“আমি ও রবীন্দ্রনাথ” বিশেষ সংখ্যায় মঞ্জু ভট্টাচার্য
by
·
Published
· Updated
আমার রবীন্দ্রনাথ
এমনি হয় আমার মাঝে মাঝে। মনটা এমন উচাটন করে , ঘর বাহির ঘর বাহির করতে করতে কিছুতেই যখন ঘুমটা এল না , ইচ্ছেগাড়ির চাবিটা নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম নিরুদ্দেশে। এদিক ওদিক সেদিক ঘুরতে ঘুরতে চলে গেলাম রবীন্দ্র সরোবরে। সারারাত রবীন্দ্র সরোবরেই ছিলাম কাল।
প্রথমে সরোবরের পাড়ে কিছুক্ষণ বিচরণ করলাম। দেখি ‘আমার রবীন্দ্রনাথ’ নিয়ে বড় বড় সেলিব্রেটি দের সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে । তাদের কথা শুনতে শুনতে নেশা ধরে গেল। ধীরে ধীরে কখন যে সরোবরে নেমে পড়লাম টেরই পেলাম না। দেখি জলতরঙ্গে রবীন্দ্র সঙ্গীত বাজছে। ছন্দের তালে তালে আমিও রবীন্দ্র নৃত্য শুরু করে দিলাম। মনে হল সরোবরে এবার একটু অবগাহন না করলেই নয়। আরে, নেশা যে বেড়েই চলেছে।এত শিগগির সরোবর ছেড়ে ওঠা যায় নাকি,এবার তো সাঁতার কাটতে হবে। প্রজাপতি সাঁতারটা আমার খুব প্রিয় সেটাই সাঁতরে সাঁতরে গান, গল্প ,কবিতা, ছবি, উপন্যাস, নাটক ছুঁয়ে এগিয়ে চলেছি। একসময় মনে হল সরোবরে যখন নেমেই পড়েছি সাঁতার যখন কাটছি-ই একটু ডুবসাঁতার টাও দিয়ে নিই। ও মাগো , সরোবরের তলে গীতাঞ্জলি, সঞ্চয়িতা, গীতবিতান, ছিন্নপত্র, মালঞ্চ, চতুরঙ্গ, বউ ঠাকুরানীর হাট, ভানু সিংহের পত্রাবলী, খোকা বাবুর প্রত্যাবর্তন, ডাকঘর, ঘরে বাইরে আরো আরো আরো কত শত শত মণি মুক্ত ছড়ানো। সব কি একরাতে কুড়ানো যায়, নাকি এক জীবনে। এদিকে ভোর হয়ে আসছে, আমার হৃদাকাশে রবির কিরণ ঝিকিমিকি করছে। রবীন্দ্রনাথ কে পুরোপুরি পেতে আমার রবীন্দ্রনাথ কে জানতে যে জন্ম জন্মান্তর রবীন্দ্র সরোবরে নাইতে হবে সেকথা যে সরোবরে নামে নি তার জানার কথাও নয়। তাই ঘোরের মাঝে ভোর হলো, দুয়ার আমার খুলে গেল । এবার যাব রবীন্দ্রসদন, রবীন্দ্রভারতী, জোড়াসাঁকো হয়ে সোজা শান্তনিকেতন।