কবিতায় সুশোভন কাঞ্জিলাল
ইস্পাত প্রেম
লোহা হয়েও বৃষ্টিতে ভেজা তোর সাথে মনে আছে?
মনে ভয় ছিল বিনষ্ট হব সেই জলের দাওয়া জঙ্গেই।
পার্কের সবুজ হৃদপিন্ড ঘিরে আমি রেলিং ঘেরাটোপ,
কালো মুখটা ঢেকে ছিল তোর লালচে এনামেল রঙ্গেই॥
আমার ছুঁচলো মুখ কেন জানি না সবার চক্ষুশূল!
লোহা আমি লোহা তো ওরাও যারা আমার ওপর রেগে,
হাতুড়ি হয়ে প্রতিনিয়ত নির্মম ভাবে আমায় ঠোকে!
পেরেক আমি ফুটি তো তোর কাঠ বা কংক্রীটের দেহে॥
আমি রেললাইন হয়ে দিক থেকে দিগন্ত অবদি ছুটি,
নিজেকে বিভক্ত করে দুটি সমান্তরাল রেখা ধরে।
তুইও ভাঙ্গিস নিজেকে কখনো কাঠের স্লিপার সেজে,
আবার কখনো পাথর ভেঙ্গে স্টোনচিপ হয়ে ঝরে॥
আমি লোহা তাপ সয়া বাস্তবের কড়ায় শেকা।
তেল কালি মাখা আমার কুত্সিত দেহ দিকভ্রান্ত।
সোনা হতে চায় যখন মায়াবিনী পরশ পাথরের মোহে,
চুম্বক হয়ে নিজের আবেশে করিস তপ্ত হৃদয় শান্ত॥
আমিও একদা নরমি ছিলাম খাদ হয়ে মাতৃক্রোড়ে।
সমাজের ব্লাস্ট ফারনেস আমায় লোহা বানাল যখন,
কাজে লাগিয়ে মরচে ফেলে ভেঙ্গে দিতে অবশেষে,
আমায় ইস্পাত বানালি তুই হয়ে কয়েক ছিটে কার্বন॥