• Uncategorized
  • 0

অণুগল্প ১ বৈশাখের বিশেষ সংখ্যায় প্রিয়াঞ্জলি দেবনাথ

প্যাংলো

তিনদিন ধরে কারেন্ট নেই। মোমবাতি জ্বালিয়ে খেতে বসেছিল ওরা তিনজন। হঠাৎ দরজায় তিনটে টোকা। কম্পমান মোমবাতির আলোয় স্তম্ভিত হয়ে যায় ওরা। পাত ছেড়ে উঠতে পারে না কেউ। ধোঁয়া ওঠা ফ্যানাভাত। বাইরে তখন অমাবস্যার দ্বিপ্রহর। ক্ষুধার্ত তিনটে মানুষ দু’দিন পর খেতে বসেছে। এখনো মুখে গ্রাস ওঠেনি কারো। সুলতান ভাবে উঠবে কী উঠবে না। এমন সময় দরজায় আবার তিনটে টোকা। সুলতান ভয়ার্ত পায়ে এগিয়ে যায় দরজার দিকে। আস্তে আস্তে দরজাটা একটু ফাঁক করে দেখে। বাইরে চারিদিক সুনসান। কোথাও কেউ নেই। যতদূর চোখ যায় শুধু দুর্ভিক্ষ আর অনাহারের চিহ্ন। সুলতান তাড়াতাড়ি দরজা বন্ধ করে আবার এসে বসে। লঙ্কা টিপে ভাত মাখে ওরা। কেউ টের পাওয়ার আগেই জলদি শেষ করতে হবে।
আবার তিনটে টোকা। ভয়ে সিঁটিয়ে ওঠে তিনটে মুখ। ভাতের থালা লুকিয়ে সুলতান আবার দরজা খোলে। চারিদিক নিস্তব্ধ অন্ধকার। হঠাৎ চমকে ওঠে সে। গোলাপি ছায়ার মতো কী যেন একটা দাঁড়িয়ে আছে সামনে। কিছুটা পশু কিছুটা যেন মানুষের অবয়ব। ছেলে রাজু এবার এগিয়ে এসে দাঁড়ায় বাবার পাশে। দুফুটিয়া গোলাপি এই প্রাণীটাকে বড্ড চেনা লাগে তার। হঠাৎ বলে ওঠে,—-
—- প্যাংলো।
গল্পের বইয়ে পড়া পেলিক্যাঙ গ্রহের বাসিন্দা প্যাংলো। অবিকল এমনই দেখতে যেন। রাজুর চোখ উজ্জ্বল। আর সুলতান বিস্মিত চোখে তাকিয়ে থাকে।
এতক্ষণে প্রাণীটিও আরো একটু এগিয়ে আসে তাদের দিকে। ভাঙা ভাঙা বাংলায় সেও হঠাৎ যেন একটা অদ্ভুত স্বরে বলে উঠল, —-
—-এ-ক-টু খে-তে দে-বে-ন– ?
সুলতানের ঘর থেকে লুকানো ফ্যানভাতের ধোঁয়া তখন চৌকাঠ ছুঁয়েছে।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।