তাঁর মন বাঁধা পড়ে কালবোশেখীর ঝড়ে ,শ্রাবণের মেঘে , হেমন্ত কুয়াশায় আর চৈত্রের ডাহুক ডাকা উদাস দুপুরে ।
সহস্র ভীড়েও সে নির্জন হাঁটে ভুবনডাঙার পথে । খোয়াইয়ের ঢালে তাঁর কি যে খোয়া যায় ! কোপাইএর জলে ভেসে যায় তাঁর ইহকাল পরকাল ।বসন্তপূর্ণিমার শেষে সোনাঝুরির রেণু মেখে ফাগুয়ারা হয়ে যে ঘরে ফেরে , সে যেন আমি নয়, আত্মভোলা অন্য কেউ ।
আমার সাথে তাঁর প্রথম পরিচয় এক বিয়ের আসরে
..বর এসেছে বীরের ছাদে
বিয়ের লগ্ন আটটা …
তখন বয়স আমার চার কি পাঁচ ।সেও তাইই হবে ।প্রেম কি বস্তু ,জানিনে ,চিনিনে তখন ।
সে তখন আমার বীরপুরুষ , আমার সোনার তরীর মাঝি ।সময়ঘড়ির কাঁটা এগোয়,এগিয়েই চলে ।শৈশব পেরিয়ে কৈশোর এবং অবধারিত যৌবনের পথে মন ।
চেনাজানা তখন গভীর তাঁর সাথে ।
উদাসী হাওয়ার পথে পথে ঝরেছে বহু মুকুল ।
গীতবিতানের পাতায় পাতায় তখন মনকেমনের দিনলিপি । তখন সেও আমারি মত ভাবুক ,প্রেমিক ।মফঃস্বল বাসিনী এক ভীরু মেয়ের হৃদয়ের গোপন কথা শুধু তিনিই জানতেন ।জানতোনা আর কেউ ।সংসারের দায় সমাজের দায় হয়তো কখনো কখনো বড্ড ভারী বোঝার মত চেপেছে কাঁধে ।তবু যখন ই সামান্য অবকাশ পেয়েছি ,তাঁর কাছেই ছুটে গেছি ।বারবার ।ফেরান নি তিনি কখনোই ।আজ যখন জীবন গড়িয়েছে অনেক, গভীর হয়েছে শিকড় , তিনিও হয়েছেন গভীরতর অন্তরের অন্তঃস্হলে । আজো যখন গভীর আঁধারে পথ হারাই ,মনের মাঝে সতত জ্বলে তোমার অনির্বাণ দীপশিখা :