অণুগল্প ১ বৈশাখের বিশেষ সংখ্যায় তুলি রায়
by
·
Published
· Updated
ভারহীন
আটপৌরে কথকতার আড়ালে যে আলপনা লুকিয়ে থাকে তা কখন কখন যেন জলছবি হয়ে যাচ্ছিল। আর ততবার মোছার জন্য হাতটা নিশপিশ করছিল। পছন্দের ঝুলবারান্দায় মানিপ্ল্যান্টের শিশিতে জমছিল পিঁপড়ের ডিম।জল পাল্টানোর সেসব ধুয়ে যেত প্রতিবার। তখন কেমন যেন একটা অপরাধবোধ কাজ করতো। মিনি সাউন্ডবক্স চার্জার’টা রোজ যে কোথায় হারিয়ে যেত। পরে খুঁজে পাওয়া যেত ঠিকই তবু লুকোচুরি’টা জারি থাকতে। রোজ জানালায় টোকা দিয়ে যাওয়া পাখি’টা কদিন হলো আসছে না। নিয়মিত ওর হাজিরা কবে যে সকালের অভ্যেস হয়ে গেছিল। অভ্যেস মতো ঝুলনারান্দায় রোজ রাতে চুল আঁচড়ানোর সময় মনে হতো কেউ যেন দেখছে। কখনও নিচের রাস্তা থেকে, কখনও জানালার কাচে, কখনও সরু করিডোর থেকে। ওয়াসরুমে’র কাঁচেও কে যেন জলছাপ রেখে গেছিল কদিন আগে। মুছতে গিয়েও মোছা হয় নি, ওটুকু সংযোগ নাহয় থাক, দূরত্বটুকু বজায় রেখে। দুপুরের ঘুম জুড়ে এলে শব্দেরা জেগে যায়, বর্ণেরা জীবন্ত হয়ে হেঁটে বেড়ায় পৃষ্ঠা বরাবর। ঝিম ধরা পাহাড়ী রাস্তাটা বার্চপাইনের বদ্বীপ এঁকে যায়। পায়ে পায়ে এসে দাঁড়ায় পরিযায়ী সময়। নরম রোদ সবে গালিচা পাতছে ধোঁয়ামাখা চা’য়ের কাপে। অার আমি তখন বিচ্ছিন্ন হচ্ছি একক দ্বীপের মত। প্রতিটি পাখির ডাক আলাদা শুনবো বলে। শব্দ-স্পর্ষ-গন্ধ আঁচলে মাখবো বলে…টুপ টুপ আওয়াজ করতে করতে সিঙ্ক’টা এক সময় থেমে যায়। একটা গন্ধ এগিয়ে আসছে… খুব চেনা! কেউ কি দেখছে? মানিপ্ল্যান্ট ও তার শিশিটা তো যথাস্থানেই! .. তাহলে?… টুপ টুপ আওয়াজ’টা আবার শুরু হলো।নাহ্। চুল আঁচড়ানোর সময়ে’র অনুভূতিটা জেগে যাচ্ছে। জড়িয়ে আসছে জিভ। আলগা হয়ে আসছে প্রতিটি অস্থিগাঁট। হালকা হচ্ছি ক্রমশ পালকের মতো …