রাজপুর, কলকাতার কাছের একটা শহরতলি বলতে পারেন l সেখানেই থাকেন অসীম সেন,পেশায় তিনি একটি বেসরকারি সংস্থার কেরানী l লকডাউনের জেরে তার অফিস বন্ধ আজ প্রায় এক মাস,সরকারি নির্দেশ থাকলেও, এপ্রিলে তার বেতন হয়নি l ব্যাঙ্কের মেসেজ আর ফোন দুটোই এসেছে অনাদায়ী EMI- এর জন্য,কিন্তু পরশু পয়লা বৈশাখ তার ছেলের বায়না পোলাও খাওয়াতে হবে আর একটা মাস্ক কিনে দিতে হবে l ঘরে অসীমবাবুদের চাল বাড়ন্ত,আজকের রাত টা হবে কোনো রকমে l এদিকে পাড়ার অমলমুদি টাকা না পেলে আর নতুন করে মাল দেবে না বলেছে,গত মাসের বাড়ি ভাড়া দিতে অসিম বাবু তার স্ত্রীর শেষ গয়নাটাও বন্ধক দিয়ে ফেলেছেন l ভয়ে ভয়ে গেলেন অমলমুদির দোকানে, গিয়ে দেখলেন পাড়ার প্রোমোটার রাজীব বসাক আজ বিগবাজার শপিংমল ছেড়ে, মুদির দোকানে!অমল কে হুকুম করছেন এমন ভাবে গুছিয়ে দে যাতে; মাস খানেকের মনে যেন বেরোতে না হয় l অসিম বাবু আরো দেখলেন পাশের বস্তির লোকেদের জন্য চাল-আলু প্যাকেট করাচ্ছেন রিয়েল এসটেট কিং,নতুন বস্ত্রও রয়েছে, বেশ কিছুক্ষন দোকানে দাঁড়িয়ে চলে গেলেন অসিম বাবু, আকাশে চাঁদ টা তখন ক্রমশ ছোটো হচ্ছে অমাবস্যা আসছে, মধ্যবিত্তের জ্বালা বলে আবার জানতে ফিরে গেলেন,”আচ্ছা দাদা আপনি কাল কখন দেবেন এগুলো?”
উত্তর এলো,সকাল11 টায় মিডিয়ার লোকেরা আর ফটোগ্রাফার আসবে,ওরা এসেগেলেই তারপর দেবো,কিন্তু তোমার কোনো লোক আছে নাকি?সাহায্য দরকার- টরকার ?কাল তাহলে আসতে বলো তাকে!
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন