বাবাকে পত্র
আজ সকালে আমার অনেকদিনের ডায়েরীটাতে আমার পুরোনো একটা চিঠি পেলাম…
ভাবনা গুলো ফিরে গেল পুরোনো সময়ে….
আমি আর বাবা প্রায় চিঠি লিখতাম….
বাবার অধিকাংশ চিঠিতেই থাকতো উপদেশ আর কি করবো, কি করবো না ইত্যাদি…
আমিও লিখতাম- সিগারেটটা কমাও… নাহলে আমিও শুরু করবো..হেন-তেন..
আমি নিশ্চিত থাকতাম বাবা আমার চিঠি পড়ে উল্টো সিগারেট বাড়াতেন…
কারণ সেসময় আমার বাবার সামনে চিন্তার পাহাড়…
ছোট-ভাই-বোন, পরিবারের হাল ধরে একসময় নি:স্ব বাবা দেখতে পান নিজের ছেলেমেয়েদের বেলায় কিছু করতে পারছেন না….
আমরা ভাই-বোনরা খুব বুঝতাম, বাবার প্রাণান্ত চেষ্টা…
সিগারেটের কাছে একসময় বাবার হৃদপিন্ডটা হার মানলো…
এখন বাবার শ্বাস-প্রশ্বাস পেইস মেকার নামক যন্ত্রের কাছে বন্দি…
লম্বা সময় মেডিকেল থেকে বাবা যখন অনেকটা সুস্থ একদিন আমাকে বললেন, আমি তোকে খুব বেশি কিছু দিতে পারিনি, তবে তোর জন্য সাংসারিক বড় ধরনের কোন চিন্তা রেখে যাচ্ছি না… আমার তখন হাউমাউ করে কান্না পেল…
কিভাবে বাবাকে বুঝাই, বাবা- আমার পৃথিবীতে তোমার দানটাই তো সবচেয়ে বড়…
এখনও বড় সময় পার করে আমি বাড়ি গেলে বাবা আর আমি বেশ কয়েকবার পরস্পরকে জড়িয়ে ধরি…
বাবার গায়ের ওমটা নিজের ভেতর অনুভব করার একটা প্রচেষ্টা…
আমার কাকাতো ভাইরা বাবা আর আমার এমন কান্ডে হাসে…
আমার তখন ওদের প্রতি ভীষন মায়া হয়… ওদের বাবাকে ইচ্ছা করলেই তো ওরা…
অনেকদিন আমি আর বাবার চিঠি লেখালেখি হয়না…
আজই বাবাকে একটা চিঠি লিখবো….
আর আমাদের বাবাকে আমরা বাপি-ড্যাড-বাবু নাহ… বাবা-ই ডাকি….
চিঠির শুরুতেই প্রিয় বাবা দিয়েই শুরু করবো…