• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক মুড়িমুড়কি -তে সুদীপ ভট্টাচার্য (পর্ব – ২)

বেড়াতে চলুন বল্টুদার সঙ্গে – ২

অবশেষে যাত্রার দিন উপস্থিত। বল্টুদার এমনিতে টেনশন হয় না, কিন্তু এত জনকে নিয়ে যখন যাচ্ছেন,  তখন চিন্তায় আছেন তিনিও। হোটেল বুক করে নিয়েছেন, রান্নার লোক নিয়েছেন সঙ্গে। হাঁড়ি, কড়া, তেল, নুন এমনকি আলু পর্যন্ত তুলে নিয়েছেন বাসে।

সন্ধে নাগাদ বাস ছাড়লো শ্যামবাজার থেকে। ভর্তি বাস। রান্নার লোক, দু এক জন হেল্পার বাসের মেঝেতে আরাম করে বসে। বাসের পেটের ভিতর মালপত্র। বল্টুদা একেবারে দরজার কাছেই। তাতে করে সুবিধে হয় সবাইকে দেখে রাখার। বৌদি বাসের মাঝামাঝি ভালো একটা জায়গায়। এটুকু অ্যাডভান্টেজ বৌদির নাকি প্রাপ্য, বারবার করে একথাই বুঝিয়েছেন বল্টুদাকে। হেমন্তের রাত। বাসের জানালা অল্প করে খোলা। সবাই বেশ আনন্দে আছেন। যতবারই হোক না কেন বাঙালির কাছে পুরী প্রতিবারই অন্যরকম, আলাদা।

গাড়ি এগিয়ে চলেছে জাতীয় সড়ক ধরে। রাত হচ্ছে আস্তে আস্তে। গান চলছে গাড়িতে। গলা ছেড়ে গাইছেন কেউ কেউ। সুর থাকুক না থাকুক, আনন্দ আছে।

ঘন্টা চারেক পথ পেরিয়ে গাড়ি যখন ওড়িষার কাছাকাছি, ঘড়িতে সময় তখন রাত দশটা। এবার রাতের খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করতেই হয়। তার উপরে করবো বললেই তো হয় না, সব কিছু নামিয়ে রান্নার আয়োজন করার একটা ব্যপার থাকে। যদিও বল্টুদার এটা প্রথম বার ট্যুরের আয়োজন, কিন্তু বেশ গুছিয়েই করছে সবকিছু। পরিচিত একজনকে দিয়ে রাস্তার ধারের একটি ধাবার সঙ্গে কথা বলে রেখেছিলো। এখানকার টয়লেট, বসবার খাটিয়া এ সব ব্যবহার করবে ওরা। কিছু টাকা এ বাবদ দিলেই হবে। রান্নাবান্না তো নিজেদের হাতেই।

বল্টুদা একটা বিষয় খুব ভালো করে বোঝে, কোথাও ঘুরতে নিয়ে গিয়ে কোন জায়গা দেখাও না দেখাও, খাওয়াটা দারুন খাইয়ে দিলেই হলো। পাবলিক খুশী।

রান্নার আয়োজনে রোগা, পাতলা মত মানুষটি, দেখতে মজার কিন্তু বেশ সিরিয়াস। গনেশ দাস, উড়িষ্যার লোক।  রান্নার হাতটি চমৎকার। ঝটাঝট বাসনপত্র রেডি করে বসিয়ে দিলো রান্না। বাসে আসতে আসতেই গনেশ ঠাকুরের লোকজন রেডি করে রাখছিলো সব। বিশেষ কিছুই নয়, লুচি, মাংস এবং মিষ্টি। স্যালাডে শশা আর মূলো। পেঁয়াজ নেই,অল্প কিছু আনা হয়েছে এত দামের জন্যে। বল্টুদা কিছু মূলো আর হিং নিয়ে নিয়েছে রান্নার ঠাকুরদের উপদেশে। এসব রান্নায় পেঁয়াজের পরিবর্তে দেওয়া যায়।

চাঁদনী রাতে রাস্তার ধারের ধাবায় খাওয়া দাওয়া। সে এক অপূর্ব স্মৃতি। আগে এমনটা খুব দেখা যেত। আজকাল বাসে করে আর ঘুরতে যায়ই বা কজন।

বল্টুদা নেশা করবেন না কদিন। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছেন। কিন্তু বাকী যাত্রীদের আদেশ দেবেন সাধ্য কোথায় তার। তাই সবটাই সময়ের উপর ছেড়ে দিয়েছেন বল্টুদা। রাতের খাওয়া শেষ। এবার এগিয়ে চলার পালা। পুরীতে পৌঁছতে সকাল হয়ে যাবে। তাই বাসে উঠে যে যার মত সিটে এলিয়ে দিলেন মাথা, বল্টুদা জেগে রয়েছেন। হঠাৎ…….

(চলবে)

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।