• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক মুড়িমুড়কি -তে সুদীপ ভট্টাচার্য (পর্ব – ১০)

বল্টুদার সঙ্গে বেড়াতে চলুন – ১০

বল্টুদার দলে অনেকের সঙ্গে একটি কলেজে পড়া মেয়েও এসেছিলো। তার নাম নদী। নদীর জন্ম বেড়াতে গিয়ে, রেনারসে গঙ্গার ধারের এক নার্সিহোমে। প্রি-ম্যাচুয়োর বেবি ছিলো নদী। বাচ্চা হওয়ার আগে কয়েকদিনের জন্যে গঙ্গা দর্শনে গিয়েছিলেন নদীর বাবা,মা। গঙ্গায় নৌকায় চেপে আরতি দেখছিলো তারা। হঠাৎ করেই ব্যাথা ওঠে। তাড়াতাড়ি নার্সিহোমে ভর্তি কররে হয় এবং নদীর জন্ম হয়। এমন এক সুন্দর ভক্তিপূর্ণ জায়গায় নদীর জন্ম এবং নদীর বুকে ভাসতে ভাসতে আগমন বার্তা, তাই তার নামকরন করা হয়েছিলো নদী।
নদী যাদবপুরে পড়ে। পড়াশোনায় বেশ ভালো। ক্যারাটেতে ব্ল্যাক বেল্ট,সাঁতারে চ্যাম্পিয়ান, ভালো গান করতে পারে,এককথায় সব দিক থেকেই পারদর্শী। নদী এসেছে এবার বল্টুদাদের দলের সঙ্গে পুরী বেড়াতে।
এহেন নদী বেশ চনমনে, মিনমিনে নয়,বরং প্রতিবাদী বলা চলে। অন্যায় মুখ বুজে সহ্য করেনা সে। বেশ কিছু ঘটনা তার সাক্ষী। হয়েছিলো কি নদী সেবার যাদবপুরের ক্যান্টিন থেকে বেরচ্ছে। ক্যান্টিনের বিপরীতে যাদবপুর কম্যুউনিটি রেডিওর অফিস। যাদবপুর ৮ বির দিকের গেটের পাশেই। নদী লক্ষ্য করছিলো একজন মাঝারিমাপের যুবক বেশ কিছুক্ষন ধরে আড়চোখে দেখেই চলেছে তাকে। এসব ব্যপার মেয়েদের চোখ এড়ায় না। বিপদের আগেভাগেই আঁচ পায় তারা। বুঝতে পারে উদ্দেশ্য কি। সে কারনেই নদী একটু সচেতন হয়ে গেছিলো সেদিন। ইচ্ছে করলেই এক ফোনে বন্ধুদের ডেকে আনতে পারত নদী,কিন্তু সেটা সে করলো না। ক্যান্টিনের ছেলেগুলোকেও ডেকে নেওয়া যেত,নদী সেটাও করলো না। নদী শুধু লক্ষ্য করে যেতে থাকলো ছেলেটি কি করে।
ওদিকে ছেলেটিও ক্রমশ সাহসী হয়ে উঠছে। একা মেয়ে, ফাঁকা চারপাশ। প্রায় সন্ধ্যের দিক। ছেলেটি এগিয়ে যেতে থাকলো নদীর দিকে। নদী সবে ক্যান্টিনের চৌহদ্দি থেকে রাস্তায় নেমেছে। ছেলেটির চোখ নদীর সারা শরীর ঘুরে বেড়াচ্ছে।লোভী পুরুষের চোখ। এ চোখ নদী চেনে। নদী ভয় পায় না। যতটা পারে সহজ থাকার চেষ্টা করলো নদী। ছেলেটি ক্রমশ এগিয়ে আসছে। পাশের গাছ থেকে একটা কাক ডেকে উঠলো। এই ডাকে কেমন আতংক মেশানো। হাওয়া দিলো আচমকা….বেশ জোরে……
যাঃ……..কি কান্ড কি কান্ড। নদী আজও ভাবে আর নিজে নিজেই হাসে। এমন লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে পরেনি কখনো সে। ব্যপরটা হয়েছিলো এমন…. যে নদী রাস্তায় হাঁটছে,আর সেই যুবক নদীর দিকে এগিয়ে আসছে…হঠাৎ হাওয়া দিলো। আর দিলো তো দিলো,,নদী লোকটার দিকে তাকিয়ে দেখে যে মাথার পরচুলা হাওয়ায় উড়ে গেছে,পুরো টাক। আর সেই পরচুলার পিছু পিছু লোকটা দৌঁড়েই চলেছে,দৌঁড়েই চলেছে।
এমন অপ্রস্তুত নদী কোনদিন হয় নি। কক্ষনো না। তাই কি করবে ভেবে না পেয়ে ভদ্রলোকের কাছে গিয়ে বললো –“দাদু,পেলেন?”
লোকটা অপ্রস্তুতে পরে গিয়েছেন আরো,যে চোখে লোভ ছিলো,সে চোখে এখন লজ্জা। নদীর কথার উত্তর না দিয়েই,সবেমাত্র উড়ে যাওয়া চুল তুলে নিয়ে দে ছুট,দে ছুট…..নদী শুধু হেসেই যাচ্ছে,হেসেই যাচ্ছে।
এহেন নদী বল্টুদার বৌয়ের খোঁজে বেরিয়ে পরেছে। কোথায় গেলো বৌদি?

(চলবে)

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।