• Uncategorized
  • 0

অণুগল্প ১ বৈশাখের বিশেষ সংখ্যায় সিদ্ধার্থ সিংহ

সমাজসেবী

বিশাল ক্লাব। তার থেকেও বড় আয়োজন। এক-দেড় মাস ধরে অটো করে প্রচার চলছে। গোটা শহর জুড়ে মোড়ে মোড়ে হোর্ডিং। শুরু হয়েছে সকালে বর্ণাঢ্য পদযাত্রা দিয়ে। যেন উৎসব। হাজার হাজার লোক। মন্ত্রীতে মন্ত্রীতে ছয়লাপ। মাইক লাগানো হয়েছে ক’হাত পর পর এ দিকে দু’মাইল, ও দিকে দু’মাইল। গান-বাজনা। প্রতিবন্ধীদের হাতে হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে হুইলচেয়ার। দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের পাঠ্যপুস্তক। স্কুলের ব্যাগ। সাইকেল।
এখন কুষ্ঠরোগীদের হাতে বস্ত্র তুলে দিচ্ছেন বিশিষ্ট সমাজসেবী। যিনি এই কিছু দিন আগেই আন্তর্জাতিক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। শান্তি পুরস্কারের জন্য ইতিমধ্যেই দু’-দু’বার নাম উঠেছে নোবেল কমিটিতে। যাঁর নাম শুনলে বিদেশ থেকে বৃষ্টির মতো ডলার ঝড়ে। পাউন্ড ঝড়ে। যাঁকে দেখলে শ্রদ্ধায় মাথা মাথা নত হয়ে আসে সবার।
এই বয়সেও উনি প্রায় ঘণ্টা দেড়েক ধরে শাড়ি, ধুতি, জামা-প্যান্ট, কম্বল বিতরণ করলেন। সবার মুখে তখন একটাই কথা— একজন মানুষ যখন বড় হয়, এমনি এমনি হয় না। ইনি তার জ্বলজ্যান্ত প্রমান।
উনি মঞ্চ থেকে নামলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ঘিরে ধরলেন তাঁর সংগঠনের অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী। প্রায় ব্যারিকেট করে তাঁকে নিয়ে যেতে লাগলেন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুসজ্জিত হন্ডা গাড়ি অবধি।
গাড়িতে ওঠার আগেই উনি এক বিশ্বস্ত সহচরীর কানের কাছে মুখ নিয়ে আস্তে আস্তে করে বললেন, ভাল করে হাতমুখ ধুতে হবে। কুষ্ঠ রোগ বলে কথা! এক গামলা উষ্ণ গরম জল রেডি আছে তো? আর ফ্রান্স থেকে আনা সেই অ্যান্টিসেপটিক সাবান?
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।