• Uncategorized
  • 0

অণুগল্প ১ বৈশাখের বিশেষ সংখ্যায় দেবযানী বসু

মেঘ জমেছে

অনেক বছর বাদে দেখা হল মানবীর সঙ্গে রঞ্জিতার। সেই কোন কলেজদিনের স্মৃতি বুকে গভীরভাবে গাঁথা ছিল মানবীর। ফেসবুকের আগের যুগের কথা। বিয়েতে যা নিমন্ত্রণ রক্ষা  করেছিল মানবী। তারপর আর যোগাযোগ নেই ফোন নেই চিঠি নেই। ইদানিং ফেসবুক অতীতের হারানো বন্ধু খুঁজে পাবার এক উপায় হয়েছে। রঞ্জিতার ওয়াল স্টাডি করে মানবী বুঝেছে রঞ্জিতা খুব ধনী। আর মানবী গানের টিউশানি করে। স্বামী নানান ধরনের কাজ করে। রঞ্জিতা অবশ্য থাকে মুম্বাইতে। রঞ্জিতার ঝাঁ চকচকে ফ্ল্যাটের ছবি দেখে মানবী। মানবী গানের অনুষ্ঠানের ছবি দেয় আর বাড়িঘরের ছবিতে ঔজ্জ্বল্য থাকলেও দামের আভিজাত্য থাকে না। থাকে নিজের ছেলের ছবি। বাংলা মাধ্যম হলেও উজ্জ্বল ছাত্র সে। রঞ্জিতা ক্যামেরা বিলাসিনী। স্বামী নেভিতে। রঞ্জিতার তোলা ছবি পুরস্কার পায়। দেশে-বিদেশে আমন্ত্রণ পায়। তবু দুই বন্ধু কলেজ জীবন নিয়ে নস্টালজিক। রঞ্জিতাকে কখনো অহংকারী বলে মনে হয় নি মানবীর। রঞ্জিতা কোলকাতায় আসবে জানায়। এবার নন্দনে একটা ইভেন্টে যোগদান করতে আসছে। ফোনে কবে দেখা করবে মানবী দিন ঠিক করে নিল। ঠিকানা দিয়ে দিল ভবানীপুর এলাকার একটা নামী হোটেলের।
মানবী একটা তাঁতের শাড়ি কিনেছে রঞ্জিতাকে দেবে বলে।
ঘন্টাখানেক স্বামী সংসার প্রফেশন নিয়ে   কথাবার্তা হল ওর রুমে বসে। হাসাহাসি করল ওরা পরীক্ষার হলে একে অপরকে টুকলি করার সুযোগ দিত তাই নিয়ে। রঞ্জিতার সন্তান নেই। তবে একটা বাচ্চা অ্যাডপ্ট করার চেষ্টা করছে জানাল। রঞ্জিতা অনেক খাবার অফার করল।মানবী শুধুই চা বিস্কুট খেল। জানাল হোটেলে ঢোকার সময়ে দারোয়ান মানিকদা ওর পাড়াতেই থাকে। রঞ্জিতা ওকে একটা সেন্টের শিশি উপহার করল। মানবীও শাড়িটা দিতে খুব আগ্ৰহের সঙ্গে গ্ৰহণ করল।
অনেকদিন পর পূর্ণ সিনেমার স্টপেজে মানিকদার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল মানবীর। সঙ্গে তার বৌ। পরণে হুবহু সেই তাঁতের শাড়িটি। বাঃ শাড়িটা খুব সুন্দর বলাতে মানিকদা গালভরা হাসি নিয়ে বলল : আপনি যে দিদিমণির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তিনিই এই শাড়িটা বখশিস দিয়েছেন আমাকে।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *