জন্ম : ১৯৫৬, মুর্শিদাবাদ
আটের দশকের অন্যতম কবি শান্তিময় মুখোপাধ্যায় বাংলা কবিতায় এক নতুন টেক্সচারের জন্ম দিয়েছেন। তাঁর কবিতা আসলে জীবনের মধ্যে খুঁজে চলা এক অনাবিষ্কৃত বিমূর্তলোক। যেখানে শব্দরা ধ্বনি আর ধ্বনি সুরের মূর্ছনায় পুলকিত।আর মগ্নতার শরীর বেয়ে স্বেদ গড়িয়ে নামে পায়ের পাতায়। বহরমপুর থেকে একদা প্রকাশিত 'রৌরব' পত্রিকার থিঙ্কট্যাঙ্ক এই কবি মনে করেন কবিতা আসলে এক না শেষ হওয়া জার্নি। ভালোবাসার রিবন সেখানে খুলে রাখে বিস্ময়-কোলাজ। মূহুর্তের প্রতিচ্ছবি দরবারি কানাড়ার সুরে সম্মোহিত করে পাঠককে। কবি লেখেন "ক্ষতচিহ্ন বুকে যে পাশবালিশ তোমার পাশে শুয়ে আছে/ তারও কোনো রাত্রি ছিলো একদিন"। লেখালিখি শুরু সেই স্কুল জীবন থেকেই। সত্তরের উত্তাল দামামা যখন শিকল ভাঙার নির্ঘোষ দিচ্ছিল। পরতে পরতে কবি জড়িয়ে যাচ্ছিলেন উন্মাদনার চক্রব্যুহে। তখন থেকেই তাঁর তথ্য ও পরিসংখ্যান ভিত্তিক প্রবন্ধগুলি বহুজনের নজর কেড়েছিলো। বহু পত্র-পত্রিকা সম্পাদনের সাথে যুক্ত থেকেছেন নানা সময়, নিজেকে আড়ালে রেখেই। তন্ত্রশাস্ত্রের রহস্যময় পরাবাস্তবের সাথে বাংলা কবিতার সমন্বয় নিয়ে তাঁর ভাবনাও বেশ উল্লেখযোগ্য। কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে জীববিজ্ঞানে স্নাতক কবি দীর্ঘ কর্মজীবন কাটিয়েছেন কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। খুব কাছ থেকে দেখা মৃত্যুমিছিলের মধ্যেও সংগ্রহ করেছেন অপুষ্টিজনিত জীবনের অঙ্কুরোদ্গমগুলো --- " খানিক বাদেই মেডিকেল কলেজের কার্ণিশ ঘেঁষে ফুটে উঠবে/ অনিতার মেয়ের চেয়েও ফুটফুটে আন্ডারওয়েটের চাঁদ " আবার কখনো জিরো ওয়াটের স্বপ্ন জ্বলে উঠতে দেখেছেন ৪২ নং কেবিনে।এই কবিতাযাত্রার সূত্রপাত আমরা দেখেছি আশির দশকের একবারে গোড়া থেকেই।
প্রকাশিত কবিতার বই:
শীতের মাতৃসদন
অনুশীলনপর্ব
খোসাকাল
অসমাপ্ত রিহার্সালরুম
অপঠিত জলপাইলিপি
সম্পাদিত গ্রন্থ:
ধ্বংসকালীন কবিতা আন্দোলনের দলিল
সংকলিত ত্রিপুরা
ভারত ও বাংলাদেশের একাধিক প্রথম শ্রেণীর দৈনিক,মাসিক এবং লিটিল ম্যাগাজিনে নিয়মিত কবিতা ও কবিতামূলক গদ্য লিখে চলেছেন কবি।