• Uncategorized
  • 0

অণুগল্প ১ বৈশাখের বিশেষ সংখ্যায় গৌতম কুমার গুপ্ত

পুলিশ সাহেব

পাশবই  এ টি এম কার্ড নিয়ে একটি ছোট্ট ব্যাগে ঢুকিয়ে পরাগ সেনগুপ্ত হাঁটা দিলেন ব্যাঙ্কের পথে।হাঁটা পথ। দুর্গাপুরের ফ্ল্যাট থেকে মিনিট দশেকের রাস্তা।গেট দিয়ে কিছুটা এগিয়ে যেতেই একটা ফোনকল এল।হ্যালো,সাজাজ ফাইন্যান্সসে বল রহা হ্যায়।
-হাঁ বলিয়ে।
-আপ সাজাজ ফাইন্যান্স মে লোন লিয়ে থে
-হাঁ জী লেকিন দো সাল পহলে হাম লোন রিপে কর দিয়া হ্যাঁয়,ফির ইনঅ্যাকটিভ ফিস কাট রহা হ্যায় দেড়শো রূপিয়া।হাম অ্যাকাউন্ট ক্লোজ করনে কি লিয়ে মেল মে জানকারী দিয়া থা।
-হাঁ,ঠিক হ্যায়,আপকো close করনে কে লিয়ে পা্ঁচ রূপিয়া ডিপোজিট করনা হ্যায় আভি।
– ঠিক হ্যায়।I am agree.।আপ একাউন্ট নাম্বার বাতা দিজিয়ে।
পরাগ ফ্ল্যাটে এসে ছেলে স্বরাজকে ধরিয়ে দিল ফ্ল্যাটটা।দ্যাখ তো সাজাজ ফাইন্যান্ম থেকে ফোন করেছে,যে ভাবে বলছে পাঁচ টাকা জমা করে দিলে একাউন্ট ক্লোজ হয়ে যাবে।
স্বরাজ সাজাজ ফাইন্যান্সের ও প্রান্তের লোকটির নির্দেশ  অনুযায়ী অন্য একটি কম ব্যালান্সের একাউন্টের নাম্বার ও ও টি পি জানাল।সঙ্গে সঙ্গে ট্রু কলার দেখতে গিয়ে ধরা পড়ল লোকটি ফেক।ততক্ষণে ও যা করার করে নিয়েছে।মিনিট খানেকের ভেতর ব্যাঙ্কে গচ্ছিত বারো হাজার টাকা ফাঁকা।মাথা চাপড়াতে লাগল পরাগ সেনগুপ্ত।সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঙ্কে এবং সাজাজ ফাইন্যান্সের কাসটমার কেয়ারে ফোন করে জালিয়াতি ব্যাপারটা জানাল। ওরা কোন দায়িত্ব
নিতে অস্বীকার করল।ব্যাঙ্ক ম্যানেজার থানায় জানাবার পরামর্শ দিলেন।
অগত্যা পরাগ স্বরাজকে নিয়ে নিকটবর্তী এ জোনের থানায় গেলেন।
পুলিশের বড়বাবু নেই থানায়।কোন কাজে বেরিয়েছেন।একটি সিভিক মেয়ে পুলিশ বড় একটা রেজিষ্টারে লেখালেখি করছে।চারপাঁচটা ফোন একসঙ্গে বেজে চলেছে।মেয়েপুলিসটি খুবই ব্যস্ত।অন্ততঃ দশ মিনিট টেবিলের ধারে দাঁড়িয়ে রইলেন পরাগ ছেলেকে নিয়ে।একসময় মেয়েটি জানতে চাইলেন,, -কি ব্যাপার বলুন।
পরাগ সমস্ত ব্যাপারটা খুলে বললেন।
– শুনুন এখানে কিছু হবে না,বড়বাবুও তো নেই,সেকেন্ড অফিসার মাইতি সাহেব বাইরে ডিউটিতে আছেন,ওনাকে বলে দেখতে পারেন।
পরাগ বাইরে এসে একটি লোকের সঙ্গে গল্পরত অবস্থায় মাইতি সাহেবের কাছে গিয়ে বললেন,- স্যার্ আপনার সঙ্গে একটু কথা বলতাম যদি অনুমতি দ্যান।
মাইতি সাহেব বললেন,যান আসছি।
মাইতি সাহেব এবার লোকটিকে সঙ্গে নিয়ে ঝালমুড়ি খেতে লাগলেন।
পরাগ ছেলেকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তো আছেনই।কি করবেন পুলিশ বলে কথা,বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা।
অন্ততঃ পঁয়তাল্লিশ মিনিট পর মাইতি সাহেব হেলতে দুলতে দুলতে এলেন।
সব শুনে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে হাতের মুঠো দিয়ে গোল করে ডান হাতের একটা আঙুল ঢুকিয়ে একটা অশ্লীল ইংগিত করলেন- দুটো ঠোঁটে দাঁত চেপে বললেন,মারিয়েছে…
 শুনুন ওর কাছে ঠিকানা ফোন নং নিয়ে আসানসোল সাইবারে যান।এখানে কিস্যু হবে না।
পরাগ সেনের কান গরম হয়ে উঠেছিল মাইতি সাহেবের আদিম ইঙ্গিতটি দেখে ছেলে স্বরাজ আর সামনে থাকতে পারে নি।আগে আগেই হাঁটতে শুরু করল।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।