এই নিখিল ব্রহ্মাণ্ডের উৎপত্তির কারক তুমি,
সৃষ্টি,স্থিতি ও লয়ের মূল উৎস তুমি,
আদি পুরুষের এক মাত্র প্রকৃতি তুমি,
শক্তি তুমি!
সকল সৌন্দর্যের আদি স্রোত তুমি,
সকল পার্থিব বিনিময়ের উর্দ্ধে তুমি,
নরের নারী তুমি,
এই প্রাণশক্তির একমাত্র নাড়ীও তুমি,
এই জীবনই শক্তির নির্মম অপচয়ের,
এক প্রতিবাদের মশালও তুমি!
যুগে যুগে কঠোর পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছ তুমি,
জানকী রূপে এক অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয়েছিল,
সেদিন তোমায়!
কৃষ্ণা রূপে হস্তিনাপুরের রাজসভায়,
লাঞ্চিত হয়েছিলে তুমি!
দক্ষতনয়া রূপে আপন প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছিল তোমাকে,
আপন পিতা প্রজাপতি দক্ষের আলয়ে!
এর পর কেটে গেছে বহু শতাব্দী,
বেহুলা, সতী, সাবিত্রীর দিন তবুও আজও বর্তমান,
নগ্ন পুরুষ সমাজে আজও তুমি এক পণ্য!
কেন এই নির্মম অবিচার!
একই মুদ্রার অন্য ভাগ হয়ে,
কেন বারংবার দিতে হবে তোমার অস্তিত্বের প্রমাণ!
কেন বারংবার অশ্রুসিক্ত নয়নে চাইতে হবে তোমায় ভিক্ষা!
কেন বারংবার তোমায় কলুষিত করবার,
চলবে এক নিরন্তর অভিপ্রায়!
মৌনতা কি তোমার শুধুই এক দুর্বল প্রতীক?
সে তোমার চিন্ময়ী শক্তি নয়?
কেন শুধুমাত্র আজও ত্যাগের মহাযজ্ঞ এ
আহুতি দেবে সকল অভিলাষ বরংবার?
তাই মৌনতা নয়,
চাই এক প্রতিবাদের প্রতিধ্বনি,
দিকে দিকে বেজে উঠবে শঙ্খ,
তোমার বিজয় রথ তোমারই প্রকৃত পরিচয়!
বিস্মৃত হয়েছ কি?
তোমারই উম্মুক্ত কেশরাশি কুরুক্ষেত্রের পটভূমি!
বিস্মৃত হয়েছ কি?
তোমারই অবমাননা লংকেশের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেছিল সেদিন!
বিস্মৃত হয়েছ কি?
তুমিই রাসমণি, তুমিই রানীভবানী, তুমি ঝাঁসির তরবারি,
তুমিই বীজ, তুমিই ব্রহ্ম, তুমিই অদ্বিতীয়া!
তুমিই নারী,
তোমারই আছে আপন ভাগ্য জয় করবার
এক মাত্র অধিকার–
নারী তুমি,
মহামানবী তুমি,
কল্যাণী তুমি,
এক অনুপ্রেরণা তুমি!!