• Uncategorized
  • 0

“আমি ও রবীন্দ্রনাথ” বিশেষ সংখ্যায় বিতস্তা ঘোষাল

রবিঠাকুর তোমায় গল্প শোনাই

রবিঠাকুর
জোড়াসাকোঁর তোমার বাড়ির একটু
দূরেই আছে এক দুখী মেয়ে।
তোমার স্বপ্নের নায়িকারা ক্লান্ত এখন
অতি ব্যবহারে;
তার চেয়ে বরং এই মেয়ের গল্প শোনো…
রোজ সন্ধ্যেবেলায় বাস রাস্তায়
ঠোঁটে পুরু রঙ ,চোখে গাঢ় কাজল
ঈষৎ কালো সেই মেয়ে
দশ বছরে এসেছিল এই শহরে
না না শহর দেখতে নয় ,
পণ্য সামগ্রী হয়ে।
নানা হাত ঘুরে
এখন তার ভরা যৌবন
কামসূ্ত্রের নানা কলায় মোড়া সেই জীবন
নাম ধরো তার-
প্রমদা হতে পারে।
তুমি চেন কি তাকে?
ফাগুনের মাতাল সমীরণে যখন
জ্যোৎস্না মাখে মন,
সেই একলা মেয়ে পথ ভোলে তখন
তার পরণে জিন্স,গায়ে সস্তার আতর
জানে না সে দিনের শেষে
ঘুম যে আসে ,
বোঝে না সে পাবার আগে কিসের আভাসে
তার চোখ জলে ভাসে।
কোন অলকা ফুলে
মালা সাজালে চুলে
তাকে বলবে কেউ
“কিছু নাহি ভয় জানি নিশ্চয়
তুমি আছ আমি আছি”।
সে যে সকল নিয়ে আছে বসে
কোন সর্বনাশের দেশে!
সবার প্রেমে কলঙ্কভাগী
সেই মেয়ে প্রতি রাতে
ইন্দ্রপুরীর বাসরপ্রদীপ জ্বালে।
প্রখর তাতে পুড়ে যায় মন
ঝলসে ওঠে শরীর…।
তবু প্রাণের মাঝে
আছে তার এক গোপন স্বপন।
ঝরে-পড়া বকুলদলে কার বিরহে সে
বিছায় বিছানা
তা যদিও সবার অজানা ।

অকস্মাৎ এক ভয়াল স্রোতে
সেই আলোমাখা
বসন্তের আনন্দ ফিরে যায় কোন উচ্ছ্বাসে
কিসেরই পিয়াসে ,কোথা যাবে সে
পথ জানে না।
সেই নিঃসঙ্গ মেয়ে
রবীঠাকুর, তোমায় চেনেনা।

বৈশাখের এই দিনে তুমি যখন
ফুলে ফুলে গানে গানে ভরে ওঠো
আকাশে বাতাসে বেজে ওঠে
তোমার শঙ্খ
তখন তুমি চুপি চুপি এসো তার ঘরে
তাকে নিয়ে লিখ এক দীর্ঘ প্রেমের কবিতা।
তোমার কলমে তার বিরহ মধুর হোক
সেই মধুরাতে,
ছিঁড়ে যাক মিথ্যার জাল
দুঃখের প্রাসাদে আসুক তার মুক্তির কাল।
তারপর তুমি অমর হও ।
সুর্যের মত তোমার ছটায়
ভোরের আলো মাখা
সেই চিরদুখী মেয়ের কন্ঠে ধ্বনীত হোক-
“চির নুতনের দিল ডাক
পঁচিশে বৈশাখ”।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।