্কস জানিয়েছিলেন কফিনের ভেতর শুয়ে আছেন এক বিবাহিতা যুবতী, যাঁর নাম তাকাবুতি। মৃত্যুর সময় যুবতীর বয়েস ছিল ২০ থেকে ৩০ এর মধ্যে। তাকাবুতি ছিলেন সম্ভ্রান্তবংশের মেয়ে এবং কোনও সম্ভ্রান্তবংশের পুরুষের স্ত্রী। তবে কোনও রাজপুরুষের রক্ষিতাও হওয়ার সম্ভাবনাও ছিল তাকাবুতির। তাঁর বাবার নাম ছিল নেসপারে, যিনি ছিলেন দেবতা আমুনের পুরোহিত। মায়ের নাম ছিল তাসেনিরিক।
মমির শরীর থেকে ব্যান্ডেজ খুলে চমকে গিয়েছিলেন এডয়ার্ড হিঙ্কস ও তাঁর সহযোগীরা। কফিনের মধ্যে শুয়ে থাকা যুবতী তাকাবুতির মুখের রঙ অস্বাভাবিক রকমের কালো,মাথায় সোনালী চুল। বিশ্বে বিভিন্ন জায়গায় মমি পরীক্ষা করার অভিজ্ঞতা ছিল এডয়ার্ড হিঙ্কসের। কিন্তু এরকম মমি আগে কখনও দেখেননি। রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিল তাকাবুতি নামের মমিটি। মমিটিকে নিয়ে লেখা হয়েছিল প্রচুর কবিতা ও গান। তাকাবুতির কফিনের ওপরের আঁকা মানুষের মুখের ছবি দেখে আঁকা হয়েছিল তাকাবুতির কাল্পনিক ছবি। এক কথায় কফিন খোলার পর আক্ষরিক অর্থেই সেলিব্রিটি হয়ে গিয়েছিলেন তাকাবুতি।
শ্রেয়সী কাঞ্জিলাল
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।