কবিতায় সুখেন্দু দাস

১। ঘরে ফেরার টান
এই মাঠে
এই ঘাটে
এই ঘরে
এখনো রয়েছে আমাদের পদচিহ্ন
এখনও আমাদের পরিচিত একজন
অপেক্ষায় দিন গোনে
দিন-গোনে ফিরে আসবার
ফিরে না-আসার মুহূর্তেরা
কালো মেঘের মতোই
চাপা নিঃশ্বাস নিয়ে
গুমরে গুমরে ওঠে
কখনো-বা গর্জে ওঠে :
ব্যাথাহত আশার ছলনায়
তবু-তো
সুদূরের চোখ পড়ে থাকেই শুধু
আমিনুল ভাই
এবারের ঈদে মুর্শিদাবাদে
দেখা হবে নাকো
বীরবল দাদা
ধুবড়ীর দশহরায়
অপেক্ষা করো না যেন
বন্ধু ঋষিরায়
শ্রীরামপুরে জগন্নাথের রথের দড়িটা
এবারে আর ধরা হবে না
সুজয়ের মাইমা-রা
হয়ত নবমীর দুর্গাপুজোয় এবারে
আসা হবে না কোলকাতায়
বড় মাসি-মেসোর
চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী দেখার শেষ-আশা
বুঝি পূর্ণ হবে না আর
তোমরা ভালো থেকো সবাই
সুস্থ থেকো সবাই
ফিরবার দিনগুলো
হিংস্র বাঘের মতো
থাবা উচিয়ে না-হয় বসে থাকুক
না-হয় মাইলের পর মাইল
চলতে থাকি
চলতেই থাকি
না-হয় আমার বন্ধু-সহযাত্রীরা
উবু হয়ে পড়ে থাকুক
রেলে
ব্রিজে
হাই-রোডে
কিমবা
ঘরের কোণে একলা
যারা ফিরে আসবে ঘরে
তাদের যন্ত্রণা ভরা দিনগুলো
ভাইরাসে ঘেরা হাঁপানির টানের মতো
না-হয় অটুট হয়ে থাকুক স্মৃতিতে :
তারপর
গল্প-কথা-কাহিনী হয়ে
ক্যথারসিস আনুক লেখকের হাতে
বাচকের মুখে
পাঠকের বুকে
ঘাতকের সুখে
অথবা
শ্রমিকের দুখে
শুধু আপনারা থাকুন ভালো
সুস্থ থাকুন সবাই …