• Uncategorized
  • 0

“আমি ও রবীন্দ্রনাথ” বিশেষ সংখ্যায় অমিতাভ দাস

বৈশাখের হাওয়া, বৈশাখের ফুল

বাঁশিতে ফুঁ দিতেই বেজে উঠলেন রবীন্দ্রনাথ ।বৈশাখের হাওয়া , বৈশাখের ফুল ।
সম্পর্কের ভিতর দাঁড়িয়ে আছে গান । সন্ধ্যা পেরিয়ে যাওয়া মাঠের চারপাশে ভেসে উঠছে কচি বালকের মুখ । আহত নিবেদন ।সবুজ ঘাসমাটি । সাথে মুখ লুকিয়ে নিচ্ছে কে ? নির্ভার এই মেঘখন্ডের কাছে জল চাইছে পাখি ।
গ্রীষ্মবাণ দেশ ।বাস থেকে নেমে দেখি বালিকার মুখ শুকিয়ে আছে ঝাউপাতার মতো , তাদের চুল উড়ছে বৈশাখের তপ্ত হাওয়ায় । হে রবীন্দ্রনাথ , আপনি ওদের চোখে প্রেম দিন । ওদের চুলে দিন বৈশাখের হলুদ ফুল । আলো দিন আঙুলের ডগায় ।
আকাশের ভিতর থেকে ঝরে পড়ছে আকাশ ।কোনো উচ্চারণ নেই ।সংলাপের ভিতর থেকে উঠে আসতে চাইছে ছেঁড়া ছেঁড়া কান্না । অভিমান – সুর । মুগ্ধতার মৃদু- কুয়াশা ।
এ সবের সঙ্গে বালকটির কোনো সম্পর্ক নেই । সম্পর্ক ছিল না কখনো । হে রবীন্দ্রনাথ , আমি খুঁজে পাচ্ছি না মানুষের মুখ । শিশির ধৌত শীত ।দেখি উঠে আসছে বাবা- মায়ের ম্লান মুখ । শূন্যতা খচিত ছাত্রজীবন । জন্মান্ধ সন্তানের মতো গৃহশিক্ষকের হারিয়ে যাওয়া হাজার হাজার আকাক্ষাবিন্দু । মিলিয়ে যাচ্ছে বৈশাখের দুঃখময় জ্যোৎস্নায়
চোখ ফেরাতে পারছি না একটুকরো ভালোবাসার দিকে ।এই আবহমান বৈশাখ জন্মমাটির ওপর এঁকে দিচ্ছে জ্যোৎস্নার অধিকার । শিলাবৃষ্টির মুগ্ধ- মুখরতা ।শব্দ সাজিয়ে দিচ্ছি এই বৈশাখের দিনে । শব্দ মানে জেনো কান্না , নিসর্গ ছোঁয়া ফুল ।প্রতিটি হলুদফুলের ওপর আঁকা আশ্রমবালিকার চোখ , তার কথা বলার ভঙ্গী ।
এই বাঁশবন ।
এই ইছামতীর বালি
শান্ত নদীজল
দুপুরের দোদুল্যমান নৌকো
সুর থেকে সুরে হে রবীন্দ্রনাথ , আপনি বলে দিলেন : নীরবে হৃদয়ে থাকার কথা
পাখি উড়ছে । উড়ছে বৈশাখের ধুলো । শাল – পিয়ালের জঙ্গলের ভিতর জ্বলে উঠছে আগুন । সেখানে এক উদাসীন বাউল- যুবক নির্জনতার পাশে বসে আছে স্থির । এক মনছুট রাখাল
নীরবতার ভিতর জন্ম নিচ্ছে চায়ের দোকান । ফেলকরা বন্ধুর চোখটান । অটো ইউনিয়ান । খদ্দরের পাঞ্জাবী । ঝোলা ব্যাগ ।উসখুশ চুলের ছেঁড়া- চপ্পল মাস্টারমশাই । ব্যর্থপ্রেম ছাত্রীর আলুলায়িত কেশভার । বাইকবাহিনীর মিছিল । পাড়ার মাস্তান । শনি মন্দিরের পাশে টাইম কলের মুখে ঠোঁট রেখে জল খাওয়া কাক । চর্যাপদের প্রেমিক এবং অভিসারিকা । গীতগোবিন্দ বর্ণিত শীৎকার- গাঁথা…অবদমনের নিশি…
গোধূলি গগনে মেঘে জড়িয়ে আছে আমাদের সকল স্বপ্ন । চিন্তা এবং কাজের এষণা ।রবীন্দ্রনাথ , আমি আত্মদহনের মন্ত্রটি আজ খুঁজে পেয়েছি…
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।