প্রচন্ড মোটা এক মহিলা। চর্বির পাহাড়। চওড়া কপালে বড় লাল টিপ। প্রচুর সিঁদুর দিয়ে সিঁথির প্রস্থ আড়াল করা হয়েছে। পাতলা চুল। এককালে কোঁকড়ানো ছিল। অধিকাংশ পাকা চুলেও তার অল্প আভাস। তাই দিয়েই খোঁপা। চশমার আড়ালে বড় বড় চোখদুটো দেখে খুব চেনা লাগলেও…
‘এ কিরে, চিনতে পারছিস না? আমি মুন্নি’।
শোনামাত্র টুম্পা থমকে যায়। মুন্নির এই চেহারা দেখে তার চেনার কথাও নয়। বন্ধু মিঠুর পঁচিশ বছরের বিবাহবার্ষিকীতে আবার দেখা। অনেকের সঙ্গেই। প্রায় তিরিশ বছর পরে তো হবেই। তারও বেশি হয়ত। স্মৃতি এখন খুচরো প্রতারণা করে। সব মুখ মনে পড়ে না। সাতচল্লিশ বছর বয়সে দাঁড়িয়ে মনে হয়, কতকাল আগের কথা। গতজন্ম?
‘তুই কেমন’?
‘এই তো। চলছে রে। কাকিমা কেমন আছেন?’
‘ভালই। বয়স হলে যেমন থাকে… সেইরকম’।
‘তোর কাছেই এখন?’
‘হ্যাঁ। আমার কাছেই। তোর ছেলে না মেয়ে? কত বড় হল রে?’
মুন্নি তার ছেলের পড়াশোনা কাজকর্ম নিয়ে বলতে থাকে। হঠাৎ অতি উৎসাহী। একমাত্র ছেলের অনেক সাফল্যের খতিয়ান। ওর অনর্গল কথা বলার ধরনে টুম্পা নিশ্চিত হয়, এটাই মুন্নি। মুন্নিরা থাকত তিনতলায়। ওদের ঠিক ওপরের ফ্ল্যাট। এত মোটা হয়ে গেছে? ইস! চেনাই যাচ্ছে না। অথচ কি ছিপছিপে ফিগার ছিল। তখন জিরো ফিগার বা আওয়ার গ্লাস জাতীয় শব্দগুলো ওদের ডিকশনারিতে ছিল না। এখন মনে পড়ে, মুন্নি ছিল ওই আওয়ার গ্লাস। সরু কোমরের গড়ন নিয়ে বন্ধুমহলে একটা চাপা গর্ব ছিল ওর।
সেই ছেলেবেলার বন্ধুরা। পাড়ার বন্ধুরা। কত বছর পরে আবার একজোট। এমন হয় না সাধারণত। ছেলেবেলার পাড়ার বন্ধুদের কেউ এমন খুঁজেপেতে ডাকে না। মিঠুর পক্ষেই সম্ভব। ফেসবুক ঘেঁটে ও একা সবাইকে খুঁজে বের করেছে। এক বছর ধরে একটু একটু করে যোগাযোগ। অদ্ভূত ব্যাপার, সবাই মিলে টগবগ করে উঠেছে এই উপলক্ষে আবার দেখা হবার আশায়। রুমকি, টুম্পা, মুন্নি, বাপন, রাজু, মান্তু, হিরণ, পাপন… সব ছেলেবেলার বন্ধু। সব ডাকনাম। একরাশ দস্যিপনা। নিষ্পাপ ছেলেবেলা।
সরকারি আবাসনের সাতের দশক। শ্রেণিবিভাজন ছিল না কোথাও। অসম গণবন্টন নয়। অর্থনৈতিক অসাম্য তো নয়ই। রাইটার্স বিল্ডিং তখন অঢেল করণিকের একমাত্র গন্তব্য। আবাসনের পুরুষেরা সকলেই কেরানি। এরা অধিকাংশই উদ্বাস্তু। ছিন্নমূল। অগত্যা সদ্য চাকরি পেয়ে ভাড়াবাড়ি ছেড়ে সরকারি আবাসনের নিশ্চিন্ত দরজায়। প্রত্যেকের সংসারে প্রাপ্তবয়স্ক বাবা-মা। সেলাই-জানা গৃহবধূ নিয়ে তাদের নতুন সংসার। একটি বা দুটি শিশু। কচি-কাঁচা। বড়জোর চার-পাঁচ বছরের ছোট-বড় সকলে। সবার বাপমায়ের একটা করে দেশের বাড়ি আছে। সেই বাড়ির দাওয়ার গন্ধ টেনে এনে দুপুরবেলায় বারান্দায় জানালায় দীর্ঘশ্বাস ভাসিয়ে দেওয়া। ভাল রান্না হলে কাঁসার বাটি