• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক কোয়ার্কো ধারাবাহিক উপন্যাসে সুশোভন কাঞ্জিলাল (পর্ব – ১৬)

ষোলো

ব্যাংকের ম্যানেজারের সঙ্গে আধঘন্টার মতো কথা হল । ওনার মুখে পুরো ঘটনার বিবরণ আরও একবার শুনলাম। আমি ওনাকে বললাম, নিজের ব্যাংকের সিকিউরিটি আরও শক্ত করতে। আমি জানালাম যে ঘটনাটা আরো ডিটেলে স্টাডি করতে এসেছি। ওনাকে আমি সিকিউরিটি টিপস ও দিলাম। ভদ্র লোকের ইন্টারেস্ট আছে। তবে দ্বিধা না করেই বললেন, “স্যার আমাদের সরকারি সংস্থা, এতো টেকনোলজি এডপ্ট করা বা ইমপ্লিমেন্ট করার গরজ কারোর নেই। আমারো আর দু বছর পর রিটায়ারমেন্ট। সারাজীবন সম্মানের সঙ্গে চাকরি করেছি। শেষ জীবনে এসে একটা দাগ লেগে গেলো। ভদ্রলোকের গলায় আবেগ ও আক্ষেপের সুর। যে ক্যাশিয়ারকে ম্যানেজারের সঙ্গে অজ্ঞান করা হয়েছিল তাকেও ডাকা হল। তার সঙ্গে কথা বলেও বিশেষ কিছু তথ্য পাওয়া গেল না। আসলে এরা সকলেই ঘটনার আকস্মিকতায় কিছুই সে ভাবে খেয়াল করতে পারেনি। তবে একটা কাজ হলো। সিসি টিভির ফুটেজ টা ওনারা দেখালেন। আমি পুরোটাই মন দিয়ে দেখলাম। তিনটি ক্যামেরা ছিল ব্যাংকে। কিন্তু তবুও পুরো ঘটনা কভার করতে পারেনি। একটা জিনিস লক্ষ করলাম, সত্যি দুজনের কাছে এ. কে. 47 ছিল। কিন্তু তৃতীয় জনের হাতে ছিল মামুলি একটা বন্দুক। ম্যানেজার বললেন ওটা গাদা বন্দুক। বললেন, “দাদা একসময় নকশাল করতাম ওই বন্দুক অনেক চালিয়েছি, অনেক অ্যাকশন করেছি এককালে। আর আজ শয়তানের বাচ্চা গুলো আমার হাত থেকে বেরিয়ে গেলো। কিছুই করতে পারলাম না! রক্তও ঠান্ডা হয়ে গেছে বুঝলেন”। আমি টপিক ঘোরানোর জন্য জিজ্ঞাসা করলাম “কারোর নাম জানতে পেরেছেন? মানে অ্যাকশনের সময় কেউ কাউকে নাম ধরে ডেকেছে কি!” উনি বললেন “হ্যা, গাদা বন্দুক হাতে লোকটিকে আরেকটি লোক জগা বলে ডেকেছিল একবার”। আমি ক্যামেরার ফুটেজে একটা জিনিস্ লক্ষ করলাম। একটা লোক লকার রুম থেকে বেরোনোর সময় তার ব্যাগে একটা খাকি রঙের খাম ঢোকাচ্ছে। ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসা করলাম “লকারে কি ছিলো? কি চুরি গেছে টের পেয়েছেন?” উনি বললেন “না দাদা, চাবি ঘোরানোর পরেই আমাকে ও ক্যাশিয়ারবাবুকে অজ্ঞান করে দিয়েছিলো শয়তান গুলো”। আমি বললাম “ক্যামেরার ফুটেজে কোনো সাউন্ড রেকর্ড হয়নি দেখছি। আচ্ছা বলুন তো ওরা নিজেদের মধ্যে কোনো কথা বলেছিল কি? যদি বলে থাকে তালে কি ভাষায় কথা বলেছিল”? ম্যানেজার বললো “ইংলিশ “। দুজনের অ্যাকসেন্ট অদ্ভুতভাবে হলিউডের হিরোদের মতো। ফরেনারদের মতো চিবিয়ে চিবিয়ে ইংলিশ বলছিলো “। আমার যা জানার জানা হয়ে গেছে। বেরিয়ে এসে ব্যাপারটা মনে মনে সাজিয়ে নিলাম। তার মানে ডাকাত দলে জগা ছিল, বাকি দুজন ফরেনার খুব সম্ভবত জার্মান, ফুটেজে হাতের ও পিঠের অনাবৃত অংশের চেহারা দেখে বোঝাই যাচ্ছে ওই দুজন ককেশিয়ান। হঠাৎ দেখি আমার পিছনে একটা বাইক এসে দাড়ালো। হেলমেট পড়া আরোহী বললো “চুপ চাপ বাইকের পেছনের সিট্ এ বসে পড় “।

ক্রমশ… 

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *