• Uncategorized
  • 0

কবিতায় অলোক বিশ্বাস

বিশিষ্ট কবি ও গদ্যকার। কবিতা ক্যাম্পাস পত্রিকার সম্পাদক।

বাবালুতা  

টগর গাছটিতে লেগে আছে বাবার গন্ধ।
প্রখর রোদে ও ঝড়ে, বৃষ্টিতে ও অমলিন দ্বন্দ্বে বাবার গন্ধ।বহু চিহ্নের রঙ ও বিচিত্র নদীর কথন আর পাখিদের পূর্ব পশ্চিমে উড়ে যাওয়ার দাগ রাবার দিয়ে মুছে দিলেও, টগর গাছটিতে বাবার প্রতিটি প্রত্নকথা স্পষ্ট লেখা আছে। একটি অলৌকিক ফুল ফুটে আছে টগরের ডালে। অলৌকিক ফুলে বেজে ওঠা গানে মনে পড়ে বাবা নৈর্ব্যক্তিক চিত্রকল্প হয়ে যেতে চেয়েছিল। তাঁর স্বপ্নের ভিতরে থাকা কয়েক বিঘে ধানজমির গল্প, বাঁশ বাগানের মাথার ওপর অবিরাম খেলে যাওয়া চাঁদ, টগর গাছটিকে কেন্দ্র করে উচ্চারণ করে যাচ্ছি। পুকুরের মাছদের কিভাবে আরো শ্রুতিমধুর করা যায় সেই স্মৃতি ফিরিয়ে দিচ্ছে টগরের ঘুমভাঙা ভোর। শহরের প্রতিটি বাড়ির ছাদ যখন ছোট ছোট বাগানে পরিণত হয়েছে, সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসা অজস্র মুখের আলোয় একটি বৈভাসিক গল্পে কিছুতেই উপসংহার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বাবার স্থায়ী বাড়ি যদিও এখন মহাকাশে, মাঝে মাঝে তিনি এসে দেখে যান টগর গাছের ফুলে অলৌকিক কোনো অবস্থাকে আমরা আবিষ্কার করতে পেরেছি কিনা…

বর্ণালী মোড় 

চেনা পথকে উল্টে দেখার শিহরণ চাই। চেনা আকাশ অন্য কোনো আকাশ হয়ে যাক, আমি চাই। বর্ণালী মোড়ে, কিছু লোক উল্টেউল্টে হাঁটে। কতো সুন্দর বাক্য লিখে, সমুদ্র পেরিয়ে পুরস্কার জয় করে ফিরছে উল্টো পথে হাঁটা লোকেরা। রাস্তারা কথা বলে অন্য রাস্তার সাথে, পকেটে বাঁধা পাখি উড়ে যায়। উল্টো শব্দটিতে আছে বিজয় দিবস, রূপান্তরে চলে আসা অন্য রূপান্তর। বিদ্রোহ বিপ্লব আর ইতিবাচ্যগুলি হেঁটে যাচ্ছে বর্ণালী মোড়ের দিকে।  শতাব্দী ধরে যে গাড়িটিতে ঘুরে বেড়িয়েছি, আজ সেটি চেহারা বদলে ছুটছে। শতাব্দী ধরে রক্তের ভিতরে যে বরফ জমেছে, তাকে উল্টে দিচ্ছি। বহু পোকামাকড় যারা আমাদের সর্বত্র ধূসর করেছে, তারা সব রূপান্তরিত। বর্ণালী মোড়ে হঠাৎ এসে পড়া মৃত্যু শব্দটি এখন আর পরাজয়ের প্রতীক নয়। ক্যারাম বোর্ডের ওপর নাচতে নাচতে মৃত্যু শব্দটি নিজেই নিজেকে বিপরীতার্থক শব্দে পরিণত করছে..
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।