যায় পাশের বাড়িতে। ফাঁকা বাটি ফেরত দেওয়ার নিয়ম নেই। লক্ষ্মীপুজোর প্রসাদ ভাগাভাগি। বিজয়ার নাড়ু-নিমকি-ঘুগনির ঢালাও আয়োজন। দুর্গাপুজোর অঞ্জলি মানেই চোখের ইশারায় ঝরে পড়ে কুচো দোপাটির গোলাপি আভা। দোলের দুপুরে সেই গাল ছুঁয়ে যায় অনভ্যস্ত আবির। শীতের দুপুরে নতুন গিন্নিদের উলের কাঁটার ডিজাইন বিনিময়। বাচ্চাদের সোয়েটারে খরগোশ, হাতি কিংবা গোলাপের প্যাটার্ন। কমলালেবুর খোসায় তখন রস একটু বেশিই থাকত। হঠাৎ জোরে চিপে বন্ধুর চোখে জল আনলে কেউ বকত না। যত তাড়াতাড়ি আড়ি হত, ভাব হত আর চেয়েও দ্রুত। গাদি অথবা কবাডি খেলায় ব্যাড টাচ বেশিই ছিল। কিন্তু লিঙ্গ বিভাজন নিয়ে কেউ জ্ঞান দিতে আসত না। লাল্টুর সঙ্গে পুতুলের বিয়ের তত্ত্ব সাজানো কিংবা রাজুদের বারান্দায় ঝুলন সাজানোর মুহূর্তে বড়রা অবাঞ্ছিত হয়ে নাক গলাতেন না। কোর্ট কেটে কিতকিত খেলার নেশায় দুপুর গড়িয়ে গেলে কান মলা দিয়ে বাড়ি পাঠানোর অনেক কাকিমা-জেঠিমা ছিল। তখন আঙুলের সব কটা নখের কোনে সাদা ছোপ। ক্যালসিয়ম আর ভিটামিন ডি ট্যাবলেট চেনার চেয়ে সন্ধ্যার আকাশে বকের ঝাঁক চেনা ছিল বেশি জরুরি। হাউজিঙের মধ্যে অঢেল ছড়ানো জায়গায় কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, পলাশ, জারুল, অমলতাস ফাল্গুন চিনিয়েছে। ভ্যালেন্টাইন ডে ছাড়াই লোকে ধুপধাপ প্রেমে পড়েছে। মিনুকাকিমার সেজ দেওরের সঙ্গে গাঙ্গুলিদার ছোট বোন পাম্পঘরের পিছন দিকে কতক্ষণ ছিল, তা’ নিয়ে তখন সারা বিকেলের জল্পনা। কোথায় লাগে আলিয়া-রণবীর? টিভির অ্যান্টেনা ঠিক করতে করতে পিন্টুকাকু হাঁক পাড়তেন, এই শনিবার উত্তমের বই আছে, সেনদা আসবেন তো? মান্তু সন্ধে হলেই গলা সাধে। তার ইমনের নি-ধা-পা-মা-পা-গা-মা-পায়ের পাশে শোনা যায় পিছনের বিল্ডিঙের তপুদির রবীন্দ্রসঙ্গীত। সকালবেলার হরিণঘাটার দুধের দোকান, সপ্তাহে কোনও এক বিকেলের খেলা ছেড়ে রেশনের দোকান। ওটুকু যাওয়াই স্বাধীনতা, ওটুকুই তখন স্বাবলম্বী হওয়ার প্রথম পাঠ। সদ্য গম ভাঙানো গরম আটায় হাত ডুবিয়ে, বুক ভরে কেরোসিনের গন্ধ নিয়ে, নোংরা নর্দমার ডিউস বল কুড়িয়ে, উনুনের নরম ছাই ঘেঁটে দিনের শেষে সন্ধের হারিকেনের আঁচে সেঁকে নেওয়া অবসর। ছেলেবেলার আরাম। মাঠে পিট্টুখেলার টুকরো ইঁটের সাজানো স্তূপ রবারের বল ছুঁড়ে মোক্ষম টিপে ভেঙে দিলেও তখন বন্ধুত্ব ভাঙত না। ফেভিকল লাগেনি। গঁদের আঠায় জুড়ে থেকেছে কত পছন্দের রঙিন কাগজ।
