• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক কোয়ার্কো ধারাবাহিক উপন্যাসে সুশোভন কাঞ্জিলাল (পর্ব – ১৩)

তেরো

বাল্মীকির ব্রেকফাস্ট খেয়ে স্নানটা সেরে নিলাম। আমি একটু একা থাকতে চায়। তাই আমায় যেন কেউ ডিস্টার্ব না করে বলে নিজের ঘরে দরজা বন্ধ করে স্বেচ্ছা নির্বাসন নিলাম। ঘরের জানালা গুলো বন্ধ করে হাল্কা করে ‘এ- নিগমা’র সিডিটা চালিয়ে নিলাম। ঘরের অন্ধকারে আমার ভাবতে ভালো লাগে। ভাবনা না থাকলে ধ্যান করি। অন্ধকার ঘরে একটা নাইট ল্যাম্প আর মাইল্ড মিউজিক। ইনস্ট্রুমেন্টাল হলেই ভালো। আমার ব্রেনটাকে এভাবেই রেস্ট দিই। বলা যায় আয়ত্তে রাখি। এটা আমাকে একজন সাইকিয়াটিস্ট রেকমেন্ট করেছিল। না, আমি পাগল নই। কিন্তু আমার ব্রেন নাকি খুব হাই ফ্রিকোয়েন্সির। একসঙ্গে অনেক কাজ করতে চায়। মানে হাইপার অ্যাকটিভ। তাই একাগ্রতার খামতি খাটে। সেই কারনেই এই অনুশীলন। কিন্তু এখন ধ্যান করলে হবে না। এখন আমায় ভাবতে হবে। জানি খুব কম ইনফরমেশন আছে আমার কাছে এখন। ঢাল তরোয়ালহীন নিধিরাম সর্দার এখন আমি। কিন্তু লড়তে তো হবেই।
ঘটনাটা যদি পরপর সাজাই তাহলে এমন হয়। আমি অফিস থেকে বের হই আর ট্যাক্সি এসে আমাকে কিডন্যাপ করে। কিন্তু কোন বল প্রয়োগ করে না। আমি স্বেচ্ছায় ট্যাক্সিতে উঠে বসি। তার মানে এটা পূর্বপরিকল্পিত। বেশ কিছুদিন ধরে আমায় নিশ্চয়ই ফলো করা হয়েছিল। কিন্তু আমি ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারিনি। কিন্তু কেন? কেন আমাকে কিডন্যাপ করা হল? ওই ট্যাক্সির পেছনের ধাঁধাঁটা সমাধান করার জন্য? কিন্তু যেই এটা করে থাকুক সে জানল কি করে যে আমি ধাঁধাঁটা সমাধান করতে পারব?
আর যদি ধাঁধাঁর সমাধান আমার কাছে চাহিদা ছিল তাহলে আমায় অজ্ঞান করল কেন? আমি বুঝতে পেরে চিৎকার করে গাড়ি দাঁড় করাতে ব্লেছিলাম বলে? হয়তো তাই। তার মানে আমায় যারা কিডন্যাপ করেছিল তারা আমার নাড়িনক্ষত্র জানে। তারা তিনটি ব্যাপারে ওয়াকিবহাল ছিল যে এক- আমি কারোর কোনও অন্যায় প্রস্তাব মানব না। মানে টাকাপয়সা অথবা শাসানি এইসবে কোনভাবেই আমায় দিয়ে ওই ধাঁধাঁ সমাধান করানো ওদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই সেই চেষ্টাও করেনি। দুই-ধাঁধাটা আমি সমাধান করতে পারব এবং তা যতক্ষন না করব আমার অন্যদিকে মন যাবে না। তাই তারা অবলীলায় আমায় অজ্ঞান করে দেয়। তার মানে আমাকে ক্লোরোফর্ম শোঁকানোর সময় সিওর ছিল যে আমি ধাঁধাটা অলরেডি সমাধান করে ফেলেছি। তিন- ওই দুটি লোক আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমায় ট্যাক্সি করে আর বেশি দূর নিয়ে যেতে পারত না। বন্ধুক বা বলপ্রয়োগের ভয়ে নুইয়ে পড়ার বান্দা আমি নই। প্রান যাওয়ার আগে প্রর্যন্ত আমি ওদের বাঁধা দিতাম। টু ইজ টু ওয়ান রেশিও তে কোন বেশি সুবিধা করতে পারবে না। তাও আবার চলমান ট্যাক্সির ভিতর। আর আমি যে নেহাত হাবলা-কেবলা প্রতিদন্দ্বী নই সেটা তারা জানত। সব মিলিয়ে বোঝা যাচ্ছে আমাকে ওরা অনেকদিন ধরে স্টাডি করেছে। ভাবনার অতল গভীরে ঢুকে গেছিলাম। দ্রজার ধাক্কায় বাস্তবে ফিরলাম। বিরক্ত হলাম। ভাল করে শুনে বুঝলাম মিকির গলা। মিকি দরজা ধাক্কা দিচ্ছে আর বলছে, “দাদা, আপনার সঙ্গে একজন দেখা করতে এসেছেন”।

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *