• Uncategorized
  • 0

কবিতায় অমিতা মজুমদার

বনসাই (বামন বৃক্ষ)

এক পোড়োবাড়ির ফাটল ফুঁড়ে জন্মেছিলাম বেশ ক বছর আগে,
নাদুস নুদুস শরীর নিয়ে বেড়েও উঠছিলাম ।
রোদ বৃষ্টি আর খোলা হাওয়ায় মনটাও ছিল ফুরফুরে,
মাথার উপরে সূর্যটাকে দেখে তাকে ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখতাম।
আবার ভাবতাম একটু বড় হলে কারও হাত ধরে চলে যাব সেইখানে,
যেখানে চারগ্রামের রাস্তা এসে মিলেছে।
সেথায় বেশ ডাল-পালা মেলে পসার জমাব।।
পথচারী সব ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে বসবে আমার ছায়ায়,
গ্রামের কিশোর-কিশোরী রা ঝুলন ঝুলাবে আমার ঝুরি দিয়ে।
দশগ্রামের মানুষ আমায় চিনবে এক কথায়,
শাখায় আমার বাঁধবে বাসা পাখ পাখালির দল।
গ্রীষ্ম বর্ষায় সবার মাথায় ধরবো ছাতা,
এমন কত স্বপ্ন নিয়ে বুকে কাটে আমার দিন।
এরই মাঝে হঠাৎ একদিন,
আমায় একজন নিয়ে এল আদর করে।
যত্ন করে নতুন পাত্রে আমায় জায়গা দিল,
মনে আমার খুশী ধরেনা।
কোথায় ছিলাম ভাঙা বাড়ির শেওলা ধরা দেয়ালের ফাঁকে,
কেমন ঝকঝকে নতুন বাড়ীর একেবারে মাথার উপরে এবার জায়গা হলো।
কদিন যেতে না যেতেই স্বপ্ন আমার ভেঙে গেল।
টের পেলাম আমার কচি নরম শরীরটাকে,
দুমড়ে মুচড়ে শক্ত করে বেঁধে দেয়া হলো।
যেন আমি মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারি,
আমার শরীরটাকে কদিন পর পর কেঁটে ছেঁটে দেয়া হয়।
এমনি করে কেটে গেছে কতো বছর আজ আর তা মনেও নেই,
নিজেকে খুঁজে পাই চার দেয়ালে ঘেরা আলো আঁধারি ঘরে।
এক কোনে অতি যত্নে পড়ে আছি বনসাই হয়ে ,
আমার অপূর্ণ স্বপ্নগুলো আগলে।।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।