মুন্নিও সেইরকম এক পরিবারের। তিনতলার ফ্ল্যাটে বাবা, মা আর মুন্নি। টুম্পাও যেমন। বাবা-মায়ের সঙ্গে। ওদের দুই পরিবারে মিল প্রচুর। দুজনেরই ঠাকুর্দা-ঠাকুমা ভাড়াবাড়ি ছেড়ে ছেলেবৌয়ের আশ্রয়ে পাকাপাকি চলে আসেননি। তার কারণ মোক্ষম। মুন্নির মা আর টুম্পার মা সেই সময়ের টিপিক্যাল গৃহবধূ ছিলেন না। তাঁরা চাকরি করতেন। একজন ইস্কুলের দিদিমণি। অন্যজন একটি বেসরকারি ফার্ম। বউমার অবর্তমানে নাতনী দেখাশোনার নামে ঘরকন্নার কাজ সামলানোর দায়িত্ব তাঁরা সুকৌশলে এড়িয়ে গেছেন। উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট নিয়ে সেই সময় কারও মাথাব্যথা ছিল না ঠিকই। কিন্তু ফাঁকা ফ্ল্যাটে দৌরাত্মি করা এই দুটি প্রায় সমবয়সী কন্যার দেখভাল করার জন্য আশেপাশে প্রচুর কাকিমা-জেঠিমারা ছিলেন। ইস্কুল থেকে ফিরল কখন, খেল কি খেল না, বিকেলে মাঠে নেমে দৌরাত্মি করছে কিনা, সবদিকে নজর করার জন্য তখন প্রচুর অঘোষিত গার্জিয়ান।
মজা কিছু কম হত না। কিন্তু বারো আর চোদ্দর দুই কিশোরীর জীবনে নিষিদ্ধ আকর্ষণ ছিল প্রচুর।
চেন-স্মোকার বাবার সিগারেটের প্যাকেট থেকে দিনে একটা সিগারেট সরানো কোনও ব্যাপারই না। দেশলাই জ্বেলে প্র্যাকটিস। চারবারের চেষ্টায় আগুন জ্বালানো। প্রথম টানে ভয়াবহ কাশির দমক। এভাবে পর পর দিন তিনেক।
‘টুম্পা, চল বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেট খাই’।
মুন্নি টুম্পার থেকে ঠিক দু’বছরের বড়। একটু বেশি সাহসী। যদিও সাহস ব্যাপারটা বছরে বা বহরে বাড়ে না, তবু মুন্নির সাহসের বলিহারি। টুম্পা অতটা পেরে ওঠে না। অতএব সিগারেটের ধোঁয়া আর দুঃসাহস ঘরের মধ্যেই পাক খায়।
পয়সা চুরি। এবং আইসক্রিম। গলাব্যথা না হলে ধরা পড়ার ভয় নেই।
স্কুলের সামনের আচারওলার কাছ থেকে টোপা কুল আর কাঁচা আম। ওগুলো লুকিয়ে খাবার মজাই আলাদা।
টুম্পার এথিক্যাল বোধ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। গয়নার দোকানের মালিককে মায়েরা দুলাল বলে ডাকে। সেই সুবাদে টুম্পাদের কাকু। তাহলে তার দাদা খামোখা মুন্নির হরিদা হতে যাবে কেন?
‘ও আসলে আমার দিকে রোজ তাকায়’।
‘তাতে কি হয়েছে? আমার দিকেও রেশন দোকানের বাপিদা রোজ তাকায়’।
‘আঃ, ওইরকম তাকানো নয়। একটা অন্যরকম তাকানো’।
টুম্পার ভেতরে কেমন চিনচিন করে। সত্যি ওর দিকে এখনও কেউ ঠিক তেমন করে তাকায় না। বারো পেরোলেও মায়ের পাল্লায় পড়ে জবজবে তেলে ডোবানো দুটো বিনুনি বাঁধতে হয়। শ্যাম্পু মেরেকেটে সপ্তাহে একদিন। তা’ও রিঠা। চোখ জ্বলে গেলেও নিস্তার নেই। রবিবার শ্যাম্পু। সোমবার সকালেই স্নানের সময় এক খাবলা নারকেল তেল। কেউ তাকাবে? তার ওপর ওই ঘটিহাতা ববি প্রিন্টের ফ্রক। সব এক ছাঁটের। মা নিজে বানাবে। হয় ঘটি হাতা। নয় গেলাস। গলায় কুঁচি অথবা কলার। তলায় ফ্রিল কিংবা লেস। পুজোয় চারদিকে ‘লাভ স্টোরি’ জামা চলছে। মুন্নিও পরল। টুম্পাকে তার মা কিনেই দিল না। প্রাণের বন্ধু মুন্নি ওর চেয়ে প্রেমেও এগিয়ে গেল? আর সহ্য হয় না!
