কবিতায় প্রভাত মণ্ডল
আরাধনা
প্রথম সর্গ – ১
কে তুমি গগনে আজি দাঁড়ায়ে প্রভাত বেলা
আলুথালু মুখ ভার
চন্দ্রমা করিয়া পার
নবসুধা দিতে গিয়ে
ফিরিছো ও মুখ লয়ে
বসুধা জুড়িয়া তব কি বিচিত্র এ লীলাখেলা ।
লাজে অবনত আজ তব রাঙা মুখ
তুমি এলে হয় লেখা
এ ভুবনে নব রেখা
মনে আসে স্ফূর্তি
তুমিই করুণা মূর্তি
তুমি এলে এ ভুবনে আসে নব সুখ ।
প্রথম সর্গ – ২
তুমি এলে ভাঙে নিশি এই ধরাতলে
ভাঙে সবা ঘুমঘোর
পাখি ডাকে হয় ভোর
বধূরা কলস কাঁখে
গাঁ’এর পথের বাঁকে
কানে কানে গুন গুন কত কথা বলে ।
হারায়ে আপন তেজ নিখিল ভুবনে আজ
রাঙা জ্যোতি তব কোথা
পেয়েছো কি মনে ব্যথা
চাঁদ-তারা মহা সুখে
দিবা ভাগে তব বুকে
গাঁথিয়া পরান মালা দিতেছে তোমারে লাজ ।
প্রথম সর্গ – ৩
মধ্যাহ্ন গগনে আজি নাহি দেখা কোনো পলে
তব বক্ষে একি ব্যথা
জলে ভরা আঁখি পাতা
সুনীল গগনে আজ
মেঘমালা অভিরাজ
ভুবন ভরাতে চাও এ কোন গভীর জলে ।
তোমার অলক্ষে আজি দিবস গগন মাঝে
হাসিছে মেঘরাজ
সাজিয়া নব সাজ
কুন্তল করিয়া ভার
তাকাতেছে চোখে আড়
গাঁথিছে ফুলের মালা লতা পাতা নব সাজে ।
প্রথম সর্গ – ৪
গোধূলিতে কোথা তুমি পেয়েছো কি লাজ
তুমি হীনা রামধনু
গোঠের রাখাল কানু
বেণুবনে গাহে গান
বাঁশিতে লয়ে তান
বিষাদ ভরায়ে তুলে আনে নব সাঁঝ ।
হে প্রেয়সী একি রূপ তব কালো কেশ
গাঁথিয়া মুকুতা হার
করিছো গগন পার
কপোল বাহিয়া ঝরে
অবিরত ভূমি পরে
বুঝিনা গরল নাকি সুধা এ নিঃশেষ ।
প্রথম সর্গ – ৫
তিমির নামিল এবে নাহি দেখি শুকতারা
তামস করিছে খেলা
প্রাণে ভরা ভাব মেলা
অরুণ কাঁদিছে আজ
প্রাণে লয়ে শত লাজ
লুকায়েছে চাঁদ আজ লয়ে স্নিগ্ধ সুধা ।
ঝিরিঝিরি বারিধারা তাহাতে হাসিছে ধরা
প্রেয়সীর অন্তরে ব্যথা
জাগিছে শত কথা
চুপিসারে ডাকে কারে
যেতে চায় অভিসারে
তবু নয়ণ মুদিয়া দেখে কিরণে ভুবন ভরা ।