আদর করতে করতে যখন চোখটা বন্ধ করলো প্রাণেশ,ঠিক তখনই একটা ধাক্কা দিয়ে রুমি প্রাণেশকে বলল,কিগো কার কথা ভেবে চোখ বন্ধ করলে?
আচমকা এমন প্রশ্নবাণে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে,
কই না! না তো!কাকে ভাববো?তোমার মাথায় কি সবসময় ঐ এক ভাবনা!উঠে পড়ে প্রাণেশ।
রুমি ওর হাতটা নিজের কাছে টেনে আনার চেষ্টা করে, পারে না।
হাত ছাড়িয়ে পোশাক পরে বেডরুম থেকে বাইরে বেরিয়ে, দরজা আটকে ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ায়। রুমি আস্তে আস্তে কয়েকবার ধাক্কা দিয়ে
ফিসফিস করে বলে,দরজাটা খোলো,খোলো না লক্ষ্মীটি! প্রানেশ রাগত হয়েই বলে, আঃ,বিরক্ত করো না!আমাকে একটু একা থাকতে দাও।প্লিজ!
রুমি চুপচাপ দরজার ওদিকে দাঁড়িয়ে থাকে।
খানিক পর প্রাণেশের লাইটারের টুংটাং শব্দটা শুনে কিছুটা নিশ্চিন্ত হয়।
২.
সিগারেটটা ধরিয়ে ব্যালকনির গার্ডেন চেয়ারটা টেনে নিয়ে বসে। অ্যাসট্রেতে ছাই ঝাড়তে ঝাড়তে ভাবে,রুমি কীকরে জানলো ও বিপাশাকে ভাবছিলো! বিষয়টা খুবই অবাক করে ওকে। শুরু থেকে পুরো বিষয়টা মনের মধ্যে একবার রিওয়াইন্ড করে দেখে। সাজায় পরপর সব।নাঃ!সংলাপে,কথা-বার্তায় কোথাও তো বিপাশার নাম আসে নি! না-না, অখেয়ালেও নয়! তবে কীভাবে রুমি এত নিশ্চিত করে…
৩.
বিশ বছর ওরা বিবাহিত।একটি ফুটফুটে মেয়েও আছে।এবছরই সে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। সুখী সংসার বলতে যা বোঝায় আর কী!কিন্তু রুমি!সবসময়ই ভাবে প্রাণেশকে বুঝি কেউ তার কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারে!
এই বিষটা তার মনে মাস তিনেক আগে গেঁথে দিয়েছে ওরই স্কুলের বন্ধু সরিতা। মিডল-এজে নাকি ছেলেদের চোখেচোখে রাখতে হয়!মেনোপজ হওয়ার আগে-পরে মেয়েদের মতো নাকি ছেলেদেরও মনের মধ্যেও অন্য কিছুর সন্ধান চলে!
তারপর গত তিনমাস ধরে যখনই ফোন করেছে প্রাণেশের মোবাইল বিজি পেয়েছে। বাড়িতে ফিরেও মোবাইলে টুকটুক করে মেসেজ করে।এসব ব্যাপারই তাদের বিশ বছরের বিবাহিত জীবন বিষ হয়ে গিয়েছে। এনিয়ে আগে কথা-কাটাকাটিও হয়েছে। কিন্ত আজ…
৪.
প্রাণেশ দ্বিতীয় সিগারেটটা অ্যাসট্রেতে গুঁজে দিয়েও ভেবে কোন কুল-কিনারা পায় না,রুমি কীকরে বুঝতে পারল?ও তো সত্যিই বিপাশার কথা ভাবছিলো!সত্যিকারের ভালোবাসলে কি সব জানা যায়!
প্রাণেশ নিঃশব্দে বেডরুমে প্রবেশ করে রুমির পাশে শুয়ে পড়ে।রুমি ওকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে…