অণুগল্প ১ বৈশাখের বিশেষ সংখ্যায় তনিমা হাজরা
by
·
Published
· Updated
বর্ষবিদায়বর্ষবরণ
নদীর পাড়ে ভোর হচ্ছে, কুয়াশারা সরায় চাদর, একটু একটু সূর্য ওঠে,
বালির গায়ে তাপের আদর।
হাত ধরে তার হাঁটছি আমি, এই জীবনের প্রথম প্রেমিক, ঋজু তিনি দীর্ঘ পুরুষ আজও সেসব ক্ষণগুলি খুব ভীষণ দামী, ভীষণ দামী আমার কাছে।
তিনি আশি, আমি বারো, হাঁটতে হাঁটতে এগোই আরো। ছাড়িয়ে শহর, পেরিয়ে নদী, খেজুর গাছের গ্রাম অবধি।। মণির আলি, মণির আলি, ও মণির আলি আছো নাকি?
মণির আলি, খেজুর রস, জিরেন বেয়ে নামছে কষ, যেমন করে প্রেম নামে।যেমন করে প্রেম নামে ঠিক ফোঁটায় ফোঁটায় ভালবাসার কাটারীতে মনের পরত চিরে গেলে।
উঠোন জুড়ে কাঠের জ্বাল, গুড়ের সুবাস মাখছে সকাল, কাঁঠাল তলায় ঘুমিয়ে থাকা কুকুরটার যে বিকারই নেই।
ভিখারী এক ছেঁড়া জামা এসে দুটো পয়সা চায়। মণির আলি কানের পাশে গুঁজে রাখা বিড়িটাতে আগ জ্বালায়।। আসুন, আসুন, বসুন কত্তা।।
এসব যেন গল্প কথা, এসব যেন পূর্বজন্ম।।বছর বারোর আমিটি সেই আর আমার প্রথম প্রেমিক সুধীররঞ্জন।।
বোধহয় এসব গল্প হবে, কিংবা কোনো স্বপ্নে দেখা, দারকেশ্বর পেরিয়ে হাঁটছি আমি এবং প্রাণের সখা।
কোথায় যাবো আমরা সখি, কোথায় যাবি নিয়ে চল, সময় কেন নদীর জল, বয়েই চলে ছলাৎ ছল,
থামতে তাকে মিথ্যে সাধা। পাশাপাশি হাঁটছে দুজন দৌহিত্রী বিলাবল আর বাগেশ্রী তার ঠাকুরদাদা।
খেজুর রসের ঘ্রাণ পেরিয়ে, স্বাদ পেরিয়ে, মাঠ পেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে অনেকদূর, আরো, আরো অনেকদূর।
ক্যালেন্ডারে ঘুরছে বছর, ঘুরেই যাচ্ছে বছর বছর, বদলে যাচ্ছে গ্রাম ঠিকানা, যাচ্ছে ছেড়ে প্রেমের হাত।
কুয়াশার এক আলো ছায়ায় কিশোর খোলস পড়ছে খুলে, খুঁজতে যাচ্ছি অচিনপুর, বদলে নিচ্ছি পুরুষ স্বাদ।।