ঘুম ভাঙতেই বারে যেতে চাইল অনিমেষ। রোহিত বিরক্ত হয়– রাতের নেশাটা এখনও কাটেনি দেখছি তোর। সক্কালবেলায় কোনো বার খোলে? ঘুমো। মাতাল একটা!
‘মাতাল’ শব্দে রাগ হল অনিমেষের। গ্রামের ছেলে হতে পারে, কিন্তু সে গাঁইয়া নয়। তাদের গ্রামেও দু’হাত ছাড়া মদ দোকান আছে । ‘বার’ নাম দিলেই যেন সব সাধু!
গতরাতের ঘটনাটা কিছুতেই যাচ্ছে না মাথা থেকে, ঘুরপাক খাচ্ছে। নেশাটা কাল বেশ জমে গিয়েছিল ক’পেগ নিয়েই। হাসতে হাসতে ওয়েটারকে জিজ্ঞেস করে – দাদা, বয়স কতো আমার? কমবয়েসি এক ওয়েটার বলে– থার্টি সিক্স স্যার। আই মিন ছত্রিশ।
–ক’পেগ নিয়েছো গুরু? থার্তি সিক্স? শালা তুমি মাল খাওয়াও, নাকি আগেই নিজে ঢোক মেরে দাও? ছততিরিশ। এখনো বিয়েই হলো না, ছততিরিশ মারাচ্ছে!
রোহিত সামলানোর চেষ্টা করে অনিমেষকে। পারে না। পাশের আর একজনকে পাগড়াও করে। দাদা, বয়স কতো আমার? অনেকক্ষণ মুখের দিকে তাকিয়ে ওয়েটারের জবাব – তুমি আমার ছেলের বয়সী। আবার এক প্রশ্ন করে অনিমেষ। উত্তর–তুমি আমার ছেলের বয়সী বাবা। তারপর আর কথা বলেনি অনিমেষ। বেরিয়ে আসে বার থেকে।
আজ সকালে সেই ঘটনা মনে আসছে। অস্থির লাগছে খুব। রাস্তায় বেরিয়ে যায়। কিন্তু বার বন্ধ। আশেপাশে জানতে চায় কখন খুলবে। পাশের দোকানে একজন ফোড়ন কাটে–রাতে বৌদির সাথে ভীসণ পোবলেম, তাই দাদা সক্কাল সক্কাল রঙিন হবে। কান গরম হয়ে যায় অনিমেষের। পায়চারি করে এদিক ওদিক। বার খুলতেই এক নিশ্বাসে দৌড়। চিৎকার করে– ওয়েটার। ছুটে আসে কয়েকজন। –হ্যাঁ স্যার কী লাগবে বলুন। অনিমেষ থতমত খায়। –না মানে একটু ডেকে দেবেন? না থাক। বলে দেবেন প্লিজ–আমি আর কোনোদিন এসব ছোঁবো না। ওয়েটাররা অবাক হয়ে জানতে চায়– মানে? কাকে? অনিমেষ বলে– যে ঈশ্বর এই বারে থাকেন।