• Uncategorized
  • 0

“আমি ও রবীন্দ্রনাথ” বিশেষ সংখ্যায় হেমন্ত সরখেল

বন্ধন

রেলওয়ে ইয়ার্ড লাগোয়া হিয়ুম পাইপের মধ্যে কৃষ্ণা,বিনোদ আর জটার সংসার | ওয়াগনের সার চুরি ঠেকাতে জটা আর বিনোদ আমার নিত্যসঙ্গী | ইনফর্মার বিশ্বস্ত সারমেয় জটা | সন্ধেয় ওকে প্ল্যাটফর্মের অফিসের সামনে লাঙ্গুল নাড়াতে দেখলেই বুঝি, চাঁদুরা ওদিকে পাক মেরেছে | ব্যস, রাতে ক্যাচ কট কট্ | জি.আর.পি.’র মধ্যে ওদের কল্যানে হাইটে এখন আমি |
‘এই নে কৃষ্ণা, এ সপ্তাহেরটা |’
‘তুই না থাকলে,মায়ে-পোয়ে কুত্তাডারে লইয়া না খাইয়াই মত্তাম রে ‘দা |’
‘কী যে বলিস না ! তোদের জন্যই প্রোমোশনটা পাচ্ছি হয়তো | খবর তো জটা দ্যায়ই,রাতের অপারেশনেও পরমাত্মীয়ের মতো সেঁটে থাকে গায়ের সাথে | আর এগুলো তো আমার রেশন,তুই না নিলে হয়তো অন্য কেউ নিত,এসব বলিস না,কেউ তো অনুভব করাক,আমি একা নই !’
‘দুয়ারে প্রস্তুত গাড়ি,বেলা দ্বিপ্রহর’ | কৃষ্ণা এসেছে কোয়ার্টারে | বাঁধা ছাঁদা শেষ | চারটেয় ট্রেন | ঠিঁয়া ভেঙে এবার এস.আই. উড়ে যাবে নয়া নীড়ে | বলাই প্রতি সপ্তাহে রেশন দেবে ওদের, আমি নগদী পাঠাবো, সেটাও দেবে, কথা দিয়েছে | গোঁজ হয়ে বসা বিনোদ মুখ তুললো, ‘তোরে যাইতে দিম্ না,মামু |’
কই ! ধরেনি তো জাপটে ! জুতোও লুকিয়ে রাখেনি | কাজলা মেঘের মতো দীর্ঘায়ত চোখে টলটলে জল নিয়ে শুধু বলেছে- দেব না যেতে তোকে! কবিগুরু, দৃশ্যটা তোমার ‘যেতে নাহি দিব’ কবিতার মতো,তাই না ? ভবিষ্যৎদ্রষ্টা ! একছত্র, এটারও জন্য, কবিতাটায় কেন জুড়লে না ?
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।