লুঙ্গি পরিহিত এক যুবকের সামনে সেদিন রাত্রে এসে পড়েছিল একক সাপের ল্যাজ, শিশিরগ্রস্ত ঘাসের সিঁথি দিয়ে হারিয়ে গ্যালো কেচ্ছা, হঠাৎ আকাশ এতো পরিষ্কার হয়ে গ্যালো ধ্রুবতারাকে যেন প্রথম দেখলাম আমি, আমাকে নাচতে দাও, ঘোড়ার অর্ধেক পা আর একটু বালামচি আমার হাতে গুঁজে দিলে আমি বিশ্বজয় করে ফেলতে পারি, দাও আমাকে ধর্মের দোহাই দাও, আমি একটা হাই তুলে সারারাত জেগেই থাকতে পারি, আমি বায়ুবাসী মাংসভুক ছেলে, দিনের পর দিন ধ্যানমগ্ন হওয়ার চেষ্টা করেছি রাত্রে সকালে দুপুরে স্নানের পর, শুধু ঘুম শুধু মাথা ব্যথা, না না দুয়েকবার ভালো ভালো কটা কবিতাও, আমি নিরামিষ জামাকাপড় পরে কাটিয়েছি কটা দিন, কথা দিন কাউকে বলবেন না, আসলে আমি নারী শরীরকে খুব ভালোবাসি – একথা বলার মতো সৎ সাহস অর্জন করতে পারিনি, শুধু রিপ্লাই দিয়েছি যে আমার সাহসিকতা জানতে তোমাকেও কিছু সাহসী হতে হবে, হতে হবে আত্মার চেয়েও জরুরিতম ভাড়াটে, এই সুপরিচিত জং-জানলার থেকে হাত খানেক দূরে আমার কাঁঠাল কাঠের চৌকি, দাদু-ঠাম্মার পর থেকে এ আমার শয্যাসঙ্গী, সেখানে গভীর রাতকে গুঁজে নিয়ে নীল মশারির ভেতর শুয়ে আছি, আধো ঘুম, পাখাটা বন্ধ করে দিতে পারলে ভালো হতো, বাইরে থেকে জলের ফোঁটা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে ভেতরে আসছে, মশারির কোশপ্রাচীর খুব সহজেই ভেদ করে তারা আমার শিহরনে সামিল, ঘুমিয়ে পড়বো, তার আগে বৃষ্টি দ্যাখা যাক : ঘুঙুরবিহীন পায়ে বাবা এসে দাঁড়ায় আমার পাশে, হাতে সেই মণ্ডলের দেওয়া তিন ব্যাটারির টর্চ, আমি সারারাত ঘুমের পাশে জেগে থাকি, বায়ুকল ঘোরা দেখতে দেখতে রাত হুস্
কোনো কোনো সকাল গুলে বাপা-ব্যাটা ইসবগুল খেয়ে নিই, মায়ের হাতে তুলে দিই স্বপ্নগ্রন্থি, মা আমাদের সংসার ও শাক, সব্জি ও ভাত, হাজারও হাসি ও কান্নার ফোয়ারা দেখে আমি ভাবি কবিতা লিখব আমি ভাবি পিয়াসী শস্যের মতো গৃহতল ভরিয়ে তুলবো ডুমুরপাতার চমৎকার ছায়ায়। আমাকে ভুলে গেলে নাকি মুক্তাশা! তোমার তো আসার কথা ছিল এখানে, ঐতিহাসিক রথের চূড়ায় আমার কবিতার দড়ি দিয়ে বাঁধা পতাকার বাহক হয়ে, উল্লাস ও আকাঙ্ক্ষা হয়ে, চির পত্ পত্ স্বাধীনতার মতো ভ্রমণ হয়ে, ভালোবাসা, নশ্বর নোঙর থেকে ছিটকে দাঁড়ালে লিখে রাখে কীট, হে ধ্রুবতারা হে জন্মস্থান শ্মশানঘাটের দিকে যেতে এতো যে পশুপক্ষী তাদের আশ্চর্য ভাবুকবৃত্তি আমার কাছে জমা রেখে গ্যালো, তারা আর ফিরে আসে না কেন, সুদহীন পাহাড় তাদেরকে আমি উপহার দিতে চাই, বদলে ওরা সরিয়ে নিক আমার বুকের থেকে কংক্রিটের জংগল, পতাকাবাহী ইতিহাস আমি হতে চাই না
শিকড়বাকড় ছাড়া এই দেহাতীত মৃত্যুর মুখে সমাপতন আমি বরদাস্ত করব না, ওগো আমার পাখিপ্রাণ আমায় নিয়ে চলো অলিখিত কবিতার কাছে, ওহে আমার বৃক্ষপ্রাণ আমায় শুষে নাও, দীর্ঘ দিন দ্যাখা হয়নি রৌদ্রের সাথে, পাতায় বসে আমি সঙ্গম খাবো, অসংখ্য যুবক-যুবতীর থেকে চেয়ে নেবো প্রেম আবদার করবো কাম। সমকামীদের আমি শ্রদ্ধা করি, তাই নারী শরীরের প্রতি কামনায় আমার ঠোঁট কেঁপে কেঁপে ওঠে, সারা শরীরের ভার কুঞ্চিত হয়ে এসে জড়ো হয় বুকে, ঢিপ্ ঢিপ্ করতে করতে বিছিয়ে দিই পশম শুধু শীত করলে তুমি এসে জাপটে ধরবে তাই, এখন ভাদ্র মাস, চারিদিকে সারমেয়দের সক্রিয়তা, রাস্তায় ভীষণ যানজট, এসো হাত ধরো ভাষা, অন্যের ফেলে যাওয়া হাসি – বুনোফুল – ফুরফুরানি – কলকলতা আর নব্যমানবতাবাদের শিলান্যাস করে রেখে পালিয়ে গ্যাছে সাদা হাতির দল, এখন আমাদের হাতে তুলে নিতে হবে ফুসফুসের শাসনভার, ধনেশ পাখির ঠোঁটের কাছে রাখতে হবে বৈদ্যুতিন চোখ, সেখান থেকে প্রতিফলিত দক্ষতা দিয়ে লেখা হবে এক হাজার বছরের বাংলা কবিতার পরকীয়া, কেচ্ছা ও গুম হয়ে যাওয়া পেনসিলগুচ্ছ