আচ্ছা, একটা ভাল গপ্পো বলছিঃ আমার একটা গোপন দুঃখ আছে। বৌকে কিছুতেই সারপ্রাইজ দিতে পারি না। সেদিন অফিস থেকে তাড়াতাড়ি ফিরে পা টিপে টিপে ঢুকছিলাম চমকে দেব বলে, কেয়ারটেকার ভূতনাথ হেঁড়ে গলায় চেঁচিয়ে উঠল “অ বৌদি, দাদা আসতেচে”। শ্যালিকার সঙ্গে পরামর্শ করে গিন্নির জন্মদিনে দেব বলে লুকিয়ে লুকিয়ে এক ঘড়ি কিনলাম, তস্য কন্যা পরদিনই ফোন করে বলে দিলেন, “ও মাসী, মেসো না, তোমার জন্য…” তো, এইরকম সব হয়। সুখ দুঃখের এইসব কথা ব্যক্ত করছিলাম খুড়তুতো দাদার কাছে। তার কাছেই এই কাহিনী শোনা। দাদা আবার শুনেছিল আমাদের ঠাকুর্দার কাছে। বাবার বদলির চাকরি ছিল বলে ঠাকুর্দাকে আমি খুব একটা পাই নি। কিন্তু বংশের অনেক গুপ্তকথা ঠাকুর্দা বলে গেছেন আমার খুড়তুতো দাদাকে। হয়েছে কি, আমার প্রপিতামহ নিবারনচন্দ্রের গৃহে একবার এক সাধু আশ্রয় নিয়েছিলেন। তিনি বললেন “বৎস নিবারণ, এক ঘটি জল দাও।“ নিবারণচন্দ্র তাঁর পত্নী, মানে আমাদের প্রপিতামহীকে বললেন “অনেক পুণ্যফলে প্রভু আজ আমাদের আতিথ্য নিয়েছেন। আর সন্ন্যাসীকে তুষ্ট করা সকল গৃহীর কর্তব্য। তুমি এক কাজ করো, জলের বদলে এক ঘটি দুধ নিয়ে প্রভুকে দাও, উনি প্রসন্ন হবেন।” কীয়ৎক্ষণ পর, খিড়কির কাছ থেকে সন্ন্যাসীর ক্রুদ্ধ কন্ঠস্বর শোনা গেল, “পাপিষ্ঠ নিবারণ, তুই আজ আমাকে যা চমক দিলি তাতে আমি অত্যন্ত কুপিত হয়েছি। আস শাপ দিচ্ছি, তোর বংশে কেউ কখনো কাউকে চমক দিতে পারবে না। এই পর্যন্ত শুনে কেমন ব্যোমকে গিয়ে আমি বললাম “কিন্তু প্রভু এত খচে গেলেন কেন?” এক গাল ধোঁয়া ছেড়ে খুড়তুতো দাদা বললেন, “আরে প্রভু কি খাবার জল চেয়েছিলেন নাকি? জল ওনার দরকার হয়েছিল পশ্চাদ্দেশ প্রক্ষালনের নিমিত্ত। আর সেকালের গরুর দুধ ছিল ফেভিকলের মতো ঘন। এক টিন মিল্কমেড নিয়ে বাথরুমে গিয়ে দেখগা অভিশাপ দিতে ইচ্ছে হয় কিনা।”