কবিতায় মানবেন্দ্র ব্যানার্জী
by
TechTouchTalk Admin
·
Published
· Updated

পেশায় শিক্ষক, নেশায় সাহিত্য। ছড়া,কবিতা ও প্রবন্ধে তাঁর অবাধ বিচরণ। নিবাস-বাঁকুড়া।
পুজোর ছড়া
১.দিচ্ছে পুজো উঁকি
ঠাকুর পাটায় পড়লো মাটি
কাঠি পড়লো ঢাকে
কাশের শোভা দেখবে চলো
কাজলা নদীর বাঁকে।
ঢেউ খেলানো ধানের ক্ষেতে
সবুজ জাজিম পাতা
আকাশ জুড়ে উড়ে বেড়ায়
সাদা রঙের খাতা।
পদ্মদিঘির কালো জলে
শালুক উঠে হেসে
করিম চাচা গাঁয়ে এলো
ডিঙিই চেপে ভেসে।
কালু কাকা ঠাকুর গড়ে
ছেলেরা সব দেখে
গজাননের পেটে লাগায়
মাটির ঢেলা মেখে।
শ্যামলা গাঁয়ের আঁকে বাঁকে
দিচ্ছে পুজো উঁকি
নতুন পোশাক কেনার জন্য
কান্না জুড়ে টুকি।
২.আগমনি
সাদা মেঘের খামে ভরে
চিঠি পাঠায় শরৎ
নীল আকাশের নীচে চলে
পুজোর মহরৎ।
পিতল রঙের রোদ ছড়ানো
মেঘের পাড়ায় পাড়ায়
দূরের পথিক গাছের নীচে
ছায়ায় এসে দাঁড়ায়।
কাকচক্ষু কাজলা নদী
এখন স্বচ্ছ তোয়া
অ আ লিখে সরপুঁটি মাছ
কাঠপোকা আর ছোঁয়া।
মাঝে মাঝে কালো মেঘে
টাঙায় সামিয়ানা
বাতাস এসে সরিয়ে দেয়
নেই কোন বাহানা।
ঢেউ খেলে যায় ধানের ক্ষেতে
চোখ যত যায় দূরে
গান ধরেছে বোষ্টুমি এক
আগমনির সুরে।
৩.পুজোর গন্ধ
শাপলা পোতার দীঘির জলে
উঠলো শালুক ফুটে
বাতাস এসে ঢেউ তুলে যায়
পাপড়ি জলে লুটে।
শিশুরা সব জোট বেঁধেছে
করবে সাঁতার খেলা
আকাশ গাঙে ভেসে বেড়ায়
সাদা মেঘের ভেলা।
বালুচরে নদীর তীরে
কাশ ফুলেরা হাসে
ভাদ্রমাসের সোনা রোদে
ধানের সবুজ ভাসে।
পড়লো মাটি ঠাকুর পাটায়
ঢাকে পড়ে পালক
খুশি মুখে উড়োয় হাসি
ঢাকি পাড়ার বালক।
দিনের সাথে আঙুল গুনে
স্কুলের ছেলে মেয়ে
বোষ্টুমি যে উঠবে কবে
আগমনি গেয়ে!
খাতা হাতে পিওন কবে
ধরিয়ে দেবে ছুটি
পুজো তলায় সবাই মিলে
করবে লুটোপুটি।
৪.শরৎ শোভা
শরৎ এসে ঢুকলো দেশে
বাদল মেঘ নাছোড়
পাতলা বৃষ্টি দু’এক পশলা
পরেই রোদ পুজোর।
পুজোর আমেজ ছড়িয়ে যায়
নদীর দু’কূল জুড়ে
ভাদ্র মাসের আদর রোদে
যাচ্ছে আকাশ পুড়ে।
পুড়লেই কি আর? হঠাৎ করে
লুকিয়ে থাকা মেঘে
ঘুমিয়ে থাকা বর্ষা যেন
যাচ্ছে আবার জেগে।
জেগে ওঠে ধানের ক্ষেতে
সবুজ রঙের গালচে
কোথাও কোথাও পোকাতে ধান
করে গেছে লালচে।
লালচে আলোয় আকাশ খানি
থালার মতো মাঁজা
সাদা কালো মেঘের উপর
পুড়ছে ইটের পাঁজা।