‘তুই ঠিক জানিস? তোর দিকে ছাড়া আর কারও দিকে তাকায় কিনা জানিস? আজকাল এইসব ছেলেকে একদম বিশ্বাস করিস না মুন্নি’।
বারো বছর পৃথিবীতে কাটিয়ে টুম্পার এই গভীর জীবনদর্শনের একমাত্র উৎস শরৎচন্দ্রের উপন্যাস। ওগুলো টুম্পা সদ্য পড়তে শুরু করছে। অকালপক্কতার প্রথম পাঠ।
মুন্নি বইপত্রের ধার ধারে না।
‘শোন টুম্পা। হরি কিন্তু আমার লাভার। আমি ভাবছি। দেখবি, একটা কিছু ঘটবে’।
টুম্পা চুপচাপ নজর রাখে কয়েকদিন। রেশন দোকানের বাপিদা, গয়নার দোকানের হরিদা। দুজনকেই সেয়ানা মনে হয়। দুজনেই তাকায়। অনেকের দিকেই তাকায়। মান্তুকে দেখে হাসল বাপিদা। রাগে টুম্পার চোখ জ্বালা করছিল। মিঠুকে ডেকে জিগ্যেস করল, ‘তোদের পরীক্ষা শেষ?’ টুম্পার মনে হল, পরীক্ষা কি শুধু মিঠুদের স্কুলেই হয় নাকি? যত্তোসব। আর মুন্নির হরিদা তো চালবাজ একটা। সোনালি রঙের ফ্রেমের চশমা, চোঙা প্যান্ট। যাচ্ছেতাই। ধুস, মুন্নির লাভার হলে হোকগে। ওর তাতে কী?
তবু সব উড়িয়ে পুড়িয়ে দেওয়া যায় না। দমকা বাতাস আসে। অনেক কিছু ঘটে ওদের চারপাশে। ঘটে যায়। কোনও কারণ ছাড়াই। তিরিশ বছর পেরিয়ে গিয়ে টুম্পার চোখে হঠাৎ সেই দুপুরগুলো ভাসতে থাকে। নিষিদ্ধ দুপুর। ফ্ল্যাটের মধ্যে দুই কিশোরী একসঙ্গে মেতে ওঠে গোপন খেলায়। পরস্পরের চেনা শরীরের পোশাক খুললেই কত অচেনা গন্ধ, অজানা বাঁক। দুজনের বুকের সদ্য ফুটে ওঠা কোমল কুঁড়িতে আঙুল রাখে দুজনেই। গায়ে কাঁটা দেয়। একে একে শিহরণ। হাতের মুঠোয় আঁকড়ে ধরা উদ্ভিন্ন যৌবনে কতরকম আনন্দ। নিষ্পেষিত হতে থাকার উত্তেজনায় দুজনেই তারপর নিরাবরণ হয়েছে কতবার। নির্জন দুপুরে টুম্পার হাতদুটোয় তার লাভার হরির আদর, মুন্নির চেপে ধরা মুঠোয় অন্য কেউ। বাপিদা নয়। বইয়ে পড়া বা ছবিতে দেখা। কাল্পনিক। তবু অন্য কেউ একজন। টুম্পা আর মুন্নি হয়ে নয়, দুই সদ্য কিশোরী তখন বাস্তবের সব অজানা আর কল্পনার লাগামছাড়া ডানায় আবিষ্কার করে নিবিড় যৌনতার একের পর এক খেলা। লজ্জা থেকে শিহরণ, শিহরণ থেকে উত্তেজনা, উত্তেজনা থেকে নেশা। এভাবেই বেশ অনেকদিন।
কবে যেন সব থেমে যায় একদিন। যতদূর মনে আছে মুন্নি ক্লাস নাইন থেকে টেনে ওঠার সময় ফেল করেছিল। ওর মা বাড়িতে নিয়ে এলেন মুন্নির দিদিমাকে। পাহারাদারি করতেন তিনি। পড়াশোনার চাপ বাড়ানো হল। টুম্পাও এইটে উঠেছে। চারদিকের বাড়ি থেকে সন্ধে হলেই পড়া মুখস্থ করার নানানরকম আওয়াজ। সব দুপুরগুলোয় ধুলো জমতে শুরু হল। জমতে জমতেই একদিন হঠাৎ বিয়ে হয়ে গেল মুন্নির। উচ্চ মাধ্যমিকের আগেই। আঠেরোর পরে আর বেশি অপেক্ষা করেননি ওর বাবা-মা। মেয়ের উড়ুক্কু মনে লাগাম পরিয়ে নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন।
মুন্নির ভারী কোমরের দিকে অজান্তেই চোখ চলে যায় টুম্পার। ভরাট বুকের আয়তনেও আর সেই আকর্ষণ আছে কি? একটা মাংসপিণ্ডের মতো জমাট শরীর। খাঁজহীন। নিরেট। টুম্পার চোখের সামনে ভেসে ওঠে তার দু’হাতের বেড় দিয়ে ধরা মুন্নির কোমরে একটা কালো তিল ছিল। স্রেফ অব্যবহারে নষ্ট হয়ে গেল। ওই দুপুরগুলোর মতোই। অপচয়।